প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, বৃহস্পতিবার, মে ৩০, ২০১৯ | |
আগামী বাজেটে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলেও তাতে করের বোঝা বাড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে ভ্যাট আইন এমনভাবে বাস্তবায়ন করব, যাতে জনগণের ওপর কোনো বোঝা না হয়। ব্যবসায়ীদের ওপর তো নাই।
বুধবার রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সেমিনার হলে ‘বাজেট বিষয়ক রিপোর্টিং প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০১২ সালের ভ্যাট আইন এবার কিছুটা সংশোধন করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৫, ১০, ৭ এবং ৫ শতাংশ হারসহ বেশ কয়েকটি রেইটে আগামী অর্থবছর থেকে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা যাতে সঠিকভাবে ভ্যাট আদায় করতে পারি, সেজন্য ইলেকট্রনিক মেশিন ডিভাইস আনার বিষয়টি প্রকিউরমেন্ট পর্যায়ে রয়েছে। হয়তো জুন মাসের আগে সবাইকে মেশিন দিতে পারবÑ এমন কোনো কথা নেই। তবে, আস্তে ধীরে জুন মাসের জায়গায় হয়তো আরও তিন মাস বা ছয় মাস লাগবে। এগুলো সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করে অটোমেশন সম্পন্ন করা গেলে ভ্যাট আদায় সহজ হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আদায়ের একটি টেকসই প্রবৃদ্ধি থাকা উচিত। যেমন এ বছর যে রাজস্ব আদায় হবে, তা আগামী বছর আরও বাড়বে। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। একইসঙ্গে আমরা করের ওপর গুরুত্ব বেশি দিচ্ছি। অর্থাৎ যারা কর দেওয়ার যোগ্য, তারা কর দেবেন। আমাদের দেশে করের পরিমাণ এখনও বেশি নয়। আমরা এটা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কর আদায় কম হলেও আমাদের ব্যর্থতা বলা যাবে না। কারণ, করের আওতা বাড়ানো দরকার। একই ব্যক্তির কাছে বারবার কর চাওয়া যাবে না।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ব্যবসায়ীরা সব সময় বলেনÑ আমাদের কাছ থেকে বেশি ভ্যাট নিচ্ছে। আসলে ব্যবসায়ীরা তো ভ্যাট দেন না। ভ্যাট জনগণ দেন। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দিস ইজ অল সো পার্ট অব মাই প্রোফিট। তারা সবটা দিতে চান না। মনে করে সবটা দিলে তাদের প্রোফিট কমে যাবে।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে মালামাল আনা-নেওয়ার সময় এনবিআর ট্যাক্সের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করে। তখন ব্যবসায়ীরা বলেন, আমাদের এত বেশি শুল্ক দিয়ে আমাদানি করে লাভ হয় না। তারা ১০ লাখ টাকার শুল্ক কায়দা-কানুন করে ৫ লাখ কিংবা ৩ লাখ টাকা বা কম শুল্ক দিয়ে মালামাল আনতে চান। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, অল্প দিনে ব্যবসা করে আমরা যদি বাড়ি-গাড়ির মালিক হতে না পারি তাহলে কিসের ব্যবসায়ী হলাম? একসময় পাকিস্তান আমলে দেখা যেতÑ একটি সাবানে ১০ পয়সা লাভ করা হতো। এখন ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ করতে চান। গার্মেন্ট ব্যবসা যখন দেশে শুরু হয়, তখন অনেক ব্যবসায়ী একটি গার্মেন্টস শুরু করার এক বছরের মাথায় আরেকটি বড় গার্মেন্ট করেছে। পাকিস্তান আমলে ব্যবসায়ীরা এত লাভ করতেন না।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ১৩ জুন বাজেট পেশ করার পর সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক তথ্য-প্রমাণসহ সুপারিশ করে সমালোচনা করে প্রতিবেদন তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি খাতের বরাদ্দ কম বেশি হয়েছে, অথবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ট্যাক্স ধার্যকরণ, বন্ড নীতির পরিবর্তন, ভ্যাট নীতির পরিবর্তন, কর নীতির পরিবর্তন এসব বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারেন। এসব প্রতিবেদনের আলোকে ৩০ জুন বাজেট পাসের সময় কম বেশি পরিবর্তন করার সুযোগ রয়েছে। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে তিন দিনের কর্মশালার আয়োজন করে। প্রথম দিনের কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন ছিলেন এনবিআর সদস্য কানন কুমার রায়, প্রথম আলোর স্পেশাল নিউজ এডিটর শওকত হোসেন মাসুম, দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের যুগ্ম সম্পাদক শামসুল হক বসুনিয়া। পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ইআরএফ সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল, সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |