কারাবন্দি খালেদা জিয়ার জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত ৩০ টাকার মূল্যমানের সঙ্গে মিল রেখেই রাজনীতিবিদদের একই মূল্যমানে ইফতার করাল বিএনপি। ৩০ টাকার এ ইফতারে ছিল- দুইটা খেজুর, একটা জিলাপি, একটা বেগুনি, একটা পেঁয়াজু, ছোলাবুট ভাজি, মুড়ি এবং ছোট এক বোতল পানি। মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে এ ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় ঐক্যজোট, পেশাজীবীসহ দুই সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
এদিকে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের আশু আরোগ্য কামনাসহ আটক নেতাকর্মীদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন উলামা দলের আহ্বায়ক শাহ নেছারুল হক।
ইফতার শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমাদের এ আয়োজনে অংশ নিতে হচ্ছে। আপনারা সবাই জানেন গণতন্ত্রের মাতা দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন তাকে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ রমজান মাসে যখন আমরা এখানে সমবেত হয়েছি, তখন তিনিও কারাগারে থেকে বন্দি অবস্থায় পিজি হাসপাতালের ছোট্ট একটি কক্ষে ইফতারের জন্য অপেক্ষা করছেন। তার ইফতারের জন্য সরকারের বরাদ্দ মাত্র ৩০ টাকা। তিনি বলেন, সেজন্যই আজকে আমরা যে আয়োজন করেছি, সেই আয়োজন আমাদের সব নেতাকর্মী যে অনুভূতি, যে বেদনাবোধ। সে কারণে আজকে আমাদের ইফতারের আয়োজনও ৩০ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি। আমরা অভ্যাগত সুধীদের কাছে, আমাদের অতিথিদের কাছে অনুরোধ জানাব, আপনাদের কষ্ট হলেও আপনারা দয়া করে এটাকে স্বীকার করে নেবেন। শুধু সেই নেত্রীর প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য। খালেদা জিয়াসহ আটক নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য দোয়া চান বিএনপি মহাসচিব।
ফখরুল বলেন, আজকে জগদ্দল পাথরের মতো একটা জগদ্দল সরকার চেপে বসে আছে। সম্পূর্ণভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে, গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। একটা একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে, রাষ্ট্রের স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছে। আমরা একটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আসুন আমরা সবাই আল্লাহর কাছে এ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মহসিন রশিদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, আফসারী আমিন আহমেদ, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এসএম আকবর, বিকল্প ধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।
২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অধ্যাপক তাসনীম আলম, সেলিম উদ্দিন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, খেলাফত মজলিশের অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, এমএম আমিনুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাপের এমএন সাওন সাদেকীন প্রমুখ ইফতারে উপস্থিত ছিলেন।
পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক শরীফউদ্দিন এতে অংশগ্রহণ করেন।
এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল মান্নান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, নিতাই রায় চৌধুরী, আমনউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিবসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ইফতারে সদ্য সংসদে যোগ দেওয়া এমপি উকিল আবদুস সাত্তারও অংশ নেন।