logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শুক্রবার, জানুয়ারী ১৭, ২০২০
মোবাইল ব্যাংকিং
এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ১২ লাখ
নিজস্ব প্রতিবেদক

 নিবন্ধিত গ্রাহক ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার
 সক্রিয় ৩ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার
এজেন্ট সংখ্যা ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭১
দিনে গড় লেনদেন ১২৬৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা 

দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিং। প্রতিদিনই বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের নভেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার, যা তার আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৯৫ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ১২ লাখ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে বিকাশ-রকেটসহ বাকি সব প্রতিষ্ঠানের লেনদেন বেড়েছে। লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা, কার্যকর ব্যবহারকারী, লেনেদেনের সংখ্যা ও পরিমাণ বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স আসা অথবা যে কোনো বিল প্রদান বা কেনাকাটা প্রায় সবকিছুই বেড়েছে। 
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসময়ে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার। যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল ২ কোটি ৯০ লাখ ১১ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে সক্রিয় গ্রাহক বেড়েছে ২১ শতাংশ বেশি। টানা তিন মাস একবারও লেনদেন করেনি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করে থাকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। 
এমএফএসে গেল নভেম্বরে লেনদেন হয়েছে ৩৭ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ২৬৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আর এ সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭১। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয় মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন ও নিকটাত্মীয়ের কাছে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে। শুধু তা-ই নয়, বেতন-ভাতা ও ইউটিলিটি বিল পরিশোধেও এ সেবার ব্যবহার বাড়ছে। কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন পছন্দের মাধ্যম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। একই সময়ে উত্তোলন করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৯ হাজার ৯৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ৮৭০ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৬৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সরকারি পরিশোধ ২৯৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এছাড়া অন্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৬২১ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করেন, মোবাইলের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বা দ্রুত শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। দিন দিন বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে। ফলে মোবাইল ব্যাংকিং দেশের ব্যাংকিং সেবায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে।
লেনদেনের এ হিসাবটা বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ১৬ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানের। এর বাইরে ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’র মাধ্যমেও বড় অঙ্কের অর্থ স্থানান্তর হয়েছে। যদিও ওই হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে যুক্ত হয় না। ‘নগদ’র লেনদেনের সীমা সাধারণ এমএফএস থেকে অনেক বেশি। তাই ওই অঙ্ক যুক্ত হলে লেনদেনের পরিমাণ আরও অনেক বড় হতো বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব থেকে একজন গ্রাহক দৈনিক পাঁচবারে ৩০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন এবং পাঁচবারে ২৫ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করতে পারেন। আগে যা দুইবারে ১৫ ও ১০ হাজার টাকা করা যেত। মূলত ডাক বিভাগের নগদ-এর সঙ্গে লেনদেনে সামঞ্জস্য আনতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী শুধু মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ মাধ্যমে লেনদেন করবে। তবে বেশিরভাগ এজেন্ট এ নিয়ম না মেনে নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা পাঠায়। বিশেষ করে সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও হুন্ডি তৎপরতায় ব্যবহার করা হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংকে। পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতিসহ অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এরপর এ ক্ষেত্রে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে কয়েক লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন এজেন্ট। বাতিল করা হয় অনেকের এজেন্টশিপ। এছাড়া অপব্যবহার ঠেকাতে লেনদেনের ক্ষেত্রেও নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। 
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]