logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, সোমবার, মে ২৭, ২০১৯
বিবিসির বিশ্লেষণ
মোদি এবার কীভাবে অর্থনীতি সামলাবেন
আলোকিত ডেস্ক

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির জয়ের খবরে দেশটির শেয়ার বাজারগুলো যেমন চাঙ্গা হয়েছে, তেমনি বেড়েছে রুপির মান। কিন্তু নির্বাচনে বিশাল জয়ের রেশ কাটার পরেই অর্থনীতির পুরোনো চ্যালেঞ্জগুলোই আসবে মোদির সামনে। কিন্তু এরও আগে নতুন করে প্রশ্ন আসবেÑ আগের দফায় কী করেছেন তিনি। এর উত্তর অনেকটাই মিশ্র পাওয়া যাবে। খারাপ ঋণ সামাল দিতে নতুন দেউলিয়া আইনের মতো কিছু শক্ত সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, যা ব্যাংক খাতে যথেষ্ট চাপ তৈরি করেছিল। কমে এসেছে ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য’ এবং এর জের ধরে বিশ্বব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস র?্যাঙ্কিংয়ে ৭৭তম স্থানে উঠে এসেছে ভারত। মোদির প্রথম মেয়াদেই ভারত পরিণত হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে ‘দ্রুত বর্ধনশীল’ অর্থনীতিতে। কিন্তু বড় জুয়ার বিষয় ছিল দুর্নীতি রোধে প্রায় তিন ভাগ রুপির নোট নিষিদ্ধ করা। সেটিই বড় ধাক্কা দিয়েছে অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে। পর্যাপ্ত বিকল্পের ব্যবস্থা না করে নেওয়া ওই পদক্ষেপে কার্যত ভারতের বিশাল অর্থনীতি খোঁড়াতে শুরু করে এবং অনেকে কাজও হারায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার সংস্কার পদক্ষেপ আরও জোরাল করার সুযোগ পাবেন মোদি। 

দ্বিতীয় দফায় প্রত্যাশা : অর্থনীতিবিদ সুরজিত ভাল্লা মনে করেন, দ্বিতীয় দফার বিজয় মোদিকে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেবে। তিনি বলেন, বিজয়ের আকারই বলে দিচ্ছে, আগামী ৫ বছরে শক্ত সংস্কারের প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি। গেল বছরের ডিসেম্বরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে ৬.৬ শতাংশ হয়েছিল। ভারত সরকারেরই ফাঁস হওয়া একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬-১৭ সময়কালে দেশটির বেকারত্বের হার ৪৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল।

চাকরির বিষয়ে নতুন সরকারের করণীয় : বিশ্লেষকরা মনে করেন, চাকরির সুযোগ বাড়াতে বেসরকারি খাতকে চাঙ্গা করতে হবে। মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি করাই হয়েছিল

উৎপাদন খাতকে চাঙ্গা করার জন্য। আদিত্য বিড়লা গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ অজিত রানাদে বলেন, বিদেশের বাজারে নজর দিলেই খুলে যেতে পারে কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ। তার মতে, নতুন সরকারের উচিত হবে নির্মাণ, পর্যটন, বস্ত্র ও কৃষি খাতে নজর দেওয়া।

চীনের মতো ভারতের অর্থনীতির একটি বড় চালিকা শক্তি তার নিজের বাজার। তবে সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, গেল কয়েক মাসে এ বাজারের গতি ধীর হয়েছে। গাড়ি, ট্রাক্টর, মোটরসাইকেল বিক্রি কমেছে। কম দেখা যাচ্ছে ব্যাংক ঋণের চাহিদাও। ইউনিলিভারের মতো কোম্পানির প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে। মোদির দল অঙ্গীকার করেছে যে, মানুষের হাতে টাকা যেন বেশি থাকে এবং মধ্য আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে আয়কর কমানো হবে।

কৃষকের সহায়তা ইস্যু : কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জ প্রথম মেয়াদে মোদিকে নিয়মিতই মোকাবিলা করতে হয়েছে। শস্যের দাম চেয়ে দেশজুড়ে কৃষকদের বিক্ষোভ বারবার আলোচনায় এসেছে। ছোট মাপের কৃষকদের আরও সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বাজার কাঠামো।

বেসরকারিকরণ : মোদির নির্বাচনি প্রতিশ্রুতির একটি বড় জায়গা হলো সড়ক, রেল ও অন্য অবকাঠামো নির্মাণ। কিন্তু এসবের জন্য বড় মাপের অর্থ আসবে কোথা থেকে। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এর উৎস হবে বেসরকারিকরণ।

অর্থনীতিবিদ ভাল্লা মনে করেন, দ্বিতীয় মেয়াদে এ বিষয়ে আরও জোর দেওয়ার সুযোগ পাবেন মোদি। ভাল্লা বলেন, প্রথম মেয়াদে শক্ত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার স্বাদ পেয়েছেন মোদি। দ্বিতীয় মেয়াদে তাই তিনি আরও ঝুঁকি নিতে পারবেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]