logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শুক্রবার, মে ১০, ২০১৯
প্রবৃদ্ধি ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ। মোট রপ্তানিতে তৈরি পোশাকের অবদান প্রায় ৮৩ শতাংশ
দশ মাসে রপ্তানি আয় ৩৩৯৩ কোটি ডলার
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৈরি পোশাকে ভর করে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধারা বজায় রেখেছে। অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথম ১০ মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশের বেশি। পোশাকের পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য এবং বেশি কিছু প্রচলিত পণ্যের আয়ও বেড়েছে। তবে বরাবরের মতোই ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে চামড়া ও পাট পণ্যের রপ্তানিতে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। ৩ হাজার ১৯০ কোটি ডলারের প্রাক্কলিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ৩ হাজার ৩৯৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। একই সঙ্গে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৪০ কোটি ডলারের পণ্য। মোট রপ্তানি আয়ে পোশাকের অবদান প্রায় ৮৩ শতাংশ।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ২ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ সময় ২ হাজার ৬৭৪ কোটি ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সে হিসাবে লক্ষ্যামাত্রার চেয়ে ৬.৫৩ শতাংশ আয় বেশি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার। রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় এ খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত থাকলে বছর শেষে পোশাক থেকে ৩ হাজার ২৬৮ কোটি ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অনেক বেশি আয় হতে পারে বলে মনে করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। গেল অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধির পেছনে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাইরে নতুন বাজারের রপ্তানি বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলেই মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে প্রধান দুই তৈরি পোশাক পণ্যের মধ্যে এপ্রিল পর্যন্ত নীট খাতে ১ হাজার ৩২১ কোটি ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৪০৮ কোটি ডলারের। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। গেল বছরের প্রথম ১০ মাসে নীট খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১ হাজার ২৫৪ কোটি ডলার।
অপর দিকে ওভেন খাতে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারের। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। গেল বছরের প্রথম ১০ মাসে ওভেন খাতে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৭৬ কোটি ডলারের পণ্য।
পোশাকে আয় দিন দিন বাড়লেও সুখবর নেই সম্ভাবনাময় চামড়া খাতে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি আয়ের এ শিল্পের খরা আরও প্রকট হয়েছে। অর্থবছরের ১০ মাস পার হলেও ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির ধারা থেকে বের হতে পারেনি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের এই খাত। 
খাতটি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ৯১ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য থাকলেও ১০ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৮৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের চামড়া। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং আগের বছরের চেয়ে আয় কমেছে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ। যেখানে গেল অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৯১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। যদিও বছর শেষে চামড়া থেকে ১১২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের রপ্তানির লক্ষ্য রয়েছে। গত অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের চামড়া পণ্য। 
খাতটির ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীন বাংলাদেশ থেকে ফিনিস লেদার আমদানি করে তা দিয়ে পণ্য তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করত। বর্তমানে এই প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে। এছাড়া হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্পনগরী স্থানান্তর এ পণ্যের রপ্তানি কমে যাওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন তারা। কেননা, সাভারে যাওয়ার পর অবকাঠামোগত নানা জটিলতায় পড়েছে এ শিল্প।
চামড়ার মতোই ঋণাত্মক ধারায় রয়েছে পাটের রপ্তানি আয়। চলতি অর্থ বছরের প্রথম ১০ মাসে এ খাতে ৮৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৬৯ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পণ্য। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম। গেল বছরের প্রথম ১০ মাসে চামড়া খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৮৮ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।
অন্য খাতের মধ্যে চিংড়িসহ মৎস্য জাতীয় পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, প্রবদ্ধি ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ; কৃষি পণ্যে আয় হয়েছে ৭৯ কোটি ৯ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি ৪৫ শতাংশ, ওষুধ রপ্তানি হয়েছে ১১ কোটি ১৭ লাখ ডলারের, প্রবৃদ্ধি ২৯ শতাংশ; প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে ২৩ দশমিক ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, আয় ১০ কোটি ৩ লাখ ডলার এবং আসবাবপত্রে আয় হয়েছে ৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি ১৯ শতাংশ।
অন্য দিকে রপ্তানি কমেছে সিমেন্ট, রাসায়নিক সার, রাবার, কাঠ পণ্য, হোম টেক্সটাইল, কাঁচ পণ্যে আয় কমেছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]