সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের একটি টিম সরেজমিন ভোলাগঞ্জ পরিদর্শন করেছে। 

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আনিস আহমদ বলেন, ভোলাগঞ্জে স্থলবন্দর স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এখানে স্থলবন্দর হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। এই এলাকায় স্থলবন্দর হলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী বলেন, ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এরপর এটাকে স্থলবন্দর হিসাবে ঘোষণা করা হতে পারে। ভোলাগঞ্জে স্থলবন্দর হলে কোম্পানীগঞ্জের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

বর্তমানে সিলেটে তামাবিল স্থল বন্দরের কার্যক্রম চালু আছে। এছাড়া  সুতারকান্দি স্থলবন্দর চালু হওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। 

সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাবেক সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ জানান, কোন এলাকাকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করতে হলে বাংলাদেশ-ভারত দুই অংশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, তামাবিলকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হলেও ভারতীয় অংশে তেমন অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। এ কারণে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। যার পরোক্ষ প্রভাব পড়ছে কনজ্যুমারদের ওপর। 

ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মিন্টু বলেন, ভোলাগঞ্জের ওপারেই বিশ্বের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র চেরাপুঞ্জির অবস্থান। তিনি বলেন, ভোলাগঞ্জে বর্ডার হাট হচ্ছে। পাশাপাশি ভোলাগঞ্জের অনতি দূরে নির্মিত হচ্ছে সিলেট হাইটেক পার্ক। ভোলাগঞ্জে আগেও কালাসাদেক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ছিল। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এ চেক পোস্টটি পুনরায় চালু করা উচিত বলে তার মন্তব্য। 

এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় : সোমবার বিকালে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর চালুর বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য এলাকা পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আনিস আহমদ। এ সময় তিনি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, কাস্টমস কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এ সময় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক আনিছুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শামীম আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপ্তাব আলী কালা মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম, সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল হক, চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সদস্য আখতারুজ্জামান নোমান, ব্যবসায়ী আবদুুল হাসিব ও শাহ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরের উদ্বোধন করা হয়।