প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শুক্রবার, জানুয়ারী ১৭, ২০২০ | |
তামাক এমন একটি পণ্য সুস্বাস্থ্যের বিবেচনায় এটি গ্রহণ করার পক্ষে একটি যুক্তিও পাওয়া যাবে না। তবুও সমাজে তামাকজাত দ্রব্যের প্রতি রয়েছে মোহ, আর মোহ সৃষ্টির পেছনে রয়েছে কোম্পানিগুলোর ব্যাপক প্রচারণা ও মনকাড়া বিজ্ঞাপন। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এতে সহজেই প্রলুব্ধ হয়ে বিপজ্জনক ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ায়। এ অবস্থা রোধে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনসহ তামাকবিরোধী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় ও প্রচার বন্ধে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল নাগরিক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটিকে একটি মাইলফলক অর্জন বলতে হবে। আর এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার কৃতিত্ব মূলত ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের। সংস্থাটি কর্তৃক শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় নোটিশটি জারি করে। নোটিশে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে বা ভেতরে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার, বিক্রয়, প্রদর্শন, বিজ্ঞাপন ও প্রচার-প্রচারণা বন্ধে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নোটিশটি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের চিঠি বিবেচনায় নিয়ে এই ধরনের কল্যাণব্রতী নোটিশ জারি করায় আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অভিনন্দিত করছি।
উল্লেখ্য, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন মাদক ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার রোধে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে মিশন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সহযোগিতায় বাংলাদেশে শিশুদের তামাকজাত দ্রব্যের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে তামাক কোম্পানি যেসব কৌশল অবলম্বন করছে, তার ওপর ‘বিগ টোব্যাকো টাইনি টার্গেট’ শীর্ষক একটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপে দেখা যায়, ৯০ দশমিক ৫ শতাংশ বিদ্যালয় ও খেলার মাঠের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্র (পয়েন্ট অব সেল); ৮১ দশমিক ৭ শতাংশ দোকানে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন হয় শিশুদের দৃষ্টি সীমানায় (১ মিটারের মধ্যে); ৬৪ দশমিক ১৯ শতাংশ দোকানে ক্যান্ডি, চকোলেট এবং খেলনার পাশে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করতে দেখা যায় এবং ৮২ দশমিক ১৭ দোকানে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়। আর বলাই বাহুল্য, দীর্ঘস্থায়ী ভোক্তা সৃষ্টির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশেই তামাক কোম্পানিগুলো শিক্ষার্থীদের টার্গেটে পরিণত করছে।
এটি স্পষ্ট, এ নোটিশ আগামী প্রজন্মকে তামাক ব্যবহার থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে, তামাক কোম্পানির কূটকৌশল প্রতিহত হবে। তবে এটাও বাস্তবতা, তামাক প্রতিষ্ঠানগুলোও থেমে থাকবে না, তারা বিকল্প পন্থা উদ্ভাবনের মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে যথারীতি তৎপরতা অব্যাহত রাখবে। এক্ষেত্রে জরুরি হলো তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন। তামাক কোম্পানিগুলোর আইনবহির্ভূত অবৈধ বিজ্ঞাপন, পুরস্কার-প্রণোদনা ও পণ্য প্রদর্শনে নজরদারি ও তদারকি নিশ্চিত করা। তামাক জাতীয় পণ্যের কুফল নিয়ে শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি গণমাধ্যমকে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে। সবার সমন্বিত কর্মপন্থায় তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠবেÑ এটাই হোক ব্রত। হ
সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |