পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্যই সবার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। উৎসব আনন্দেও তাই তারা তালিকায় সবার ওপর। কেনাকাটার বেলায়ও তাদের অগ্রাধিকার বেশি।

এবারের ঈদেও বাবা-মা তাদেরও পচ্ছন্দের শ্রেষ্ঠটিই শিশুর হাতে তুলে দিচ্ছেন। বরাবরের মতো এবারও শিশুদের বাহারি পোশাকের মধ্যে রয়েছে টিস্যু গাউন, গারারা, পশ্চিমা পোশাক, মোদি সেট, বাবা সেট, রাজ থ্রি, বাহুবলী-২, বাজিরাও মাস্তানি, লেহেঙ্গা, স্টাইল টপস, পার্টি ফ্রক, গ্রাউন্ড থ্রি পিস, লং ফ্রক, ঘাগরা চোলি, কামিজ, টিউনিক ক্যাপ, ডিভাইডার, পাঞ্জাবি পায়জামা কটি, শার্ট প্যান্ট, কোরতা, ফতুয়া, গেঞ্জি ও ডিজে সেটে বাজার ভরে গেছে। এ পোশাকগুলো নবজাতক থেকে ১৬ বছর বয়সিদের জন্য। বাজারভেদে শিশুর পোশাক ডিজাইন ও দামে পার্থক্য রয়েছে। মোহম্মদপুরের সুপার মার্কেটে যে ফ্রকের দাম ৪৫০ টাকা। বসুন্ধরা শপিং মলে তা ১ হাজার টাকা। মোহম্মদপুরের টাউন হল মার্কেটে শিশুর ফ্রক ও গেঞ্জিস্যুট ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। এখানকার বিলাস ফ্যাশনে বেবি ফ্রক নামের পোশাকটি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯৫০ টাকায়। স্কার্ট ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা।

গেল ২৬ মে বসুন্ধরা শপিং মলে দেখা গেল, দোকানে দোকানে শিশুদের ভিড় লেগেই রয়েছে। বসুন্ধরা শপিং মলের নিচের তলার কিডস ওয়ার্ল্ডে ভারতীয় পোশাক টিস্যু গাউন কিনছেন মায়েরা। এছাড়া কাতানের পোশাক যার ঝুল ছোট কামিজ, সালোয়ারের হাঁটুর কাছে কাজ, ভারি ওড়নাÑ এ পোশাক দারুণ ভালো লেগেছে ৫ বছরের তাসনুভার।  সে জেদ ধরেছে এটাই তার লাগবে। পোশাকের দাম ৮ হাজার টাকা। ডিজে সেটের প্রতিও শিশুদের নজর চড়া। কারণ এ পোশাকের প্যান্ট-শার্টেও পকেটে লাইট ও মিউজিক রয়েছে। ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দামের এ পোশাক ছেলে মেয়ে উভয়ের ভারি পচ্ছন্দের। বড়দের পোশাক ফ্লোর টাচ গাউন এখন শিশুরও পড়নে। এ দোকানের স্বত্বাধিকারী মো. খোকন বললেন, বাজার জমে গেছে তার প্রমাণ শিশুরাও মার্কেটে এসে গেছে। ছোট-বড় সবার পোশাকই বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। বসুন্ধরার বেবিস গ্যলারিতে রয়েছে চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতীয় পোশাক। এখানে ফ্লোর টাচ, দাম ৩ থেকে ৭ হাজার টাকা, লং ফ্রক ২ থেকে ৫ হাজার টাকা, ডিভাইডার ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮৫০ টাকা, পার্টি ফ্রক ২ হাজার ৫০ থেকে ৪ হাজার টাকা। টি-শার্ট ৮৫০ টাকা। এখানেই এসেছেন সিদ্ধেশ্বরীর গৃহবধূ সিনথিয়া ও তার বোন। তারা জানালেন, শিশুদের পোশাকের দাম এবার বেশি। সিনথিয়া তার ৫ বছরের মেয়ের জন্য একটি লং ফ্রক কিনলেন দাম ৫ হাজার টাকা। এখানকার বিক্রয় কর্মী মো. তাজুল ইসলাম জানালেন, যত রাত বাড়ে ততই কেনাকাটা বাড়ে। দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো এবার ছেলে শিশুদের পোশাকের ডিজাইনে প্রকৃতিকে তুলে ধরেছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে পাখির ছবি সংবলিত পোশাক। ফতুয়া ও পাঞ্জাবিতেও রয়েছে রকমারি ছাপ। সুতি, খাদি, অ্যান্ডি কটন, সিল্ক, মসলিনের পাঞ্জাবি এবার শিশুর জন্য বাড়তি চমক। জার্ডানা ক্লাবে পাঞ্জাবি সেট ৩ হাজার টাকা, টি-শার্ট ১ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নীলক্ষেতের টপ টেনে সাদা রঙের সিনথেটিক ফ্রকের কাটতি ভালো। ভারতের নির্বাচনের পর মোদি সেটের বিক্রি বেড়েছে বলে জানান রাপা প্লাজার রঙ্গের মেলার বিক্রয় কর্মী। এখানে মোদি সেট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। উজ্জ্বল রঙের পোশাক সহজেই শিশুর পচ্ছন্দ হবে। মৌচাকের সুগন্ধায় লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৭ হাজার টাকা। মালিবাগের রশীদ আলী জানান, ঈদেও পর বোনের বিয়ে বড়দের সঙ্গে ছোটরাও লেহেঙ্গা পড়বে। তাই মেয়ে ও ভাইয়ের মেয়ের জন্য লেহেঙ্গা কিনলেন তিনি।