logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শনিবার, মে ২৫, ২০১৯
দক্ষতার পরীক্ষায় মমতার দুই সেনাপতিই ব্যর্থ
আলোকিত ডেস্ক

এবারে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার সাফল্যে থাবা বসিয়েছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল জয়ী হলেও বিজেপির বিশাল উত্থান মমতার জয়ের আনন্দ মøান করে দিয়েছে। এবারের নির্বাচনের কঠিন পরীক্ষায় মমতার দুই তরুণ ‘সেনাপতি’ই সফল হননি। তারা পারেননি ঘাসফুলকে প্রত্যাশিত জয় ‘উপহার’ দিতে। ভাইয়ের ছেলে অভিষেক ব্যানার্জি ও আরেক তরুণ নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তৃণমূলের আগামী দিনের ‘কা-ারি’ মনে করেন মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু দুজনের একজন অভিষেক নিজের ‘ঘর’ দারুণভাবে বাঁচাতে পারলেও, পারলেন না তার দায়িত্বে থাকা জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘাসফুল ফোটাতে। অন্যজন শুভেন্দু অধিকারী নিজের ‘গড়ে’ বাবা-ভাইকেই সম্মানজনক ব্যবধান দিতে পারলেন না। পারলেন না ‘দুর্ভেদ্য’ বহরমপুরের মাটিতে ঘাসফুলের বিজয়পতাকা ওড়াতে। মালদহের দুটি আসনের একটিও ছিনিয়ে আনতে পারলেন না তৃণমূলে। তৃণমূল নেত্রীর ভাইপো অভিষেক তার নিজের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে এবার ৩ লাখেরও বেশি ভোটে জিতেছেন। পাঁচ বছর আগে যেখানে যুব তৃণমূল সভাপতির ব্যবধান ছিল মাত্র ৭১ হাজার ২৯৮। এই ব্যবধান বৃদ্ধি নিয়ে দলের অন্দরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ভোটের আগেই বিরোধী শিবিরের লোকদের গ্রামছাড়া করার অভিযোগ যেমন উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে, তেমনি ভোটের দিনেও বুথ দখল করার অভিযোগ উঠেছিল অভিষেক বাহিনীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রে দ্বিতীয় হওয়া বিজেপির নীলাঞ্জন রায় অভিযোগ করেন, ভোটের দুই দিন আগে থেকে বহিরাগত এনেছিল তৃণমূল। গণনায় তো অনেক বুথই বিজেপিশূন্য। ভোট লুট করেছে, তারই প্রমাণ! সিপিএম প্রার্থী ফুয়াদ হালিমও বললেন, ফলতা, বজবজ, মহেশতলার মতো বিধানসভা এলাকায় বেশিরভাগ বুথেই এজেন্ট দিতে পারিনি। অবাধে ভোট লুট করেছিল তৃণমূল। আর অভিষেকের দায়িত্বে থাকা জঙ্গলমহলের বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার পাশাপাশি কুচবিহার আর পশ্চিম মেদিনীপুরে চূড়ান্ত বিপর্যয় এবার তৃণমূলে। বাঁকুড়ার দুই কেন্দ্র বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর ঘাসফুলের বদলে ফুটেছে পদ্ম। পুরুলিয়া, কুচবিহার, মেদিনীপুরও তৃণমূল বিচ্ছিন্ন হয়ে ভরসা রাখল পদ্মেই। পঞ্চায়েতে ভোট দিতে না পারার ‘ক্ষোভে’র জবাব দিতেই এবার মানুষ এই জেলাগুলোয় তৃণমূলের থেকে মুখ ঘুরিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। তার ওপর এই চার জেলায় দলের পর্যবেক্ষক অভিষেকের সঙ্গে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীর আপাত দূরত্বও কিছুটা হলেও চোরাস্রোতের ভূমিকা নিয়েছে বলে তৃণমূল শিবিরেই গুঞ্জন। অধিকারী-গড়ের ‘সম্রাট’ শুভেন্দুকেও তার নিজের গড় কাঁথি বা তমলুকে কোথাও দেখা যায়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি, তমলুকে শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী, ভাই দিব্যেন্দু এবারও জিতেছেন ঠিকই। কিন্তু গেল বার দুজনেরই জয়ের ব্যবধান ২ লাখের বেশি ছিল। সেখানে দুজনেরই ভোট কমেছে ১ লাখেরও বেশি। এ ‘ব্যর্থতা’ কার্যত শুভেন্দুরই বলে রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা। 

অন্যদিকে, ভোটের ঠিক মুখে মালদহ উত্তরের মৌসম বেনজির নূরকে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এনে বড় ‘উপহার’-চমক দিয়েছিলেন শুভেন্দু। মৌসমকে সেই কেন্দ্রে জিতিয়ে আনাও ছিল শুভেন্দুর ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। আর চ্যালেঞ্জ ছিল বহরমপুরে অধীর চৌধুরীকে পরাস্ত করা। কিন্তু মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুরে ঘাসফুল ফোটালেও অধীরকে হারানোর চ্যালেঞ্জে হেরেই গেছেন শুভেন্দু। সঙ্গে কান্দি বিধানসভাও ছিনিয়ে আনতে পারেননি কংগ্রেসের থেকে। ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে তৃণমূলে এনে বহরমপুরে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। বিরোধী গড়ের মালদহ, মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি রায়গঞ্জেরও দায়িত্ব ছিল অধিকারী-নবাবের উপরেই। সেখানেও গেরুয়া ঝড়। আনন্দবাজার

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]