বাংলাদেশ থেকে ওমরা যাত্রী ও মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসীদের ফ্লাইটে তীব্র আসন সংকট ও ভাড়া বৃদ্ধিতে উদ্ভূত জটিলতা নিরসনে জরুরিভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। এ সংকট নিরসনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাবও তুলে ধরেছে সংগঠনটি। শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনের এক হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এ দাবি জানান। 
লিখিত বক্তব্যে হাব সভাপতি বলেন, চলতি বছর ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এয়ারলাইন্সগুলোতে আসন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ সুযোগে এয়ারলাইন্সগুলো বিমান ভাড়া অসহনীয় মাত্রায় বাড়িয়েছে। আগে যেখানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা সরাসরি বিমানভাড়া ছিল ৫০ হাজার টাকা; বর্তমানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা ওমরা  যাত্রীদের বিমানভাড়া ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকাও নেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বেশি ভাড়া দিয়েও ফ্লাইটের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে সৌদি কর্তৃপক্ষ বছরের নির্দিষ্ট ৬ থেকে ৭ ম?াস (জানুয়ারি থেকে জুন) পর্যন্ত ওমরা ভিসা প্রদান করলেও চলতি বছর থেকে সারা বছর (হজের এক সপ্তাহ বাদ দিয়ে) ভিসা প্রদান করছে। ৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০৮ জনকে ভিসা দিয়েছে। বিমানে আসন সংকটের কারণে বহু ওমরা যাত্রীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। শুধু রোজার মাসে সময় মতো টিকিট না পেলে ২০ হাজার যাত্রী ওমরাহ পালন করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে ৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকার আর্থিক লোকসান হবে।
শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, সরকারের অভিবাসন ব্যয় কমানো নীতিমালা থাকলেও বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসীদের বিমানভাড়া বাড়ার কারণে অভিবাসন ব্যয় অনেক বেড়েছে। অসহায় গরিব অভিবাসন প্রত্যাশীরা বর্ধিত টাকার ব্যয় বহন করতে না পারায় অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বা ভিসা বাতিল হচ্ছে। তাছাড়াও ছুটিতে আসা অনেক অভিবাসী বিমানের আসন সংকট ও ভাড়া বাড়ার কারণে গন্তব্যে ফিরতে পারছেন না। তিনি জানান, বর্তমানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা অভিবাসীদের বিমান ভাড়া ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা, যেখানে আগে ছিল ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকা। অতিরিক্ত বিমানভাড়ার টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আকারে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। 
সংকট সমাধানে স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যেসব রুটে যাত্রী সংখ্যা কম ও অলাভজনক, সে সব রুটের ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়ে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা, ঢাকা-রিয়াদ-ঢাকাসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী অন্য গন্তব্যে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা দরকার। এতে বিমান লাভবান হবে এবং ওমরাহযাত্রীসহ সব মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসী  উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ওপেন স্কাই করা বা তাদের উৎস?াহ প্রদানের জন্য হ্যান্ডেলিং, ল্যান্ডিং ও পার্কিংসহ অন্যান্য চার্জ কমানো ও মওকুফ করা যেতে পারে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাব সভাপতি বলেন, ৪ জুলাই থেকে এ বছরের হজ ফ্লাইট শুরু হবে, চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। আর হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১৭ আগস্ট। তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে হজযাত্রীরা অনেক সময় বিড়ম্বনা বা প্রতারিত হন। তাই এজেন্সি ছাড়া অন্য কোনো মধ্যস্বত্বভোগীর লেনদেন বা চুক্তি না করার অনুরোধ জানান তিনি।