logo
প্রকাশ: ১১:৫২:১২ AM, সোমবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯
দেড় হাজার টাকায় খামার শুরু, এখন মাসে আয় ২০ লাখ
অনলাইন ডেস্ক

গল্পের শুরুটা ২০০২ সালের। তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা প্রাণীসম্পদ অফিসারের সহযোগিতায় মাত্র দেড় হাজার টাকায় ২০০টি হাঁসের বাচ্চা নিয়ে খামার গড়ে তোলেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুলচারা গ্রামের জাকির হোসেন।

জাকির হেসেনের গল্পের শুরুটা সফলতার না থাকলেও বছর কয়েক যেতে না যেতেই ঘুড়ে যায় ভাগ্যের চাকা। ২০০টি হাঁসের বাচ্চার মধ্যে বিভিন্ন রোগ বালাই, প্রতিকূল পরিবেশে মারা যায় ৭৪ টি হাঁসের বাচ্চা।

মাত্র ১২৬টি হাঁসের বাচ্চা নিয়েই প্রতিকূল পরিবেশের সাথে লড়াই চালিয়ে যায় জাকির হোসেন। আজ ১৭বছর পর সেই খামার টি জেলার সবচেয়ে বড় খামারে রূপ নিয়েছে। সফল খামারি হিসেবে দেশরত্ন বঙ্গকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকেও পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরষ্কার।

জাকির জানান- প্রতিদিন ৮হাজারেরও বেশি ডিম সংগ্রহ করেন খামার থেকে। যা দিয়ে চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ,

মেহেরপুর সহ আশপাশ সকল জেলার ডিমের চাহিদা মেটানো হয়। প্রতিটি ডিম ১০টাকা দরে প্রতিদিন ৮০হাজার এবং প্রতি মাসে ২৪লাখ টাকা আয় হয় তার এই খামার থেকে। এছাড়াও মাংসের হাঁস বিক্রি করে প্রতি মাসে আয় হয় আরো ৪লাখ টাকার মতো।

এখান থেকে প্রতি মাসে হাঁসের খাবার, ওষুধ, কর্মচারীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক ৭ থেকে ৮লাখ টাকার মতো খরচ গুনতে হলেও জমা থাকে ২০লাখ টাকার মতো যার পুরোটাই লাভের অংশ। যা শুনতে স্বপ্নের মতো হলেও বাস্তব।

জাকির হোসেনের খামার এখন শুধু ডিম উৎপাদনে কাজ করে না। তৈরি করা হয়েছে জাকির অ্যান্ড ব্রাদার্স অ্যাগ্রো ফার্ম হ্যাচারী নামের একটি হাঁসের হ্যাচারী। যেখান থেকে হাঁসের বাচ্চা ফোঁটানো হয়। জাকির হোসেনের খামারে এখন ডিম ও মাংসের জন্য ২ ধরনের হাঁস পালন

করা হয়। এখানে বর্তমানে ১০হাজার হাঁসের জন্য কয়েক বিঘা জমির উপর ১২টি সেড করা হয়েছে। হ্যাচারী টি দেখাশোনা করার জন্য রাখা হয়েছে ২৪জন বেকার যুবককে যারা সবাই বেতনভুক্ত। জাকির হোসেনের খামারে এখন প্রতিদিন ৮হাজারেরও বেশি ডিম দেয় এবং পাশাপাশি বছরে প্রায় ২লাখের মতো বাচ্চা ফোঁটানো হয় এই হ্যাচারী থেকে।

খামারের ম্যানেজার ইয়াছিন শেখ জানান, তিনি সাত বছর আগে খামারে চাকরি নেন। সে সময় খামারটি এতো বড় ছিল না। ধীরে ধীরে খামার বড় করা হয়েছে। চার মাস বয়স থেকেই

হাঁস ডিম দেয়া শুরু করে। একটি হাঁস বছরে ২০০-২৫০টি ডিম দিয়ে থাকে। প্রতিটি ডিম ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে হাঁসের পাশাপাশি টার্কি মুরগি, কোয়েল পাখি, ছাগল, মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি চাষ করা হচ্ছে জাকিরের খামারে।

খামারের কর্মী শাহারা বেগম জানান, খামারের প্রতিটি সেড থেকে ডিম তোলেন তিনি। বেতনের টাকায় সন্তানদের লেখাপড়াসহ সংসারও চলে। খামারে অনেক এলাকা থেকে নারীরা কাজ করতে এসেছেন।

প্রতিদিনই আশপাশের এলাকা থেকে হাঁসের খামার দেখতে আসেন অনেকে। জাকির হোসেন সকল বেকার যুবকদের খামার করতে পরামর্শ দেন। তার হাঁস পালনে সফলতা দেখে এলাকার অনেক তরুণ স্বল্প পরিসরে খামার গড়ে তুলেছে।

জাকির হোসেন জানান, শুরুটা খুব সহজ ছিল না। ধৈর্য ও কঠোর পরিশ্রমের ফল আজকের এই খামার। তবে স্বল্প পুঁজি নিয়েও হাঁসের খামার করা যেতে পারে। বিশেষ করে

পুকুর, ডোবা অথবা খালের পাশে খামার গড়ে তোলা উচিৎ। কিন্তু অনেকে হাঁসের রোগ-বালাই নিয়ে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে হাঁসের রোগ নির্মূল করা সম্ভব। হাঁস পালনে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা ভাবছেন তিনি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]