logo
প্রকাশ: ০৭:৪৬:২৮ PM, রবিবার, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
প্রাণের উৎসবে মেতে উঠেছিল সিডনি
ফকরউদ্দীন জুয়েল, সিডনি (অস্ট্রেলিয়া) থেকে

প্রাণের উৎসবে মেতে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়ার সিডনি নগরী। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশির পদচারণায় সিডনির ব্যাংকসটাউনের পল কেটিং পার্কই যেন হয়ে গেল এক টুকরো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার যে প্রয়াস, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে তা পরিপূর্ণতা পায়।

বাঙালিয়ানার আড্ডায় মুহূর্তেই সবাই হারিয়ে যান বাংলাদেশের স্মৃতিতে, কৈশোর ও যৌবনের সেই ভালোলাগার দিনগুলিতে। অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী, এমপি, মেয়র থেকে শুরু করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে করেছেন আলোকিত। আর অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় এবং বাংলাদেশের খ্যাতিমান সংগীতশিল্পীদের পরিবেশনা সেই আলোরছটাকে করেছে আরো বিস্তৃত।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী শারীরিক অসুস্থতার কারণে উপস্থিত থাকতে না পারলেও এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেছেন। আয়োজকেরাও মনে করছেন এ আয়োজনের লক্ষ্য শতভাগ পূরণ হয়েছে।

এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাশেদ শ্রাবণ অনুষ্ঠান শেষে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দর্শকদের এনটিভির প্রতি গভীর ভালোবাসাই এই উৎসবকে সার্থক করে তুলে ধরেছে। এনটিভি শুধু অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশিদের কাছেই জনপ্রিয় নয়, সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছেই জনপ্রিয়, তা আবারও প্রমাণিত হলো। দর্শকদের অনুপ্রেরণা পেলে প্রতি বছর এই আয়োজন করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠান শুরু হয় এনটিভি পরিবারের গল্প দিয়ে। প্রামাণ্যচিত্রে হাটি হাটি পা পা করে কীভাবে এনটিভি ১৫ বছর ধরে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ আর সুস্থ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে যাচ্ছে তা তুলে ধরা হয়। এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে শিশু তাসফির।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের ইভেন্ট কোঅর্ডিনেটর জাহাঙ্গীর হাবিব, এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার পাবলিক রিলেশন্স অফিসার সাইমুম সারোয়ার, আমরা বাংলাদেশিরাই সংগঠক ও চার্লস স্টার্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক শিবলী আবদুল্লাহ, হেড অব এনটিভি অনলাইন ফকরউদ্দীন জুয়েল।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি আরিফুর রহমান ও স্থানীয় সংগীতশিল্পী তমা। বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাদের সেই ধারণকৃত বক্তব্য বড় পর্দায় প্রদর্শণ করা হয়।

এরপর নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদেশের এমপি ও সহকারি যোগাযোগমন্ত্রী মার্ক জোসেফ কোর ব্ক্তব্য দেন। তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির প্রশংসা করেন। এরপর স্থানীয়দের পরিবেশনায় মুগ্ধ হন দর্শকেরা। সংগীত পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পী রুমেন কর্মকার, নৃত্যনাট্য ও দেশী সংগীতের সুর ও তালে ওপর নাচ পরিবেশন করে দর্শক মাতিয়ে তোলে স্থানীয় শিশু শিল্পীরা। সুমাইয়া, নাবিলা একক সংগীতের মধ্যদিয়ে দর্শকদের মধ্যে কিছুটা উচ্ছাস ছড়ায়। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক তমাও গান গেয়ে মাতিয়ে তোলেন দর্শকদের। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিলো প্রবাসী বাংলাদেশি ও অস্ট্রেলীয় মডেলদের ফ্যাশন শো। অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী অর্পিতা সোমের দেশীয় গানের পরিবেশনায় দর্শক মোহিত হন। এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার সিইও রাশেদ শ্রাবণ শুভেচ্ছা বক্তব্য দর্শকদের পড়ে শোনান।

এরপর মঞ্চে আসেন অস্ট্রেলিয়ার বিরোধীদলীয় নেতার প্রতিনিধি টনি বার্কে এমপি, গ্লেন ব্রোক্স এমপি, ব্যাংকসটাইন সিটির ডেপুটি মেয়র, কাউন্সিলর শাহে জামান টিটু, কেন্টাবুরির সাবেক ডেপুটি মেয়র কার্ল সালহেসহ গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা। তারা তিনটি দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের এক মঞ্চে দেখে শুভেচ্ছা জানান।

এ ধরণের অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করে তারা বলেন, নিঃসন্দেহে এটা একটা বড় আয়োজন। বাংলাদেশের সংস্কৃতি যে কতটা সমৃদ্ধ এতো বড় আয়োজনই তা প্রমাণ করে। স্থানীয় ব্যান্ড স্পর্শ-এর গান দর্শকেরা আনন্দিত হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বাংলাদেশের সংগীতশিল্পী সাঈদ ও ক্লোজআপ তারকা রন্টি দাশ মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন।

প্রাণের এই উৎসব মূলত পরিপূর্ণতা পায় এই দুই শিল্পীর মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায়। ছোট-বড় সব ধরণের দর্শক নেচে-গেয়ে পুরো মঞ্চের আশেপাশে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেন। 

মেলার চারপাশে চটপটি, ফুসকা, দেশীয় শাড়ি-পোষাক, গহনায় বাহারি সাজে সেজেছিল স্টলগুলো। মেলাতে এসে অনেকে দেশীয় পণ্য কেনাকাটা করতে ভালেননি। তবে চটপটি-ফুসকার দোকানে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]