আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৫-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

রাজশাহীতে ঈদের কেনাকাটা

ছুটির দিনে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

সোনা চৌধুরী, রাজশাহী
| নগর মহানগর

রাজশাহীর সিল্কের পোশাকের খ্যাতি দেশজুড়ে। তাই বিত্তবানদের কাছে কদর অনেক বেশি। যে কোনো উৎসবে রাজশাহীর সিল্কের পোশাকের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শুক্রবার ছুটির দিনে তো সিল্কের শো-রুমগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

এসব ক্রেতার বড় একটা অংশ সরকারি চাকরিজীবী। দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের বাড়ি। ছুটির দিনে তারা শো-রুমগুলোতে গিয়ে শুধু নিজের বা পরিবারের জন্যই নয়; আত্মীয়স্বজনদের জন্যও কিনেছেন সিল্কের পোশাক। ঈদের আগেই এসব পোশাক স্বজনদের হাতে তুলে দিতে চান তারা।
শুক্রবার সকালে নগরীর বিসিক এলাকায় সিল্কের শো-রুমগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে এবার সিল্কের নতুন অনেক ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, ওয়ান পিস, থ্রি-পিস, শার্ট, হিজাব, ফতুয়া, ওড়না ও স্কার্ফ রাখা হয়েছে। রয়েছে শাড়ির বিশাল সমাহার। অন্য বাজারগুলোর চেয়ে এখানে নিরিবিলি পরিবেশে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক দেখছেন, কিনছেন।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত চার-পাঁচ দিন আগে থেকে তাদের ঈদের বিক্রি বেড়েছে। রোজার মধ্যে শুক্রবারই ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে শুক্রবার জুমার নামাজের কারণে অনেকেই শো-রুমে আসেনি। শনিবার ছুটির দিন থাকায় এ দিন ভিড় আরও বাড়বে বলে তারা আশা করছেন। আর ২০ রোজার পর থেকে ঈদের বিক্রি জমজমাট হয়ে উঠবে। তখন ক্রেতা সামলাতেই তাদের হিমশিম খেতে হবে।
রাজশাহী সিল্ক ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী আবদুল কাদের মুন্না জানান, অন্য বছরগুলোর মতো এবার ঈদেও ব্যবসা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তাদের শো-রুমে বলাকা, মক্কা, কাতান, ছিপ কাতানসহ বিভিন্ন নামের শাড়ি ১ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাঞ্জাবি ১ হাজার থেকে ৭ হাজার পর্যন্ত, শেরওয়ানি ৮ হাজার থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত, থ্রি-পিস ১ হাজার থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।
এ দোকানেই স্বপরিবারে কেনাকাটা করছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা লতিফুল বারী। তিনি বলেন, ঈদ তো চলেই এলো। রোজার দিনে অফিস করে আর কেনাকাটা করা যাচ্ছে না। তাই ছুটির দিনেই চলে এলাম। দুই ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রী, বাবা-মা এবং ভাই-বোনদের ছেলে-মেয়েদের জন্য কেনাকাটা করা হলো। তবে দাম একটু বেশিই বলে মনে হলো। তারপরও সিল্কের পোশাক বলেই নিলাম।
সপুরা সিল্কের ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান বলেন, সারা বছরই আমাদের ব্যবসা চলে। তবে ঈদের সময় একটু বেশি ভালো হয়। রোজার শুরু থেকেই রাজশাহী ছাড়াও খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকারি ক্রেতারা আসছেন। এখন খুচরা ক্রেতারাও আসতে শুরু করেছেন। সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বেচাবিক্রি হচ্ছে।
তিনি জানান, সপুরা সিল্কে মসলিন সিল্ক, এনডি সিল্ক, বলাকা সিল্ক, সফট সিল্ক, র-সিল্কসহ বিভিন্ন নামের শাড়ি ২ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পাঞ্জাবি ৩ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৮ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে থ্রি-পিস।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বিক্রি জমে উঠলেও এতে বিপত্তি বাধাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আমেনা সিল্কের মালিক আমিনুল ইসলাম বাবু জানান, ব্যবসা হচ্ছে, কিন্তু বিদ্যুতের বিভ্রাটে খুব ঝামেলায় আছি। দিনের মধ্যে ৫ থেকে ৬ বার করে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। আর একবার গেলে এক ঘণ্টা বিদ্যুতের খবর নেই। ফলে গরমের মধ্যে ক্রেতারা পোশাক দেখছেন না। তড়িঘড়ি করে ফিরে যাচ্ছেন।