নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপিকে ভাঙার জন্য অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। কোনো ভুয়া খবরে কান দেবেন না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে দল পরিচালনা করছেন। আর তার নির্দেশে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক রাজনীতির দিকে যাব। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ভবিষ্যতে দলের নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে বিএনপির তরুণ-যুবকদের কঠোর সংগ্রামের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে। হতাশ হলে চলবে না। আমাদের প্রতিটি সুযোগ নিতে হবে, পথ বের করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এটি সহজ কাজ নয়। তিনি বলেন, আমি সুস্থ নই। আমার মাঝেমাঝে মনে হয়, আমাদের সময় তো শেষ হয়ে আসছে। এখন যারা সামনে আসবেন, তাদের শুধু রাজনীতি নয়, এ বাংলাদেশকে বাঁচাতে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এখানে যারা আছি, আমরা দীর্ঘকাল ধরে কাজ করছি। তাই আমাদের বয়স হয়েছে এবং আমরা বৃদ্ধ হয়েছি। আর এখন আপনাদের সময়। আপনারা এগুলো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, বাংলাদেশ নিজস্ব মর্যাদায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি না এবং বাংলাদেশ নিজের পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি নাÑ আজকে সে প্রশ্ন এসে দাঁড়িয়েছে। নবীন কর্মীদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দেন ফখরুল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যখন রাজনীতিতে আসেন, তখন বাংলাদেশ একটি স্বৈরাচার শাসকের কবলে পড়েছিল। শুধু স্বৈরাচার শাসনই ছিল না, অত্যন্ত সুচারুভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার নতুন একটি প্রক্রিয়া ও প্রচেষ্টা ছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর স্বৈরাচার এরশাদের রাজনীতিতে আগমন, এটি একই সূত্রে গাথা ছিল। সুতরাং এটিকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার উপায় নেই।
তখনও বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ ছিল মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, সে চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়ে সে দলটিকে খালেদা জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়ে এসেছিলেন। এটি তার জীবনে ও বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বড় অধ্যায়। এদেশে খালেদা জিয়াকে বিভিন্নভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। তবে আমার মতে, এশিয়ায় তার মতো গণতন্ত্রকামী ত্যাগী নেত্রী খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে। দলীয় প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার তিন যুগ পূর্তি উপলক্ষে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন হয়। খালেদা জিয়ার বিভিন্ন সময়ের শতাধিক আলোকচিত্র সেখানে স্থান পায়। অনুষ্ঠানে ‘ত্যাগ’ নামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।
সংগঠনের পরিচালক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।