logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, মঙ্গলবার, মে ৭, ২০১৯
পা দিয়ে লিখে তামান্নার জিপিএ-৫
যশোর প্রতিনিধি

তামান্না আক্তারের জন্ম থেকে দুটি হাত নেই। নেই ডান পা। যে একটি পা আছে, তা দিয়ে লিখেই সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সোমবার প্রকাশিত ফলাফলে তার এ সাফল্যে এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। জেএসসিতেও তামান্না আক্তার জিপিএ-৫ পেয়েছিল।  ঝিকরগাছার পানিসারা গ্রামের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন দম্পতির মেয়ে তামান্না বাঁকড়া জনাব আলী খান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। উপজেলার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসেই পরীক্ষা দেয় মেয়েটি। রওশন আলী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। খাদিজা পারভীন গৃহিণী। তাঁদের তিন ছেলেমেয়ে। তামান্না সবার বড়। ছোট মেয়ে মুমতাহিনা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ছেলে মুহিবুল্লাহর বয়স চার বছর। তামান্নার মা খাদিজা পারভীন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর তামান্নার জন্ম। মেয়ের জন্মের পর কষ্ট পেয়েছিলেন। পরে ভেবেছেন, ওকে কারও বোঝা হতে দেওয়া ঠিক হবে না। ছয় বছর বয়সে ওর পায়ে কাঠি দিয়ে লেখানোর চেষ্টা করলেন। কলম দিলেন। কাজ হলো না। পরে মুখে কলম দিলেন। তাতেও কাজ হলো না। পরে সিদ্ধান্ত নিলেন, ওকে পা দিয়েই লেখাতে হবে। এরপর বাঁকড়া আজমাইন এডাস স্কুলে ভর্তি করলেন। মাত্র দুই মাসের মাথায় তামান্না পা দিয়ে লিখতে শুরু করল। ধীরে ধীরে ছবি আঁকা শুরু করল। খাদিজা পারভীন জানান, ২০১৩ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) জিপিএ-৫ পায় তামান্না। বৃত্তিও পায়। এরপর জেএসসি পরীক্ষাতেও সে জিপিএ-৫ পায়। এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। তামান্নার বাবা রওশন আলী বলেন, তামান্নার জন্মের পর থেকে নানা প্রতিকূলতার মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারপরও হাল ছাড়েননি। মেয়েটার জন্য কোনো কাজ করতে পারেন না। সারাক্ষণ খেয়াল রাখতে হয়। শরীরে একটা মশা পড়লেও তাড়াতে পারে না। প্রতিদিন তিনি ও তার স্ত্রী ভাগাভাগি করে মেয়েকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে স্কুলে দিয়ে আসতেন আবার ছুটি শেষে বাড়িতে নিয়ে আসতেন। তার এ সাফল্য আনন্দে সব কষ্ট ঢেকে গেছে। তিনি আরও বলেন, মেয়ে এখন বড় হয়েছে। তার দেখাশোনার জন্য একটা লোক দরকার। সরকার বা প্রশাসন সহযোগিতা করলে তার লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়া সম্ভব। বাঁকড়া জনাব আলী খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দীন বলেন, তামান্না আমাদের গর্ব। সে অন্য প্রতিবন্ধীদের আদর্শ হতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]