logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শুক্রবার, মে ১৭, ২০১৯
বিশ্বকাপ দলে কেন?
স্পোর্টস রিপোর্টার

আবু জায়েদ রাহি ত্রিদেশীয় সিরিজে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন বুধবার। নিজেকে প্রমাণের পাহাড়সম চাপ ছিল মাথার ওপর। কেননা দুই দিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেকে নেমে আলো ছড়াতে পারেননি, ব্যাটসম্যানদের ধন্দে ফেলতে পারেননি, অনেকটাই বিবর্ণ ছিলেন। বিশ্বকাপে তার জায়গা তাই সুতার ওপর ঝুলছিল। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ম্যাচে হয়তো শেষ সুযোগ পেয়েছিলেন; যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন তরুণ এ পেসার, তাতে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তার জায়গা নিয়ে এখন প্রশ্ন তোলাই কঠিন।

লাল বলে কার্যকারিতায় বরাবরই নির্বাচকদের ‘গুড বুকে’ ছিলেন এ পেসার। তবে সাদা বলে ঘরোয়া ক্রিকেটে অতটা জৌলুস ছিল না তার। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভার বল করে ৫৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন রাহি। ওয়ানডে তো বটেই। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারেও এর আগে কখনও ৫ উইকেট পাননি তিনি। বিশ্বকাপে তাকে দলে নিয়ে নির্বাচক ও অধিনায়ক বলেছিলেন, দুই দিকেই বল সুইং করানোর সামর্থ্যরে কারণে দলে নেওয়া হয়েছে তাকে, ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে যা অনেক বেশি কার্যকর।
সেই সামর্থ্যরে প্রমাণই দিয়েছেন ক্লনটর্ফ ওভালে। নতুন বল হাতে নিয়ে হরহামেশাই ইনসুইং-আউটসুইং করিয়ে বেশ কয়েকবার আইরিশ ব্যাটসম্যানদের ধন্দে ফেলেছেন, দিতে পেরেছেন কার্যকর সেøায়ার। তাতে মিলেছে ফলও। অ্যান্ডি বালবার্নিকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে প্রথম উইকেট নেন; তবু কিছুটা খরুচে ৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ওই একটাই উইকেট ছিল। পরের স্পেলে এসেই মূলত করেছেন বাজিমাত।
সøগ ওভারে দ্রুত রান তোলার তাড়ায় বড় শট খেলছিল আইরিশরা। তবে ওই সময়ও উইকেট পেতে লাগে এলেম। উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে ওয়াইডলেন্থে বল করে টেনে মারতে বাধ্য করে এক্সটা কাভারে ক্যাচ বানান বুদ্ধির জোরেই। কেভিন ও’ব্রায়েন তার সেøায়ার পিক করতে না পেরে ছোট মাঠেও বল সীমানা ছাড়া করতে না পেরে হয়েছেন কুপোকাত। সেঞ্চুরিয়ান পল স্টার্লিংও একই ভুলে ডিপমিড-উইকেটে বন্দি। গ্যারি উইলিসন কাট করতে গিয়ে সোজা দিয়েছেন পয়েন্ট ক্যাচ। ওই ৫ উইকেট নিয়ে বাঁধনহারা উল্লাস করেননি তিনি। তবু নিশ্চিতভাবেই তার চেহারায় মিলেছে একটা স্বস্তির হাওয়া। তার এমন বোলিংয়ে আইরিশদের ৩০০-এর নিচে (২৯২) রানে আটকাতে পেরেছে বাংলাদেশ। অন্তত এখন তাকে নৈপুণ্যে অজুহাতে বাদ দেওয়ার সুযোগ তাই সামান্যই। অথচ তাসকিন আহমেদ বিপিএলে চোটে না পড়লে জায়েদের নাম বিশ্বকাপে আসারই কথা ছিল না। তাসকিন অবশ্য বিশ্বকাপ দল দেওয়ার আগেই সেরে উঠেছিলেন। কিন্তু ম্যাচ ফিটনেস বলে যে ব্যাপার আছে, সেখানে তাকে নিয়ে ছিল বিস্তর সংশয়। সেরা ছন্দটা তো হুট করেই এসে পড়ে না।
তাসকিনের জন্য অপেক্ষা না করে জায়েদকেই বিশ্বকাপ দলে নিয়ে নেন নির্বাচকরা। তবে আইসিসির অনুমতি ছাড়াই ২৩ মে পর্যন্ত দলে বদল আনার সুযোগ থাকায় তার ভাগ্য ঝুলছিল সুতায়। আয়ারল্যান্ডে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচেও সুযোগ না মেলায় একরকম নিয়তিই দেখতে পাচ্ছিলেন সিলেটি এ পেসার। তাসকিনও আয়ারল্যান্ডে থাকায় গুঞ্জন ছিল বাদই হয়তো পড়তে যাচ্ছেন তিনি। তবে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হালকা চোটই কপাল খুলে দেয় তার। দলে যেহেতু নেওয়া হয়েছে একটু পরখ করে নিতেই অভিষেক হয় ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে, অভিষেক ম্যাচে অবশ্য কিছুই করতে পারেননি, নিজের জায়গা আরও প্রশ্নবিদ্ধই হয়ে পড়েছিল। আইরিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের আপাত গুরুত্বহীন ম্যাচটা আবু জায়েদের জন্য ছিল সত্যিকারের অগ্নিপরীক্ষা। সে পরীক্ষায় তিনি এমন মার্কস তুলেছেন, যা হয়তো নিজেও কখনও ভাবেননি!

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]