সীমান্তে হত্যা বন্ধে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং সরকার কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। রোববার সংসদে প্রশ্নোত্তরে মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের (মেহেরপুর-২) এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীণ শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক 
বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং সরকার এ ব্যাপারে কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ২৫-৩০ ডিসেম্বর ভারতে অনুষ্ঠিত বিজিবি বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনে সীমান্ত হত্যাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে বিএসএফ একমত পোষণ করে। মন্ত্রী জানান, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ ও চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকা নজরদারিতে রাখার জন্য বিজিবি ইউনিটগুলো সার্বক্ষণিক টহল পরিচালনা করছে। মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিককালে সীমান্ত এলাকার জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধিকল্পে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যা সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক। 
২৬ হাজার ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে কর্মরত : বিএনপির হারুনুর রশীদের (চাপাইনবাগঞ্জ-৩) এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এনজিওতে সর্বমোট ২৬ হাজার ২৪০জন ভারতীয় কর্মরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
নারী ও শিশু ধর্ষণ প্রতিরোধে বর্তমান সরকার সবচেয়ে সফল : মো. নাছিমুল আলমের (কুমিল্লা-৮) এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,  বর্তমান সরকার জনগণের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে এবং নির্মম ও হ্নদয়কে ব্যথিত করে তোলে এমন অপরাধ যেমন নারী ও শিশু ধর্ষণ প্রতিরোধে বর্তমান সরকার সবচেয়ে সফল। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে র‌্যাবের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে সামাজিক অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পেয়েছে এবং জনগণের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধিত হয়েছে ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারা বৃদ্ধি পেয়েছে। 
পুলিশ আইন যুযোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে : মো. মোজাফ্ফর হোসেনের (জামালপুর-৫) এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ব্রিটিশ আমলে প্রণীত পুলিশ অ্যাক্ট, ১৮৬১ বাংলা ভাষায় রূপান্তরসহ বর্তমান অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যুগোপযোগী হিসেবে প্রণয়নের পরিকল্পনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তিা বিভাগ গ্রহণ করেছে। ইংরেজি ভাষায় প্রণীত পুলিশ অ্যাক্ট, ১৮৬১ বাংলা ভাষায় রূপান্তর করে সবার কাছে সহজবোধ্য হিসেবে তুলে ধরা এবং সুশাসন নিশ্চিতকরণসহ বাংলাদেশ পুলিশকে জনসেবায় অধিকতর মনোযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 
দুই দেশের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে : মোরশেদ আলমের (নোয়াখালী-২) এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান জানান, বর্তমানে দেশের দুইটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। দেশ দুইটির নাম- ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। 
পুলিশের ৮২ হাজার পদ সৃষ্টি : দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪) এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি পরিকল্পনায় রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৮২ হাজার ১৮৭টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। ১৮টি ইউনিট, ৬০টি থানা, ২১৪টি তদন্ত কেন্দ্র ও ১টি ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় আরও নতুন পদ সৃষ্টির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।