logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, মঙ্গলবার, মে ৭, ২০১৯
নাকাল অবস্থায় হোপদের সামনে
স্পোর্টস রিপোর্টার

সংক্ষিপ্ত স্কোর 
আয়ারল্যান্ড ‘এ’ : ৩০৭/৮, ৫০ ওভারে (ম্যাককুলাম ১০২, সিমি ৯১; তাসকিন ৩/৬৬, রুবেল ২/৬৩, আকিব ১/৩০, ফরহাদ ১/৬৬, মিরাজ ১/৪৪)
বাংলাদেশ : ২১৯/১০, ৪২.৪ ওভারে (সাকিব ৫৪, মাহমুদউল্লাহ ৩৭, লিটন ২৬, তামিম ২১; সিমি ৪/৫১) 
ফল : আয়ারল্যান্ড ‘এ’ ৮৮ রানে জয়ী

একদিকে শাই হোপ আর জন ক্যাম্পবেল যখন আয়ারল্যান্ডের বোলারদের কচুকাটা করছিলেন, ক্যাসল এভিনিউ থেকে অল্প কিছুটা দূরে ভাইনইয়ার্ডে তখন তাসকিনদের শাসন করছিলেন ম্যাককুলামরা। প্রস্তুতি ম্যাচে হার-জিত বড় কিছু নয়, তবে বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড উলভস নামে পরিচিত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৮৮ রানের হারটা বাংলাদেশ সতর্কবার্তা হিসেবে দেখতে পারে। ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ঠিকঠাক কাজে আসেনি! তাছাড়া স্বাগতিক আইরিশ বোলারদের পিটিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ে তো বাংলাদেশকে হুমকি দিয়ে রেখেছেন হোপ-ক্যাম্পবেল। সে হুমকিতে টাইগাররা কাবু, নাকি বিপর্যয় কাটিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে, সেটা দেখা যাবে আজইÑ ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ম্যাচটা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে ৪টায়।
প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ অবশ্য পুরো দল নিয়ে খেলেনি। মোস্তাফিজুর অ্যাঙ্কেলের চোট থেকে সেরে উঠছেন এখনও, মাশরাফি, সাইফউদ্দিনরাও বল করেননি। রুবেল সেরে উঠে ফিরেছেন, সুযোগ পেয়েছেন তাসকিন-ফরহাদ রেজারা। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে নিজেদের দাবিটা জানান দিতে পারেননি কেউই। এক সাকিব ছাড়া বোলাররা আর সবাই-ই খাবি খেয়েছেন।
সেই কাজটা আসলে করেছেন জেমস ম্যাককুলাম ও সিমি সিং। দুইজনেই জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন, দলের অনেকের সেই অভিজ্ঞতা আছে। তবে কাজের কাজ করে দিয়েছেন এ দুইজন। ৩৩ রানে টেক্টরকে তুলে নেন রুবেল, আইরিশদের ৭৯ রানে সাকিব ফেরান শ্যাননকে। তবে এরপর ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতে নিয়ে নেন ম্যাককুলাম ও সিমি। দুইজন তৃতীয় উইকেটে যোগ করেছেন ১২৪ রান। ম্যাককুলাম থেমেছেন ১০৩ রান করে, সেই উইকেট রুবেলের। এরপর কিছুটা ধস নামাতে পারে বাংলাদেশ, সিমিও ৯১ রান করে ফিরে যান তাসকিনের বলে। ২৫৬ রানের মধ্যে ৭ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তবে অষ্টম ও নবম উইকেট জুটি ঘুরে দাঁড়ালে ঠিকই ৩০০ পার করে আইরিশরা।
