
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০১৯ | |
‘টুকটাক কৃষি কাজের আয়ে পরিবার নিয়ে চলছে অভাবের সংসার। বেশি বাইরে যাওয়া হয় না বাবা-ছেলের। এদিক-ওদিক গেলে বাচ্চারা দেখে ভয় পায়। ভুত বা দৈত্য বলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।’ তাদের যেনো ভোগান্তির শেষ নেই। অজ্ঞাত বা বিরল রোগে মুখ বিকৃত হওয়ায় তারা খেতে পারেন না স্বাভাবিকভাবে। চোখে দেখতেও অসুবিধা। এ রকমই এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বিল্লাল হোসেন (৫৫) ও তার ছেলে মাসুদ রানা (২০)। বিরল রোগে আক্রান্ত বাবা-ছেলের বাড়ি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপুর গ্রামে। সরেজমিন বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিল্লালের ডান চোখের ব্রু থেকে মুখম-ল ও গালজুড়ে পুরো অংশ ছেপে গেছে বড় আকারের টিউমারের মতো। বাম চোখেও এ রকম হওয়ার পথে। কপাল, মুখ, গলদেশসহ শরীরে বিভিন্ন অংশে অসংখ্য টিউমার জাতীয় গুটি রয়েছে। কোনোমতে চোখে দেখতে পান তিনি। বিল্লাল পেশায় একজন কৃষক। মা, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যাসন্তান নিয়ে তার পরিবার। তার বড় ছেলে মাসুদ রানারও জন্ম থেকেই তার মতো এ রোগটি হয়েছে। ছেলের বাম চোখের ওপর টিউমার জাতীয় এ রোগটিও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় হচ্ছে। একইভাবে ছেলেরও চোখের ব্রু থেকে মুখের গালজুড়ে ছেপে থাকায় চোখে কম দেখছেন এবং শরীরে বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট টিউমারের মতো গুটি রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন তারা। অনেক আগে নিজে ময়মনসিংহে আর ছেলেকে ঢাকায় ডাক্তার দেখালেও কী রোগ হয়েছে, এ বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি। নিয়তি ভেবেই দিনাতিপাত চলছে তাদের। কৃষক বিল্লাল হোসেন জানান, জন্ম থেকেই তার এ রোগ। প্রথমে এটি ছোট ছোট মসুর দানার মতো দেখা যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে। আগুন বা রোদের তাপ তারা কেউ সহ্য করতে পারে না। মাথা ও মুখ ভারি ভারি লাগে। কষ্টের কারণে মাঝেমধ্যেই নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করে।
তিনি আরও বলেন, আমার মতোই আমার ছেলেকে কেনো এমন কঠিন রোগে ভুগতে হচ্ছে; ওর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল। এ রোগের কারণে লেখা পড়া করতে পারল না। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আর সে স্কুলে গেল না। স্কুলে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারে না; মুখ দেখতে বিশ্রী এসব কিছুতে মাসুদকে ভাবিয়ে তুলত। আর এসব কারণে তার পড়ালেখা ভালো লাগেনি। বিল্লালের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, আমার স্বামী ও ছেলের চোখ-মুখের এ রোগের বিস্তার দিন দিন ভয়ঙ্কর হওয়ায় পর্যায়গুলো আমি শুধুই দেখছি; কিন্তু অর্থাভাবে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত তারা। বিল্লালের বৃদ্ধা মা সুরুত জান বেগম বলেন, তাদের পূর্ব পুরুষের বংশে এ ধরনের রোগ ছিল না। তার ছেলে বিল্লালের জন্মকালে চোখের ব্রু’র ওপর একটু ফুলা ও একটি কালো দাগ দেখা যায়। নাতিরও একই অবস্থা। তিনি ছেলে ও নাতির উন্নত চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য মেজবাহ উদ্দিন বলেন, একেতো অভাবের সংসার বিল্লালের। তার ওপর যে ধরনের রোগে ভুগছেন বাবা-ছেলে; এটি দেখলে বুঝা যায় কষ্টের জীবন কেমন। সরকারের সহায়তা ছাড়া তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |