শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার
২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (হেকেপ) সহযোগিতায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটালাইজ করা হয়। তবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য উপযোগী করে না তোলায় সেটার সুফল ভোগ করতে পারছে না এখানকার শিক্ষার্থীরা। এমনকি প্রয়োজনীয় প্রচারণার অভাবে গ্রন্থাগারে কি ধরনের প্রযুক্তিগত সুবিধা রয়েছে সে ব্যাপারেও অবগত নন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। এছাড়াও বিকল্প বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা না থাকা, অতিরিক্ত মশার উপদ্রব, প্রয়োজনীয় বইয়ের অভাব, নগণ্য আর্থিক বরাদ্দ, ছেলে ও মেয়ের দুর্গন্ধযুক্ত একই টয়লেট, অন্ধকার-স্যাঁতস্যাঁতে ওয়াশরুমসহ নানা সমস্যায় বাধ্য হয়েই গ্রন্থাগারবিমুখ হচ্ছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা।
হেকেপের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারকে ডিজিটালাইজ করার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন মোবাইল সেট (অ্যান্ড্রয়েড) অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক গ্রন্থাগার সুযোগ ব্যবস্থা। যাতে করে কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার যে কোনো বিষয়ে দেশি কিংবা বিদেশি বই খুব সহজেই পড়া যাবে। হাতের নাগালে পাওয়া যাবে পৃথিবীর যে কোনো প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রবন্ধের মূল কপি। সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যাবে ই-গ্রন্থাগারের সব সুবিধা। তবে প্রয়োজনীয় তথ্য ও ব্যবহার প্রক্রিয়া না জানায় এসব সুবিধা ভোগ করতে পারেন না এখানকার শিক্ষার্থীরা। আবার অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-গ্রন্থাগারের সুবিধার কথাও জানেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে আধুনিক কি কি সুযোগ-সুবিধা আছে সেটা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর অজানা। আর যারা জানে তারাও দক্ষতার অভাবে এটা ব্যবহার করতে পারে না। প্রশাসনের তরফ থেকে যদি গ্রন্থাগারের সুযোগ-সুবিধা ও এতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহারবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা হতো তাহলে এর সুবিধা আমরা সবাই ভোগ করতে পারতাম।
গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী গ্রন্থাগারটিতে ১০ হাজার ই-বই এবং ৩২ হাজার বইয়ের হার্ড কপি থাকলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গ্রন্থাগারটিতে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত অধিকাংশ বই-ই পাওয়া যায় না। আর যেসব বই পাওয়া যায় সেটিও অনেক আগের সংস্করণ, তারও আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাতা, লেখা বা ছবিগুলো কাটা ছেঁড়া। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গ্রন্থাগারটির অধিকাংশ বই-ই অনেক আগের সংস্করণ এবং সেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই ২০০০ সালের আগের অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়টি ইনস্টিটিউট থাকাকালীন সময়ের। ফলে প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন ও আধুনিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এখানকার শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিকল্প কোনো বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা না থাকায় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে গ্রন্থাগারটি পড়াশোনার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।