আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৩-২০১৬ তারিখে পত্রিকা

মাশরাফিদেরও চ্যালেঞ্জ দিল ওমান!

সেকান্দার আলী, ধর্মশালা থেকে
| খেলা

ওমানের অধিনায়ক সুলতান আহমেদ যে পরিমাণ খুশি হয়েছেন, ততটাই বুক ভেঙে গেছে নেদারল্যান্ডস দলনেতা পিটার বোরেনের। কারণ এ পরিত্যক্ত ম্যাচ ডাচদের বিশ্বকাপ শেষ করে দিয়েছে, আর ওমানকে দিয়েছে সুপার টেনে ওঠার আশ্বাস। বোরেনের হতাশা আরেকজন অধিনায়কের ওপর পরক্ষে ছায়া ফেলেছে। ধর্মশালা স্টেডিয়ামের প্রেস বক্সে বসেও হোটেলে থাকা সে অধিনায়কের মুখচ্ছবি দেখতে পাচ্ছিলেন ঢাকার সাংবাদিকরা। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন সে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় ওমান ও নেদারল্যান্ডস ১ পয়েন্ট করে পেয়েছে। এ পয়েন্ট নেদারল্যান্ডসের কোনো কাজে লাগবে না। কিন্তু ওমানকে হাজার পয়েন্টের খুশি উপহার দেবে। কারণ এ পয়েন্ট তাদের সুপার টেনে যাওয়ার রেসে ভালোভাবেই রেখে দিয়েছে। ওমান নিজেদের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারিয়ে পূর্ণ পয়েন্ট অর্জন করে। এখন ৩ পয়েন্ট তাদের। বাংলাদেশকে গ্রুপের শেষ ম্যাচে হারালেই নতুন ইতিহাস হবে। কারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম খেলছে তারা।
ওমান এশিয়া একাদশ! ভারত-পাকিস্তানের খেলোয়াড় দিয়েই তাদের স্কোয়াড। ১৫ জনের স্কোয়াডে ওমানের নিজস্ব খেলোয়াড় মাত্র একজন। এ দলটাই এখন বিশ্বকাপে আলোচনায়। বাংলাদেশের মতো টেস্ট খেলুড়ে দলকে হারানোর স্বপ্ন দেখছে তারা। সুলতান আহমেদ জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সে ঘোষণাও দিলেন। অথচ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির বাছাই টুর্নামেন্টেও উত্তীর্ণ হতে পারেননি তারা। এ বিশ্বকাপে একটাই ম্যাচ খেলেছে ওমান। ১৩ মার্চ বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে শেষ ম্যাচ। ওই ম্যাচের জয়ী দলই যাবে সুপার টেনে। শক্তির দিক থেকে দেখলে ওই ম্যাচে বাংলাদেশ ফেভারিট। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হওয়ায় ওমানকেও হেলা করার সুযোগ নেই। সুলতান যেমন বললেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে ছন্দ হারালে ফিরে পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই, যা করার একবারই করতে হয়।’
বৃষ্টির আশীর্বাদে ১ পয়েন্ট পেয়ে সুলতানের সে কী খুশি। ৩ পয়েন্টের গরমে তিনি লাগামহীন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। তিনি হয়তো জানেন না, বাংলাদেশের খারাপ দিন না হলে খড়কুটোর মতো উড়ে যেতে হবে তাদের। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহও মুখিয়ে রয়েছেন সুপার টেনে খেলার জন্য। 
বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে পারাও ওমানের জন্য গর্বের। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে তারা। যে দল এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলে বিশ্বকাপে এসেছে। শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মতো চ্যাম্পিয়ন দলকে হারিয়েছে তারা। বিশ্বকাপে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচেও ছন্দ ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। কোনো অঘটন ছাড়াই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্বে যেতে চেষ্টা করবেন মাশরাফিরা।
১৪ মাস ধরেই টি-টোয়েন্টিতে দারুণ খেলছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৫ ম্যাচ খেলে ৮টি জিতেছে তারা। গত ১২ মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে দুইবারের দেখায় শতভাগ সফল। সুতরাং আশা করা যায়, বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড অঘটন ছাড়াই পার হবে বাংলাদেশ।