logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শনিবার, মার্চ ১২, ২০১৬
চরমোনাইয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে হাতপাখা
দুর্গ দখলে মরিয়া নৌকা ও ধানের শীষ
খান রফিক, বরিশাল

কীর্তনখোলা নদীর তীরে চরমোনাই পীরের দরবার শরিফ হওয়ার সুবাদে বরিশালের চরমোনাই ইউনিয়ন দেশজুড়ে পরিচিত। এখানে একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের। এ কারণে টানা দুইবার চরমোনাই পীরের দলীয় প্রার্থীই ইউপি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। এর নেপথ্য কারণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির সমঝোতা। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের দিন ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপি নেতা সরোয়ার আহত হলে সাপে নেউলে সম্পর্ক শুরু হয় দুই দলে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এবার চরমোনাই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়ায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২২ বছরের দুর্গ দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি।
টানা দুইবার চরমোনাই ইউনিয়নের দুর্গ ধরে রেখেছে হাতপাখা। এর আগে ২২ বছর এখানকার ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন বিএনপির আঃ সালাম রাঢ়ী। ২০০১ সালে এক সংঘর্ষের কারণে বিএনপির সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এ কারণে দলটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐক্য হওয়ায় বিএনপি তার দুর্গ হারায়। বর্তমানে চরমোনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পীর সৈয়দ রেজাউল করীমের আপন ভাই সৈয়দ এসহাক মোঃ আবুল খায়ের ফের প্রার্থী হয়েছেন। এর আগে চরমোনাইয়ের বর্তমান পীর সৈয়দ রেজাউল করীম এখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই একটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়ায় জাতীয় কিংবা মেয়র নির্বাচনেও বরিশালে চরমোনাইয়ের দল আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে আসছিল। কিন্তু এবারের ইউপি নির্বাচনে সব চিত্র পাল্টে গেছে। এখন আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়ায় জাতীয় কিংবা মেয়র নির্বাচনেও বরিশালে চরমোনাইয়ের দল আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে আসছিল। কিন্তু এবারের ইউপি নির্বাচনে সব চিত্র পাল্টে গেছে। এখন হাতপাখার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়দের মতে, চরমোনাইয়ের ৩৩ হাজার ভোটারের অধিকাংশই হাতপাখা ও ধানের শীষের সমর্থক। অবশ্য ক্ষমতাসীন হওয়ায় আওয়ামী লীগের অবস্থানও বেশ শক্ত।
চরমোনাই মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরদৌসী আক্তার বলেন, তারা হুজুরদের (চরমোনাই) চিন্তা করেন না। যত টেনশন ভোটে আওয়ামী লীগের অনিয়ম নিয়ে। তিনি বলেন, ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের দিন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান সরোয়ারের ওপর হামলা করেন হাতপাখার সমর্থকরা। সেই থেকে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব। এ কারণে দীর্ঘদিন নৌকা ও হাতপাখা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছে। এবার আর ঐক্য নেই। তাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে হাতপাখা।
চরমোনাই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ নুরুল ইসলাম মাস্টার বলেন, হাতপাখার সঙ্গে আর কোনো সমঝোতা নয়। তারা পুরোদমে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এবারের নৌকা মার্কা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সুতরাং ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, হাতপাখার লোকজন তার কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। তারা প্রশাসনকে মানেন না। জনগণ ভোটের মাধ্যমে এবার জবাব দেবেন হাতপাখাকে।
এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ এসহাক মোঃ আবুল খায়ের বলেন, তার আমলে এলাকায় শান্তি ছিল। মানুষ দরজা খুলে ঘুমিয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের তরফ থেকে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের অবস্থান পরিবর্তনে ভোটের সমস্যা হবে না, বরং নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। চরমোনাই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী আঃ সালাম রাঢ়ী বলেন, নির্বাচনের শুরুতেই হুমকি ধমকি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আগে চরমোনাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে নির্বাচন করেছে। এবার আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে না। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোট হলে তাদের ২২ বছরের দুর্গ জনগণ ভোট দিয়ে ফিরিয়ে দেবেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]