চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ -আলোকিত বাংলাদেশ
হাজীগঞ্জের দর্শনীয় স্থাপত্য
চাঁদপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী জনপদের নাম হাজীগঞ্জ। হাজীগঞ্জ উপজেলার অন্যতম প্রধান স্থাপত্য ঐতিহাসিক বড় মসজিদ। এটি বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন, বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন, আহমাদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেটের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। কালের বিবর্তনে মসজিদটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। এখানে শুভাগমন ঘটেছে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, নবাব মোশারফ হোসেন ও নওয়াবজাদা খাজা নসরুল্লাহ প্রমুখের। পরবর্তীকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীসহ ইতিহাস প্রসিদ্ধ আরও অনেকের শুভাগমন ঘটেছে। ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের মাঝে শায়খুল ইসলাম আল্লামা হোসাইন আহমাদ মাদানী (রহ.), আল্লামা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.), আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী (রহ.), আল্লামা এহতেশামুল হক থানভী (রহ.)সহ বহু বুজুর্গানে দ্বীন এখানে তশরিফ এনেছেন। ইতিহাসের বক্তব্য, বাংলা ১১২৫ থেকে ১২০০ সালের মধ্যে হজরত মকিমউদ্দিন (রহ.) নামে এক বুজুর্গ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে পবিত্র আরবভূমি থেকে এ এলাকায় আগমন করেন। তিনি সপরিবারে বড় মসজিদের মেহরাব সংলগ্ন স্থানে বসতি স্থাপন করেন। বহু লোক তাঁর কাছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার স্মরণে এলাকার নামকরণ হয় ‘মকিমাবাদ’। মৃত্যুর পর তাকে বাড়িতেই সমাহিত করা হয়। তার বংশের শেষ পুরুষ হজরত মনিরুদ্দিন হাজী ওরফে মনাই হাজীর (রহ.) দৌহিত্র আহমাদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) বাংলা ১৩২৫ থেকে ১৩৩০ সালের দিকে মেহরাবসংলগ্ন স্থানে প্রথমে একচালা খড়ের ও পরে খড় এবং গোলপাতা দিয়ে দোচালা মসজিদ নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে টিনের দোচালাকে পাকা মসজিদে রূপান্তর করা হয়। ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ১৭ আশি^ন হজরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.) পাকা মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন। সর্বমোট ২৮ হাজার ৪০৫ বর্গফুট আয়তনের এ মসজিদে প্রথম অংশে হজরত মাওলানা আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.) চুন-সুরকির মশলা কেটে মেহরাব সংলগ্ন দেওয়ালে ‘সূরা ইয়াছিন’ ও ‘সূরা জুময়া’ লিপিবদ্ধ করেন। মসজিদে মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।