ধানের দাম মণপ্রতি কমপক্ষে ১ হাজার ১০০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেছেন, ১ বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে কৃষকের কমপক্ষে ৯ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়। তাই ধানের দাম ১ হাজার ১০০ টাকার নিচে রাখা যাবে না।
‘কৃষি বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও’ সেøাগানে ধানের দাম বৃদ্ধির দাবিতে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী জেলা ও মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টি বিক্ষোভ-সমাবেশ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ফজলে হোসেন বাদশা।
তিনি বলেন, দেশে একটি সময় দুর্ভিক্ষে মানুষ মারা যেত। প্রযুক্তির ব্যবহারে এখন কৃষির উন্নয়ন হয়েছে। এখন কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি। আমি বলি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মন্ত্রীর কোনো প্রয়োজন নেই। কৃষকরাই এ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারেন। কৃষক হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ফসল ফলান, কিন্তু এর কৃতিত্ব তাদের দেওয়া হয় না।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা আরও বলেন, আজকে দেশে ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। মন্ত্রীরা বলেন, খেতমজুরের সংকটও নাকি উন্নয়নের মাপকাঠি। অথচ বুঝতে হবে, আজকে কৃষির বেহাল দশা। কৃষক না খেয়ে মরছেন। উন্নয়নের এসব ফাঁকা বুলি দিয়ে কোনো লাভ নেই। রাজনীতিতে এখন ব্যবসায়ীদের অনুপ্রবেশ ঘটছে উল্লেখ করে বাদশা বলেন, রাজনীতিতে এখন এত ব্যবসায়ী এসেছেন, তাদের মনোভাব শুধু খাদ্য আমদানির দিকে। খাদ্য আমদানি করা গেলে তারাই সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। তারা মনে করেন, খাদ্য আমদানি করা গেলে ব্যবসা হবে। তাই কৃষকের স্বার্থ দেখেন না। এ দেশে বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হয়। কিন্তু কৃষকের ধান রাখার জন্য গুদাম নির্মাণ হয় না।
তিনি বলেন, গ্রামের মানুষের উন্নয়ন করতে হবে। শহরের সব সেবা গ্রামের মানুষকেও পেতে হবে। তার মানে এই নয়, গ্রামকেও শহর করতে হবে। এক শ্রেণির অর্থনীতিবিদ বলছেন, গ্রামও শহর হয়ে যাবে। তারা জ্ঞানপাপী, মুর্খের মতো কথা বলছেন। এ সব ভূতুড়ে অর্থনীতিবিদদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে।
ফজলে হোসেন বাদশা এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী কোনো ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই বলেছেন, বাংলাদেশ কানাডার মতো হয়ে গেছে। আমি বলিÑ কানাডা নয়, বাংলাদেশ আমেরিকার মতো হয়ে গেছে। সেখানেও পুঁজিবাদী, এখানেও পুঁজিবাদী। বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে ৫ শতাংশ মানুষের।