logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, বুধবার, মে ২৯, ২০১৯
ত্রিদেশীয় সফর শুরু
জাপান মডেলে উন্নয়নের স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রীর
আলোকিত ডেস্ক

কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকে জাপান যেভাবে শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে, তাকে ‘মডেল’ হিসেবে নিয়ে বাংলাদেশকেও উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বিকালে টোকিওর একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বলতেন, জাপানের অর্থনীতি মূলত ছিল কৃষিভিত্তিক। এ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকেই কিন্তু জাপান একটা শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয় এবং একসময় বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী শিল্পোন্নত দেশ হিসেবে জাপান প্রতিষ্ঠা লাভ করে। জাতির পিতা সবসময় বলতেন, আমাদের যেমন কৃষি রাখতে হবে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা দেশকে শিল্পোন্নত করব, ঠিক জাপান যেভাবে করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাপান একটা মডেল আমাদের কাছে। জাপানের উন্নয়নকে মডেল হিসেবেই আমরা মনে করি। জাপান আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। জাপানে আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চমৎকার সম্পর্ক।’ টোকিওর নিউ ওটানি হোটেলে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাপান আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। আমরা সবসময় মনে করি আমাদের পাশে জাপান আছে।’
মহেশখালীর মাতারবাড়ি, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারসহ দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় জাপানি বিনিয়োগের কথা এ সময় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। পাশাপাশি অতীতে বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে জাপানি বিনিয়োগের কথাও তিনি বলেন। প্রতিবার সরকারে আসার পর নিজের জাপান সফরের কথাও অনুষ্ঠানে বলেন বাংলাদেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে আমরা ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। সেখানে বিনিয়োগ হবে, কর্মসংস্থান হবে, উৎপাদন বাড়বে, মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রীর ত্রিদেশীয় সফর শুরু  : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রিদেশীয় সফর শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে জাপানের রাজধানী টোকিওর উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টা) প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তোশিকো আবে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। ১২ দিনের এ সরকারি সফরে জাপান থেকে সৌদি আরব ও পরে ফিনল্যান্ডে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখান থেকে ঈদের পর ৮ জুন তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। 
প্রধানমন্ত্রী টোকিও সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন; তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে আড়াই বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া জাপানি সম্প্রচারমাধ্যম নিকেই-এর আয়োজনে ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা। এ সম্মেলনকে এশিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাপান পৌঁছার পর টোকিওর নিউ ওটানি হোটেলে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৬ সালে ঢাকার হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় হতাহত জাপানিদের পরিবারের সঙ্গে সেখানে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথাও রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।  
আজ দুপুরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের কার্যালয়ে হবে দুই দেশের সরকার প্রধানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পৌঁছলে সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে আড়াই বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ চুক্তি হতে পারে বলে এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন। সন্ধ্যায় জাপানি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নৈশভোজে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার তিনি টোকিওতে ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। এশিয়ার সম্ভাবনা ও উত্থান নিয়ে নিজের ভাবনা এ সম্মেলনে তুলে ধরবেন তিনি। শিনজো আবে ছাড়াও ‘আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি’ হিসেবে পরিচিত মাহাথির মোহাম্মদ, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে অংশ নেবেন এ সম্মেলনে। ৩০ ও ৩১ মে এ সম্মেলনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ এবং শীর্ষস্থানীয় অধ্যাপক, গবেষক ও তাত্ত্বিকরা আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় ও বিশ্বে এশিয়ার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করবেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]