logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শনিবার, মে ২৫, ২০১৯
কৃষক সবজির দাম পান কম ক্রেতারা কিনছে বেশি দামে
সাঈদ চৌধুরী

বাজার ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের অব্যবস্থাপনা রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ টিমের উচিত গাজীপুরসহ সব জায়গায় গ্রাম থেকে আসা কোন সবজি কত দামে মধ্যস্বত্বভোগীরা কিনছে ও কত দামে তা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করছে এবং ক্রেতার হাতে কত দামে তা পৌঁছাচ্ছে, তা ঘেঁটে দেখা

শ্রীপুরের মাওনা হাটে সন্ধ্যার পর বাজার করতে গেলাম। সবজি বাজারে গিয়ে দেখলাম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরও বহু সবজি অবিক্রীত রয়ে গেছে। দাম অনেক কম। বেগুন লম্বাটা কিনলাম বিশ টাকা কেজি দরে, কাঁচামরিচ আধা কেজি পনেরো টাকা, পুঁইশাক এক কেজি পনেরো টাকা, লেবু এক হালি দশ টাকা, টমেটো এক কেজি সর্বনিম্ন দশ টাকা পর্যন্ত, ঢ্যাঁড়শ কেজি বিশ টাকা, কচুর লতি কেজি ত্রিশ টাকা!
ঠিক কিছুক্ষণ পরই মাওনা চৌরাস্তা কাঁচাবাজারে যাওয়ার পর দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। এখানে ক্রেতাদের খুব বেশি হাহাকার। ঢ্যাঁড়শ পঞ্চাশ টাকা, বেগুন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ টাকা, লেবু এক হালি ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকা, কাঁচামরিচ কেজি ষাট টাকা, টমেটো চল্লিশ থেকে ষাট টাকা, শাক ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকা! 
হাট এবং বাজারের সবজির দামে এত পার্থক্য হওয়ার কারণ বিবেচনায় আনা যাবে না কোনোভাবেই! কারও সঙ্গে কথা বলেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়! একজন বাজারের কাঁচাসবজির ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ করলাম তিনি বললেন, আমরা কিনিই বেশি দামে কম বেচব কী করে? 
মাওনা হাটের এক পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেল তিনি কিনতে পারছেন অনেক সময় কম দামে; কিন্তু নির্ধারিত মূল্যের বাইরে বিক্রি করার কোনো উপায় নেই। সবকিছুর দাম বেঁধে দেওয়া। পাইকারি বাজারগুলোতে অনেক সময় এক খাঁচি বা এক ব্যাগ হিসেবেও সবজি বা তরকারি বিক্রি করা হয়। সেখানেও বড় ধরনের দাম ওঠানামা লক্ষ করা যায়। 
কিন্তু কৃষক যাদের কাছে বিক্রি করছে তারা যদি সরাসরি ক্রেতার কাছে বিক্রি করে; তাহলে দাম কম হয়। তখন অনেক কম দামে বিক্রি করতে হয় তাদের। যেটা লক্ষ করা গেল মাওনা হাটে। অন্যদিকে ক্রেতারা যদি হাট ও বাজারের মাঝামাঝি দামেও কিনতে পারতেন; তবু তাদের জীবন বাঁচত। 
কৃষক ও ক্রেতা দুইয়ের দূরত্ব অনেক আমাদের দেশে। কৃষক যার কাছে দশ টাকায় একটি কুমড়া বিক্রি করছে, সেটা শহরে বা বাজারে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে পঞ্চাশ থেকে ষাট টাকা। মধ্যে চল্লিশ টাকার এ ব্যবধান কেউ জানে না। এখানে পরিবহনে দুর্নীতির বিষয়টিও আসে। কিন্তু একটা ব্যাপার লক্ষণীয়, তা হলো গাজীপুরে উৎপাদিত সবজি গাজীপুরে বিক্রি হলেও তাতে কেন বিশ থেকে চল্লিশ টাকার ব্যবধান হবে। 
বাজার ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের অব্যবস্থাপনা রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ টিমের উচিত গাজীপুরসহ সব জায়গায় গ্রাম থেকে আসা কোন সবজি কত দামে মধ্যস্বত্বভোগীরা কিনছে ও কত দামে তা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করছে এবং ক্রেতার হাতে কত দামে তা পৌঁছাচ্ছে, তা ঘেঁটে দেখা। 
তাহলে কৃষক যেমন দাম ভালো পেতে পারেন, তেমনি ক্রেতারাও থাকবেন স্বস্তিতে। শুধু গাজীপুর নয় প্রত্যেকটি অঞ্চলেই বিপণনের বিষয়টি বিবেচনায় এনে এ পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। 

রসায়নবিদ ও সদস্য
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
শ্রীপুর, গাজীপুর 

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]