প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, রবিবার, মে ২৬, ২০১৯ | |
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২২ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত যথাক্রমে ৩১ মে, ১ ও ২ জুনের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। প্রথম দুই দিন ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ক্রয়ে ভিড় থাকলেও তৃতীয় দিন শুক্রবার ছিল টিকিট প্রত্যাশীদের সর্বোচ্চ ভিড়। তবে শনিবার চতুর্থ দিন অগ্রিম টিকিট পেতে জনস্রোতে পরিণত হয়েছে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন।
কমলাপুর রেলস্টেশন কর্মকর্তারা জানান, শনিবার দেওয়া হয় ৩ জুনের টিকিট। টিকিট সংগ্রহে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে তাতে বিগত তিন দিনের উপস্থিতির চেয়ে অনেক বেশি। কাক্সিক্ষত টিকিট পেতে অনেকেই মধ্যরাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন, আবার কেউবা ভোরে দাঁড়িয়েছেন। টিকিট প্রত্যাশীদের প্রতিটি লাইন এঁকেবেঁকে চলে যায় স্টেশনের বাইরে। শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত লাইন স্টেশনের বাইরে সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড পর্যন্ত চলে গিয়েছিল।
জানা যায়, ২২ মে থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে, যা চলবে আজ পর্যন্ত। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবার ঢাকার পাঁচটি স্থান থেকে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। কমলাপুরে শুধু যমুনা সেতু দিয়ে সব পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আবদুল খালেক বলেন, রাত ১১টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছি কিন্তু
এখনও টিকিট কাউন্টারে পৌঁছতে পারিনি, সামনে এখনও অনেক মানুষ। যেহেতু পরিবার নিয়ে বাড়ি যাব, তাই ট্রেন ছাড়া বাসে যাওয়া কঠিন। বাধ্য হয়ে এত কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু কাক্সিক্ষত টিকিট পাব কি না জানি না।
রাজশাহীগামী বনলতা ট্রেনের টিকিটের জন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, আমি লাইনে দাঁড়িয়েছি সকালে। আমার মূল টার্গেট ছিল অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট কাটা, কিন্তু অ্যাপসটি কাজ না করায় বাধ্য হয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এরপরও অ্যাপসে চেষ্টা করছি।
টিকিট কাউন্টারে কর্মরত স্টেশনের এক কর্মচারী জানান, শনিবার অর্থাৎ ৩ জুনের টিকিটের জন্য কমলাপুরে সর্বোচ্চ ভিড়। যত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছে তত টিকিট আমাদের নেই। তাই অনেককে টিকিট না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যেতে হবে।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, ঈদের সময় সবাই এসি টিকিট চান, কিন্তু আমাদের এসি সিট তো সীমিত। তাই সবাইকে দেওয়া সম্ভব হয় না। প্রতিটি লাইনে মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন। এছাড়া ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে।
রেলভবন সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে ঈদের সময় একসঙ্গে প্রায় দেড় লাখ হিট পড়ে। তবে সিএনএসবিডির যে সক্ষমতা রয়েছে তাতে মাত্র ২০ হাজার লোড নিতে পারে। যে কারণে সাধারণ মানুষের অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট পেতে ভোগান্তি হচ্ছে।
এবার একজন যাত্রী চারটি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। ঈদের অগ্রিম বিক্রীত টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে এবং স্টেশন কাউন্টার থেকে বাকি ৫০ শতাংশ টিকিট অগ্রিম বিক্রি করা হচ্ছে।
ট্রেনের টিকিট কাটার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘রেল সেবা’ নামে মোবাইল অ্যাপটি বেশ কয়েকদিন আগেই চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু সেই অ্যাপসে কি কেউ টিকিট কাটতে পারছেন বা পেরেছেন? প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ সূচক মন্তব্য পাওয়া লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
এদিকে ঈদে বাড়ি ফিরতে অগ্রিম টিকিট কিনতে যারাই কমলাপুর রেলস্টেশনে এসেছেন, তার অধিকাংশই অনলাইনে টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয়েই এসেছেন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হোসাইন সাগর নামে এক ব্যক্তি বলেন, ২২ মে যেদিন টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে, সেদিন থেকেই অনলাইনে ও অ্যাপসে টিকিট কেনার চেষ্টা করেছি, বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েই লাইনে দাঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, প্রথমদিকে যখন অ্যাপসে টিকিট কাটার চেষ্টা করি, তখন লগইন-ই করতে পারিনি। শুক্রবার ফের চেষ্টা করলাম, তখন দেখাচ্ছিল, ‘মোবাইল কোটা নট অ্যাভেইলেবল’। রেলওয়ের এমন সেবায় ক্ষুব্ধ অনলাইনে টিকিট প্রত্যাশীরা।
শুধু তাই নয়, অ্যাপসে রেলের টিকিট কাটার ভোগান্তির অভিযোগ পেয়ে ২২ মে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম সিএনএসের সার্ভাররুমে হানা দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিম।
এ সময় দুদক কর্মকর্তারা অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট কাটার ভোগান্তির কথা বললে সিএনএসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। সার্ভার ডাউনের নামে সিএনএস টিকিট কালোবাজারি করলে কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি জানিয়েছিলেন দুদক কর্মকর্তারা।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |