আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৩১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

আরও এক ‘জাহালম’ কার জেল কে খাটে!

রাজশাহী ব্যুরো
| শেষ পাতা

রাজশাহীতে বড় ভাইয়ের পরোয়ানায় পুলিশ ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে এক মাস ধরে জেল খাটছেন সজল মিয়া (৩৪) নামের ওই ব্যক্তি। ২৬ মে সজল তার আইনজীবীর মাধ্যমে নিজের মুক্তি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।

আসামি না হয়েও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তিন বছর জেল খাটেন নরসিংদীর পাটকল শ্রমিক জাহালম। এ নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। সম্প্রতি হাইকোর্টের আদেশে জাহালম মুক্তি পেয়েছেন। তবে এরই মধ্যে রাজশাহীতে জাহালমের মতো আরেক ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেল। ভুক্তভোগী সজল মিয়ার বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর ছোটবনগ্রাম পশ্চিমপাড়া মহল্লায়। তার বাবার নাম তোফাজ উদ্দিন। সজলের বড় ভাইয়ের নাম সেলিম ওরফে ফজল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি দীর্ঘদিন ধরেই পলাতক। তার অনুপস্থিতিতেই ২০০৯ সালের ২৮ আগস্ট মামলার রায় হয়। সেদিন খালাস পান অন্য চার আসামি। এদিকে দীর্ঘদিনের লাপাত্তা সেলিমকে ধরতে ৩০ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে সজলের বাড়িতে অভিযান চালায় নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশ। সেদিন সজলকে গ্রেপ্তার করে সেলিম নাম দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে পুলিশের দাবি, তারা সঠিক আসামিকেই চিনেছেন। যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার নামই সেলিম এবং তিনিই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

তবে সজলের পক্ষ থেকে আদালতে মুক্তি চেয়ে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে যে আবেদন করা হয়েছে তাতে সজলের চার ভাই এবং চার বোনেরও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেগুলো সত্যায়িত করে দিয়েছেন। এছাড়া সজলের জমি খারিজের ডিসিআর, জমির দলিলসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। সজল এবং তার ভাই সেলিমের ছবি সংবলিত এবং স্ট্যাম্পের কপিও দাখিল করা হয়েছে। সজলের আইনজীবী মোহন কুমার সাহা বলেন, অপরাধী না হয়েও সজল সাজা ভোগ করছেন। পুলিশ হয়তো ভুল করে নয়তো প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নির্দোষ সজলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। বিষয়টি আদালতকে জানিয়ে তার মুক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে। আদালতের বিচারক ১১ জুন সজলকে আদালতে হাজির করে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর শাহমখদুম থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, আমরা ঠিক আসামিকেই ধরেছি। মামলার সাক্ষীরা আসামিকে শনাক্ত করেছেন। 
এ নিয়ে তারা এফিডেভিটও করে দিয়েছেন। সেটি আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে ভুল আসামি দাবি করে আদালতে মুক্তির আবেদনের বিষয়টি জানা নেই বলেই জানান ওসি।