ধরলা নদীর তীব্র ভাঙনের কবলে লালমনিরহাট সীমান্ত এলাকার গ্রাম - আলোকিত বাংলাদেশ
লালমনিরহাট সীমান্তে ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাটে ধরলা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। মাস খানেক ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও বিশেষ করে সীমান্তবর্তী চওড়াটারী ও কর্ণপুর গ্রাম দুটিতে সপ্তাহ ধরে ধরলা নদীর ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে বেশি। এতে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে আবাদি জমি, ফলের বাগান, বাঁশঝাড়সহ অনেক স্থাপনা। এদিকে, ভাঙন কবলিত মানুষগুলো নদীর তীরে দাঁড়িয়ে নির্বাক তাকিয়ে দেখছেন নদীগর্ভে চলে যাওয়া বাপ-দাদার আমলের আবাদি জমি-ভিটা। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। ভাঙন আতঙ্কে শত শত পরিবারের সদস্য নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। এলাকাবাসী জানান, পাথরের বড় বড় বোল্ডার দিয়ে ভারতের উজানে ভোগবান্ধা-গিদালদহ এলাকায় বাঁধ নির্মাণের ফলে ধরলা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে কৃষির ওপর নির্ভরশীল সীমান্তের মানুষগুলোর আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এখন ভাঙন হুমকিতে রয়েছে তাদের অনেক আবাদি জমি ও বসতভিটা। এরই মধ্যে গ্রাম দুটির ২০০ বিঘারও বেশি আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। সরেজমিন মোগলহাট ইউনিয়নের নদীভাঙন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেকে বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে শেষরক্ষা করতে চেষ্টা করছেন। ভাঙনের তীব্রতা দেখে নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের অনেকেই বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করছেন। বাধ্য হয়ে কেটে ফেলছেন মূল্যবান গাছপালা। কর্ণপুর গ্রামের পনির আলী বলেন, ‘হামার আবাদি জমি নদীত যাবার নাগছে বাহে। এ্যালা হামারগুলার কি হইবে, সরকার যদি বাঁধ নির্মাণ করি দিল হয়, তাহলে হামার এ অবস্থা হইল না-হয় বাহে।’ কথা হয় এলাকার বয়োবৃদ্ধ আলী আফছারের (৭২) সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় ২ কিলোমিটার উজানে ভারত পাথরের বোল্ডার দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করায় ধরলা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ কারণে সীমান্তের দুটি গ্রামে দেখা দিয়েছে ধরলা নদীর ভয়াবহ ভাঙন। নদী পাড়ের মানুষের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে একের পর এক জনপ্রতিনিধি নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে সান্ত¡নার বাণী শোনালেও ভাঙন রোধে কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, মোগলহাট ইউনিয়নের চওড়াটারী ও কর্ণপুর গ্রামের দুটি পয়েন্টে প্রবল ভাঙন দেখা দেওয়ায় সেখানকার অধিবাসীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এটিএম বজলে করিম বলেন, মোগলহাট ইউনিয়নের চওড়াটারী ও কর্ণপুর পয়েন্টে ধরলা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্র্র্র্র্র্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে ভাঙন কবলিত এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।