logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০১৯
কারা হেফাজতে দগ্ধ আইনজীবীর মৃত্যুর বিচারিক তদন্তের নির্দেশ
আলোকিত ডেস্ক

পঞ্চগড়ে কারা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আইনজীবী পলাশ কুমার রায়ের অগ্নিদগ্ধ হওয়া এবং পরে হাসপাতালে তার মৃত্যুর ঘটনায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুলসহ এ আদেশ দেন। খবর বিডিনিউজের। 

আদেশে বলা হয়, পঞ্চগড়ের মুখ্য বিচারিক হাকিমের তত্ত্বাবধায়নে একটি ম্যাজিস্ট্রেট টিম দিয়ে ওই ঘটনার বিচারিক তদন্ত করতে হবে। এ আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। পাশাপাশি এ অনুসন্ধান কাজে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক, জেলা কারাগারের প্রধান এবং জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন 

আদালত। কারাগারে কারাবন্দিকে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে নাÑ তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, কারা মহাপরিদর্শক, রংপুর বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক এবং পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন নিজেই তার রিটের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান।
আগামী ২৩ জুন এ মামলা পরবর্তী আদেশের জন্য আবারও আদালতে উঠবে বলে জানিয়েছেন সুমন।
আদেশের পর আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পঞ্চগড়ের সন্তান পলাশ ঢাকা বারের একজন আইনজীবী। তিনি মানহানির মামলায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালে ২৬ এপ্রিল কে বা কারা তার শরীরে পেট্রল বা কেরোসিন জাতীয় পদার্থ ঢেলে আগুন দেয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।’
ওই ঘটনার বিচারিক অনুসন্ধান চেয়ে এ রিট আবেদন করেছিলেন জানিয়ে আইনজীবী সুমন বলেন, ‘আদালত শুনানিতে বলেছেন, ছেলেটাকে যদি হত্যা করা নাও হয়ে থাকে, সে যদি আত্মহত্যাও করে থাকে, তাহলেও এটি বের হয়ে আসা দরকারÑ কারা অভ্যন্তরে সে কেরোসিন অথবা দাহ্য পদার্থ কোথায় পেল, কীভাবে আগুন দিল? এ ব্যাপারটা সামনে আসা জরুরি। কারণ জেল-কারাগারকে মনে করা হয় সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। আমাদের ইতিহাসের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। এইটার বদলা কিন্তু আমরা এখনও শেষ করতে পারতেছি না। এমন একটি নিরাপদ জায়গায় হত্যা করা হলে, যদি অভিযোগটা সত্য হয়, আমরা বিশ্বাস করি তদন্তের মাধ্যমে এটা পুরোপুরি বের হয়ে আসবে এবং আসা উচিত।’ 
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান বলেন, আইনজীবী পলাশের দগ্ধ হওয়ার দিনই পঞ্চগড়ের ডিসি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন কর দেন। তিন দিনের মধ্যে ওই কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল।
এরপর ৩০ এপ্রিল আরও দুটো কমিটি গঠন করা হয়। একটি তদন্ত কমিটি করেছেন রংপুর বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক; অন্যটি রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক। তারা পঞ্চগড় জেল সুপারকে চিঠি দিয়ে তদন্ত করতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। ওই কাগজগুলো আদালতকে আমরা দেখিয়েছি। এছাড়া ৩০ এপ্রিল প্রশাসন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে। এটাও আমরা আদালতকে বলেছি।’
কোহিনূর কেমিক্যালসের আইন বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা পলাশ কুমার রায় ঢাকা বারের একজন সদস্য ছিলেন। কোম্পানির ৩১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা হয়। ওই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ২৫ মার্চ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন পলাশ। পরে জেলা শহরের শের-ই-বাংলা পার্কসংলগ্ন মহাসড়কে মানববন্ধন করেন। সেখানে হ্যান্ডমাইকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রশাসন ও পুলিশকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে পলাশকে আটক করে সদর থানার পুলিশ। পরে রাজীব রানা নামে একজন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে পলাশের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কোহিনূরের মামলার শুনানির জন্য ২৬ এপ্রিল পলাশকে পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় পাঠানোর কথা ছিল; কিন্তু সেদিন সকালে তাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরদিন পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ এপ্রিল দুপুরে মারা যান পলাশ। তার শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানান।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]