বাংলাদেশের সবাই ছিলেন বেশ খরুচে; রুবেল, তাসকিন, ফরহাদ, মিরাজরা সবাই ওভারপ্রতি ছয়ের বেশি রান দিয়েছেন। এক সাকিব আল হাসানই ১০ ওভারে দিয়েছেন ৩০ রান। মাশরাফির অনুপস্থিতিতে অধিনায়কও ছিলেন সাকিবই। বাংলাদেশের ব্যাটিং অবশ্য মূল ব্যাটসম্যানদের সবাই কমবেশি করেছেন। কিন্তু শুরু করেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই। স্কোরকার্ডে ৫৬ রান ওঠার পরই তামিম বোল্ড হয়ে যান ২১ রান করে। লিটনও খুব বেশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারেননি, ২৬ রান করে আউট হয়ে যান। মুশফিকের ১১ রানের ধুঁকতে থাকা ইনিংস শেষ হয়েছে ইয়াংয়ের বলে আউট হয়ে। মিঠুনও (১৩) টেকেননি বেশিক্ষণ। ৯৭ রানে তখন ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ।
সাকিব শুরু করেছিলেন পালটা আক্রমণ, দ্রুত ৪৩ বলে ৫৪ রান করে ফেলেছিলেন। কিন্তু থেমে গেছেন সেখানেই। বাংলাদেশের রান তখন ১৫৬, ওই রানেই ফিরে গেছেন সাব্বির রহমান। সেটিও কোনো রান না করেই। মাহমুদউল্লাহ ৩৭ রান করে কিছুটা অনুশীলন করে নিয়েছেন। শেষ দিকে ফরহাদের ১৫ আর তাসকিনের ১৪ রান হারের ব্যবধানটাই কমিয়েছে শুধু। তবে মাশরাফি বা সাকিব, কারোরই তাতে খুশি হওয়ার খুব একটা কারণ নেই! ম্যাচ হারের পর ওপেনার লিটন দাস বলেন, ‘যে উইকেট ও মাঠ, এখানে ৩০৮ খুব বেশি ছিল না, আমরা ভালো খেলতে না পারায় হেরেছি। মাঠ ছোট থাকায় সবাই ছয় মারার চেষ্টা করায় মিস হিট হয়েছে। জিততে পারলে প্রস্তুতিটা ভালোই হতো, তবে সব হিসাব করলে খারাপ হয়নি।’
শিষ্যদের ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে মুখ খুলেছেন ব্যাটিং পরামর্শক নিল ম্যাকেঞ্জি, গা-গরমের ম্যাচে তামিমদের ব্যাটিং কৌশল তার পছন্দ হয়নি। সাবেক এ প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানের মতে, উইকেটে থিতু হওয়ার চেয়ে তামিম, লিটনরা আয়ারল্যান্ডের হাড় কাঁপানো ঠান্ডার সঙ্গে খাপ খাওয়াতেই বেশি মনোযোগী ছিল। যা দিন শেষে কোনো সুখকর ফল এনে দিতে পারেনি। কাজেই ব্যাটিং কৌশলের প্রতি মনোযোগী হতে জোর তাগিদ দিয়েছেন লাল সবুজের ব্যাটিং কোচ। দলের অভিজ্ঞরা নিশ্চয়ই জানে ভিন্ন কন্ডিশনে কী করে খেলতে হয়। আমার মনে হয় না, হারের পেছনে ঠান্ডা আবহাওয়া দায়ী, বরং পিচের সঙ্গে তাদের থিতু হওয়ার মানসিকতা ম্যাচে অনুপস্থিত ছিল। আপনি জানেন, নিশ্চয়ই যখন বলের লাইন ও লেন্থ বদলে যায়, তখন রান তোলার কৌশলও বদলাতে হয়। অতএব এটা বলা ঠিক হবে না যে হারের জন্য কন্ডিশনই দায়ী।’
বলাবাহুল্যই হবে বাংলাদেশ অনুশীলন করেছে ঢাকার তীব্র গরমে। পক্ষান্তরে আয়ারল্যান্ডে দিনের তাপমাত্রা ১১-১২ ডিগ্রি, যা রাতে ২ ডিগ্রিতে নেমে যায়। কাজেই কন্ডিশন নিঃসন্দেহে সফরকারীদের ভালো পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এরপরও তামিম, লিটন, মুশফিক ও মিঠুন যেভাবে আউট হয়েছেন, তা দেখে ম্যাকেঞ্জির মনে হয়েছে ব্যাটিং কৌশলের প্রতি তারা একেবারেই মনোযোগী ছিল না। 
প্রসঙ্গে ম্যাকেঞ্জি জানান, ‘ওরা ওদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলেনি। ইংল্যান্ডের উইকেট দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো এতটা কুইক নয়। আমার মনে হয় না, ওদের ব্যাটিং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ আছে। আমার যেটা মনে হয় দক্ষতার চেয়ে ব্যাটিং কৌশলের প্রতিই তাদের মনোযোগী হওয়া উচিত।’

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]