বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মিডনাইটে ভোট ডাকাতির অন্যতম কারিগর নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে রোববার পুরস্কৃত করেছে মিডনাইট সরকার। তাকে পদায়ন করে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর নির্বাচন কমিশনের সচিব করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর হোসেনকে, যিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনুগত ও বিশ্বস্ত হিসেবে এরই মধ্যে পরিচিতি অর্জন করেছেন। মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী দলদাস’ সরকারি কর্মকর্তা ও ভোটারশূন্য একতরফা নির্বাচনি সংস্কৃতির হোতা নির্বাচন সচিবকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে বদলি করার ফলে দেশের স্থানীয় সরকারগুলোয় আওয়ামীকরণের ষোলোকলা পূর্ণ হবে। এখন স্থানীয় সরকারগুলোয় নির্বাচনের বদলে সিলেকশনের পথ আরও সহজ হবে। তিনি অবিলম্বে মো. আলমগীর হোসেনের মতো আওয়ামী লীগ কর্মীর পরিবর্তে একজন দক্ষ, দলনিরপেক্ষ সরকারি কর্মকর্তাকে ইসি সচিব পদে নিয়োগের আহ্বান জানান।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের লোকজন একদিকে লুটপাট করে অর্থনীতি ফোকলা করে দিচ্ছে; অন্যদিকে অভাবের তাড়নায় হতদরিদ্র মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। সারা দেশে দরিদ্র মানুষের করুণ দশা এখন। আর সরকার বলছে, দেশ নাকি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, অভাবের তাড়নায় যশোরের শার্শা উপজেলার চালিতাবাড়িয়া দীঘা গ্রামে রোববার রাতে দুই শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর এক মা আত্মহত্যা করেছেন। তিন দিন আগে শনিবার অভাবের কাছে হার মেনে নরসিংদীতে দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন এক বাবা। অভাবে জর্জরিত হয়ে এক সপ্তাহে ৯ জনের আত্মহত্যা বা অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
আর পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, সরকারি দলের নেতাকর্মীসহ অন্তত ৬ লাখ লোক বিদেশে যাচ্ছে ঈদ করতে। যেখানে আগে ঈদ করতে মানুষ যেত গ্রামের বাড়িতে। দেশে সম্পদ বণ্টনের এ অসাম্য এবং দুর্নীতি করার অবারিত ব্যবস্থার জন্য দেশে এক লুটেরা গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে। গণবিরোধী সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় এক ভয়াবহ অবস্থা চলছে দেশে।
রিজভী বলেন, প্রতিদিনই কৃষকের মনে অন্ধকার ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে। সরকারি নীতির কারণে ক্ষুধা, হাহাকার, অনাহার ও অর্ধাহারে মানুষের জীবন বিপন্ন ও কৃষককে ধ্বংস করতে কৃষি ক্ষেত্রে এ অরাজকতার জন্য দায়ী কৃষিমন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রীর আমরা এ মুহূর্তে পদত্যাগ দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য প্রফেসর শাহিদা রফিক, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান প্রমুখ।