বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহকারী অধ্যাপক রাজন কর্মকারের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাইকোকার্ডিয়াল ইনজুুরিতে আক্রান্ত হয়ে হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ডা. রাজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। তার হার্ট, লান্স এবং ব্রেনে ব্লক ছিল। চিকিৎসকের মতে হার্ট এ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে। রিপোর্টে দেখা গেছে, ডা. রাজনের হার্টে ১০টি ব্লক ছিলো। এছাড়া তার ফুসফুসে চারটি এবং ব্রেনে দুটি করে ব্লক ছিলো। তার হৃদপিন্ডটিও আকারে বড় দেখা গেছে। মেধাবি ডাক্তার হয়েও তিনি নিজের প্রতি ছিলেন উদাসীন। তার হার্ট, লান্স ও ব্রেনে ব্লক থাকায় এবং পরপর দুই দিন দীর্ঘসময় ধরে ওটি করায় হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাপাতালের ডিউটি শেষে বাসায় আসেন তিনি। পরে ভোররাতে ইন্দিরা রোডের বাসা থেকে রাজনকে মৃত অবস্থায় পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্ত্রী ও শ্বশুরপক্ষের লোকজন।
এর আগে ডা. রাজন কর্মকারের ময়নাতদন্তে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে কোথাও কোনো আঘাত বা অস্বাভাবিক কোনো কিছু পরিলক্ষিত হয়নি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে রাসায়নিক পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে প্রাথমিক এ রিপোর্টে। সে মোতাবেক রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তার ময়নাতদন্ত করেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সেলিম রেজা। চিকিৎসক রাজন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বড় মেয়ে ডা. কৃষ্ণা কাবেরীর জামাই। কৃষ্ণা কাবেরী বিএসএমএমইউতে সার্জারি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ১৬ মার্চ। তার সহকর্মীরা রাজনের ময়নাতদন্ত দাবি করে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার করার দাবি জানিয়েছেন।
ডা. রাজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অষ্টম ব্যাচের (বিডিএস) ছাত্র। প্রায় তিন বছর আগে পারিবারিক সম্মতিতে কৃষ্ণার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন তিনি। রাজনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার এখলাসপুরে। তার বাবা সুনীল কর্মকার ও মা খুকু রানী কর্মকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে পড়ালেখা করেছেন তিনি। বিএসএমএমইউর ওরাল অ্যান্ড ম্যাপিলোফেসিয়াল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন রাজন। স্ত্রী ডা. কৃষ্ণা মজুমদারও একই হাসপাতালের জেনারেল সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। ইন্দিরা রোডের বাসায় থাকতেন তারা।