উপকূলের দিকে প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সুপার সাইক্লোন ফণী। আজ এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য উপকূলীয় এলাকা পায়রা ও মংলা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রামে ৬ নম্বর ও কক্সবাজারে ৪নং সতর্কতা সংকেত দেখানো হচ্ছে। 

এ দুর্যোগ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেÑ
১। এ দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভাগীয় পর্যায়সহ জেলা ও উপজেলায় জরুরি সভা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। 
২। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ঘূর্ণিঝড় সুপার সাইক্লোন ফণী মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। জরুরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নির্দেশনামূলক গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে, যা এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। 
৩। ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত সম্ভাব্য জেলার উপজেলাগুলোর সব চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি ও সব ধরনের প্রশিক্ষণ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
৪। জেলা/উপজেলা/প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জেলা পর্যায়ে তিনটি, উপজেলা পর্যায়ে পাঁচটি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি ‘জরুরি মেডিকেল টিম’ গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৪৯৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৪৮টি  এবং খুলনা বিভাগে ৮১৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
৫। বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগে জেলা-উপজেলাভিত্তিক স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ/কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এসব কন্ট্রোল রুম সবসময় ‘ন্যাশনাল হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে। সে সঙ্গে অধীনস্ত পর্যায়ের স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে। যোগাযোগের হট নম্বরগুলো হলোÑ ০১৭৬৯৯৫৪১৩৭, ০১৭৫৯১১৪৪৮৮, ৯৮৫৫৯৩৩। 
৬। এসব দুর্যোগপূর্ণ বিভাগে জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক, ওআরএসসহ পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধের মজুত রাখা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ১০ হাজার ব্যক্তির জরুরি চিকিৎসা প্রদানের মতো প্রয়োজনীয় ঔষধপত্রাদি সম্ভাব্য প্রত্যেকটি বিভাগে প্ররণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ থেকে এরই মধ্যে জরুরি দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য ঔষধ-সরঞ্জামাদি জেলা পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ট্যাব এজিথ্রমাইসিন ৫০০ এমজি ৫০০০, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮০০টি, কলেরা স্যালাইন ১০০০ সিসি সেটসহ ৬০০ ব্যাগসহ অন্যান্য জরুরি ঔষধ মজুত আছে।
৭। এছাড়াও জরুরি রোগী পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  
৮। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে একযোগে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৯। প্রাথমিক ও জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে পার্শ্ববর্তী/নিকটবর্তী মেডিকেল হাসপাতাল থেকে নবীন চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষা পর্যায়ের শেষ ধাপের ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 
১০। কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ন্যাশনাল রেপিড রেসপন্স টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও হট লাইনে যোগাযোগ করার জন্য বিশেষ নম্বরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নম্বরগুলো হলোÑ  ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯২৭৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫। ১১। এছাড়াও অন্যান্য যেকোনো জরুরি পরস্থিতিতে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য বিভাগ সদা প্রস্তুত থাকবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি