প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শুক্রবার, জানুয়ারী ১৭, ২০২০ | |
রাজধানীসহ সারা দেশে জেঁকে বসেছে হাড়-কাঁপানো শীত। সাধারণত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধীরে ধীরে শীতের প্রবাহ বাড়তে দেখা যায়; কিন্তু এবার ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রচণ্ড শীত ও ঠান্ডা শৈত্যপ্রবাহের কারণে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শরীরের বিশেষ অঙ্গ চামড়া যখন শীতে স্পর্শ কাতর; তাই শীতে চাই ত্বকের বিশেষ যত্ন। অনেক সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেরা শীতকালে এক বিছানায় চাপাচাপি করে ঘুমানো এবং অপরিষ্কার পোশাক পরিধান করা ও শীতে নিয়মিত গোসল না করার জন্য চর্মরোগে সংক্রমিত হয়ে পড়েন। আবার স্কুলপড়ুয়া শিশুরাও এ সময় বিভিন্ন চর্মরোগ বা স্কেবিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং শরীরে অসম্ভব রকম চুলকানি হতে দেখা যায় এবং রাতের বেলা চুলকানির তীব্রতা আরও বাড়ে। এ সময়ে ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণের কারণেও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। ছত্রাক মূলত গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালীন চর্মরোগ। কিন্তু বৈশ্বিক আবহাওয়ার ফলে ছত্রাকজনিত রোগ এখন শীতকালেও দেখা যাচ্ছে।
আমরা যারা চর্মরোগের চিকিৎসা করি প্রায়ই সবাই খেয়াল করি শীতকালে সাধারণত চর্মরোগের হার বেশি। শীতকালে মানুষ মোটা কাপড় পরিধান করে, যা অনেক সময় অপরিষ্কার-অপরিছন্ন থাকে। ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে থাকে ও নিজেও অপরিচ্ছন্ন থাকে এবং যারা নিয়মিত গোসল করেন না তাদের ক্ষেত্রে ত্বকের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এ সময়ের কয়েকটি সাধারণ চর্মরোগ হচ্ছেÑ খোসপাঁচড়া, খুজলি ও দাদ। খোসপাঁচড়া, খুজলি ও দাদ হলে আক্রান্ত স্থানে সবসময় চুলকানির ভাব অনুভূতি হয়, না চুলকিয়ে থাকা যায় না, চুলকাতে চুলকাতে চামড়া উঠে যায়, ফুসকুড়িগুলোয় পুঁজ/পানি জমে, আবার চুলকালে পুঁজ ছড়িয়ে পড়ে ও চুলকানি অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়, ব্যথায় শরীরে জ্বর আসে।
এসব রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে
অপরিষ্কার কাপড় পরিধান ত্যাগ করতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড়-চোপড় ব্যবহার করলে খোসপাঁচড়া হবে না। নিয়মিত গোসল করতে হবে। গোসলের সময় পানি গরম করে নিতে হবে। গরম পানিতে নিমপাতা ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলেও উপকার পাওয়া যাবে। এক সপ্তাহের বেশি দিন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। খোসপাঁচড়া, দাদ ও খুজলি জাতীয় চর্মরোগ সাধারণত অপরিষ্কার থাকার কারণে বা ভিটামিন সি ও এ এর অভাবে হয়ে থাকে। ছেলেদের স্বপ্নদোষ হলে সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে পরিষ্কার করা উচিত অথবা প্যান্টের জাঙ্গিয়ার নিচে ঘেমে গেলে তা সবসময় পানি দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। এ রোগ হলে অবশ্যই ভিটামিন সি ও এ জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। যেমন কমলা বা কমলার তৈরি জুস ইত্যাদি বেশি খেতে হবে। আরও কিছু সাধারণ শীতকালীন রোগ হলো মাথায় খুশকির পরিমাণ বেড়ে যায়, চামড়ার কিছু কিছু ক্ষত সহজে শুকাতে চায় না। শিশুদের অ্যাকজিমা মারাত্মকরূপ ধারণ করে। অনেকের ঠোঁট ফেটে যায়, পা ফেটে যায় আবার অনেকের জিহ্বাও ফেটে যায়। এছাড়া অনেকের ড্রাই কন্ডিশন রোগের জন্য পায়ে মাছের আশের মতো ফাটা ফাটা দেখা যায়। তাই শীতকালে এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে ত্বকের একটু বাড়তি যত্ন চাই এবং এ সময় নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখবেন, একটু অসাবধানতা শীতকালে আপনার শরীরের চামড়া যে কোনো বড় যন্ত্রণার সৃষ্টি করতে পারে।
ডা. মাসুদা খাতুন
সহযোগী অধ্যাপক চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার : ইবনে সিনা ডি ল্যাব অ্যান্ড কনসালস্টেশন সেন্টার
সাত মসজিদ রোড, ধানমন্ডি. ঢাকা
সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |