
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শনিবার, মার্চ ১২, ২০১৬ | |
অপার সৌন্দর্যের দ্বীপ মনপুরা। চারদিকে সাগরের অথৈ জলরাশি। মাঝখানে গ্রাম আর সবুজের মেলায় মনোরম এক টুকরো দ্বীপ। সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে এর বয়স দাঁড়িয়েছে ৮০০ বছরে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বিচ্ছুরিত হয় মনপুরায়। একটু যত্ন পেলেই এটি হতে পারত ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় স্থান। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় মনপুরা তার অপার সৌন্দর্য নিয়ে নীরবে সময় কাটাচ্ছে। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে পারলে মনপুরা হবে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। এখানে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করা। এটি করা গেলে সুফল ভোগ করবে পুরো দেশ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পুব আকাশে সূর্যোদয় আর পশ্চিম প্রান্তে সাগরের বুকে সূর্যের হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখার জন্য কেউ এখানে ঘুরতে আসে না। কারণ এখানে পর্যটনের মতো কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এছাড়া শিল্পের অপার সম্ভবনা থাকা সত্ত্বেও অবহেলায় তা জীবন পাচ্ছে না। এখানে না এলে বোঝাই যাবে না প্রাণী ও উদ্ভিদ সম্পদের বৈচিত্র্যে ভরপুর মনপুরায় কি রূপ লুকিয়ে আছে।
ভোলা জেলার মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন ছোট্ট দ্বীপ মনপুরা। জেলা সদর থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে মেঘনার বুকে অবস্থান এ দ্বীপের। ৮০০ বছরে এ দ্বীপে পরিবর্তনের ছোঁয়া খুব সামান্যই। স্থানীয়দের ভাষায়, ৮০০ বছর আগে পর্তুগিজ জলদস্যুদের আস্তানা ছিল এ দ্বীপ। এর নিদর্শন হিসেবে এখনও দ্বীপটিতে ঘুরে বেড়ায় কেশওয়ালা লোমশ কুকুর। মনপুরার প্রধান আর্কষণ হাজার হাজার একরের ম্যানগ্রোভ বন। যতদূর দৃষ্টি যায় মনে হয় এ যেন এক সবুজের বিশাল ক্যানভাস। চরতাজম্মুল, চরজামশেদ, চরপাতিলা, চরপিয়াল, চরনিজাম, লালচর, বালুয়ারচর, চরগোয়ালিয়া, সাকুচিয়াসহ ছোটবড় মিলে কমপক্ষে একডজন চরে বন বিভাগের চেষ্টায় চলছে নীরব সবুজ বিপ্লব। গতানুগতিক সব খাবার ছাড়াও তিনটি বিশেষ খাবার রয়েছে এ দ্বীপে। এগুলো হলো পাঙ্গাশ মাছ, মহিষের দুধের কাঁচা দই ও শীতের হাঁস। এর বাইরে মূল আকর্ষণ টাটকা রুপালি ইলিশের স্বাদ নিতে কে না চায়।
এতসবের পরও মনপুরার দুঃখ হলো জেলা সদরসহ সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা। যোগাযোগের ব্যবস্থা বলতে দ্বীপের অভ্যন্তরের রাস্তাঘাট। দ্বীপের বাণিজ্যিক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ইচ্ছে করলেই যে কেউ মনপুরায় যাতায়াত করতে পারে না। ঢাকা থেকে সরাসরি লঞ্চে মনপুরায় যাওয়া যায়। তবে এ ব্যবস্থা একেবারেই অপ্রতুল। অন্যদিকে বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটে সি-ট্রাক চলাচল করে। এটি তজুমদ্দিন থেকে প্রতিদিন বিকাল ৩টা আর মনপুরা থেকে সকাল ১০টায় ছাড়ে। চরফ্যাশনের বেতুয়াঘাট থেকে মনপুরার জনতা বাজার রুটে দিনে দুইটি লঞ্চ চলাচল করে। এপ্রিল থেকে নভেম্বর এ আট মাস নদীপথটি ডেঞ্জার পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় লঞ্চে চলাচল বন্ধ থাকে। এ বিষয়ে মনপুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন, এখানে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। এজন্য প্রথমেই যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। এটি করা গেলে সুফল ভোগ করবে পুরো দেশ। প্রায় অভিন্ন কণ্ঠে কথা বললেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন খান। তিনি আরও বলেন, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে পারলে মনপুরা হবে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |