প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, মঙ্গলবার, মে ২১, ২০১৯ | |
রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে একটি বিরতিহীন ট্রেনের জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন রাজশাহীবাসী। দেশের সর্বাধুনিক ট্রেন দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে দাবি পূরণ করেছেন ২৫ এপ্রিল। ওই দিন তিনি এ রুটে উদ্বোধন করেছেন বিরতিহীন ট্রেন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। কিন্তু বিরতিহীন এ ট্রেনও যাত্রাপথে বিরতি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানাচ্ছেন যাত্রীরা। তারা জানান, যাত্রী ওঠা-নামা না হলেও বনলতা এক্সপ্রেস যাত্রাপথে ৮ থেকে ১০ বার থেমে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে। এ রুটে আগে থেকে চালু থাকা অন্য তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনও ১০ থেকে ১২টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উদ্বোধনের পর ২৭ এপ্রিল থেকে বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করে বনলতা। প্রথম দিকে বিরতি ছাড়াই চলাচল করে ট্রেনটি। এ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন যাত্রীরাও। তবে গেল সপ্তাহ থেকেই ট্রেনটি স্টেশন ছাড়াই বিভিন্ন স্থানে যাত্রাবিরতি করতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
যাত্রীদের অভিযোগের পর শনিবার ও রোববার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই দিনই ট্রেনটি গন্তব্যে পৌঁছতে একাধিকবার যাত্রাবিরতি করেছে। বিরতিহীন হওয়া সত্ত্বেও অন্যান্য আন্তঃনগর ট্রেনকে ক্লিয়ারেন্স দিচ্ছে বনলতা। এ নিয়ে ক্ষোভ জানাচ্ছেন যাত্রীরা। তারা জানান, কখনও কখনও স্টেশন থেকে ছাড়তেও দেরি করছে ট্রেনটি। ফলে উদ্বোধনী দিনে ৪ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটি গন্তব্যে পৌঁছালেও এখন তা হচ্ছে না। শনিবার বনলতা এক্সপ্রেসে রাজশাহী থেকে ঢাকায় যাত্রা করা চাঁপাইনবাবগঞ্জের তারেক রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ সাইফ ও জাহিদুল ইসলাম জয় জানান, নির্ধারিত সময় সকাল ৭টায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে বনলতা ছেড়ে যায়। তবে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ পার হওয়ার পরই ৫ থেকে ৭ মিনিট করে যাত্রাবিরতি শুরু করে। তারা জানান, স্টেশন ছাড়াও মাঝপথে অন্য ট্রেনকে ক্লিয়ারেন্স বা পথ ছেড়ে দিতেও দেখা যায় বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেসকে। ফলে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৪৫ মিনিট পর গন্তব্যে পৌঁছেন তারা।
এদিকে রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম সকাল ৭টায় বনলতায় ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। যাত্রা শেষে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে অধ্যাপক আবুল কাশেম লেখেন, বিরতিহীন বনলতা চালু হওয়ার পর আজই প্রথম ট্রাভেল করলাম। কিন্তু অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ভয়াবহ। নামেই বিরতিহীন, কাজে লোকালকেও হার মানাল। অন্তত আজ। ধারণা ছিল বিরতিহীনকে অন্য ট্রেন ক্লিয়ারেন্স দেবে। কিন্তু দেখলাম উল্টোটা। ট্রেনটি অবলীলাক্রমে আট থেকে নয় জায়গায় থামল। ফলে অনলাইন রেকর্ডই সাক্ষ্য দিচ্ছে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছাতে বিরতিহীন বনলতা ১ ঘণ্টা ২৯ মিনিট ডিলে। আমাদের (রাজশাহীবাসী) পেটে সম্ভবত বনলতা হজম হবে না।
ট্রেনটি বাণিজ্যিকভাবে চালুর পর ১৫০ টাকার বাধ্যতামূলক খাবারের চার্জসহ শোভন চেয়ারে ৫২৫ টাকা এবং এসি চেয়ারে ৮৭৫ টাকা টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তবে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে রেলপথ মন্ত্রণালয় বাধ্যতামূলক খাবার বাতিল করে টিকিটের মূল্য শোভন চেয়ারে ৩৭৫ টাকা এবং এসি চেয়ারে ৭২৫ টাকা করে। এ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন যাত্রীরা। তবে বিরতিহীন এ ট্রেনের বিরতি নিয়েই অসন্তোষ।
এ ব্যাপারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম জানান, হয়তো দুয়েক দিন কিছু সময় দেরি করতে পারে। তবে বনলতা এক্সপ্রেস অধিকাংশ দিনই সাড়ে ৪ ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে। এ নিয়ে আমাদের কাছে কোনো যাত্রী এখনও অভিযোগ করেননি। কেউ যদি অভিযোগ করে, তবে খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। তিনি জানান, ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহী রেলরুটে লাইন সংস্কারের কাজ চলছে। ফলে ওই রুটে নির্দিষ্ট অংশে চাইলেই কোনো ট্রেন ক্লিয়ারেন্স দিয়ে বনলতাকে বের করে দিতে পারবে না। সেই পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। তবে দ্রুত লাইন সংস্কার কাজ শেষ হলে নির্দিষ্ট সময়েই বনলতা গন্তব্যে পৌঁছাবে বলে আশা করেন তিনি।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |