logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, রবিবার, ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২০
‘সুকুক’ বাজার উন্নয়নে করণীয়
কেন্দ্রীয় ব্যাংক, নাইজেরিয়া
মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ খন্দকার

 

বিশেষভাবে ভূ-সম্পত্তি, ফ্ল্যাট, স্থাপনা ইত্যাদি কেনাবেচার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত আইন-কানুন ইসলামি সুকুক বাজার সম্প্রসারণের উপযোগী করা দরকার। কেননা বিদ্যমান আইনে, এগুলো রেজিস্ট্রেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে যেতে হয়। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে রেজিস্ট্রেশন না হলে তা বৈধ হয় না। এ ছাড়াও রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ বড় অঙ্কের অর্থ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সুকুক থেকে অর্জিত লাভের পুরোটাই ব্যয় হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কাজেই সুকুক বাজার সম্প্রসারণে এসব আইনগত বাধা দূর করতে হবে। এসব বাধা দূর করা হলে সম্পদভিত্তিক ইসলামি সুকুক দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিল্প সম্প্রসারণে একটি নতুন হাতিয়ারে পরিণত হতে পারে

বিশ্বব্যাপী ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’-এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইসলামি আর্থিক সম্পদের আকার প্রায় দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার ৭৩ শতাংশ জুড়েই রয়েছে ব্যাংকিং সম্পদ। এর মধ্যে ১৭ শতাংশ সুকুক বা ইসলামি বন্ড। বর্তমানে সুকুকের বৈশ্বিক আকার দাঁড়িয়েছে ৩২১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টিং ফার্ম ‘আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং’-এর পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৫ বছরে এর চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ৯০০ বিলিয়ন ডলার। 
সুকুকের ইতিহাস পুরোনো। ঈসায়ি সাত শতকে সিরিয়ার দামেস্ক নগরীতে সুকুকের প্রথম প্রচলন হয়। সুকুক আরবি ‘সকক’ শব্দের বহুবচন। আরবি অভিধানে ‘কোনো দলিলে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব অর্পণ করার ক্ষেত্রে’ শব্দটির ব্যবহার রয়েছে। আবার লিখিত কাগজপত্র, অর্থনৈতিক চুক্তিপত্র, সম্পদের সনদ, ডকুমেন্ট ইত্যাদি বুঝাতেও শব্দটির ব্যবহার দেখা যায়। সমমূল্যের কোনো সার্টিফিকেট যা কোনো সম্পদ ও সেবার মালিকানায় অথবা নির্দিষ্ট প্রকল্পের সম্পদে বা বিশেষ বিনিয়োগের অবিভাজ্য শেয়ারের প্রতিনিধিত্ব করে। সুকুক কেনার মাধ্যমে ভূমি, ভবন, কারখানা বা অন্য কোনো সম্পদের আংশিক মালিকানা এবং ওই সম্পদ থেকে অর্জিত মুনাফার অংশ লাভ করা যায়। 
সুকুক বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন, মুদারাবা (মুনাফায় অংশীদারি) সুকুক, মুশারাকা (লাভ-লোকসান ভাগাভাগি) সুকুক, মুরাবাহা (লাভে বিক্রি) সুকুক, ইস্তিসনা (পণ্য তৈরি) সুকুক, সালাম (অগ্রিম ক্রয়) সুকুক, ইজারা (ভাড়া) সুকুক, কর্জে হাসান (উত্তম ঋণ) সকুক ইত্যাদি। আবার ইস্তিসনা, মুরাবাহা ও ইজারার সমন্বয়ে হাইব্রিড ধরনের কিছু সুকুকের ব্যবহারও লক্ষ্য করা যায়। 
প্রতিষ্ঠানের তারল্য বাড়ানো, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিল্প সম্প্রসারণ বা কোনো বৃহৎ প্রকল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে মুশারাকা, মুদারাবা, ইস্তিসনা, সালাম ও ইজারা সুকুকের ব্যবহার বেশি। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে ইজারা সুকুকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এটি পূর্বনির্ধারিত হারে লাভ প্রদানকারী সার্টিফিকেটের বড় উদাহরণ। ইজারা সুকুক কোনো সম্পদ কিংবা সেবার মালিকানায় ঘোষিত অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। এ সুকুক ভাড়ায় দেওয়া সম্পদের মালিকানার সার্টিফিকেট হিসেবে বিবেচিত। 
ইজারা বা লিজ থেকে প্রাপ্ত ভাড়া সুকুকধারীদের মধ্যে মালিকানার অনুপাতে বণ্টিত হয়। এ ক্ষেত্রে ইজারা দেওয়া সম্পত্তির বন্ডদাতাকে কোনো একটি করপোরেট সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তা নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সুকুকের বিনিময়ে কোনো একটি বিমানসংস্থা ইজারার মাধ্যমে একটি বিমান সংগ্রহ করতে পারে। ধরি, এ ক্ষেত্রে ১০ হাজার ব্যক্তি সুকুক কিনতে চায়। এসব ব্যক্তি আলাদাভাবে নিজ নিজ প্রান্তিকের ভাড়া বিমান সংস্থার কাছ থেকে বুঝে নিতে পারে। এদের একজনের সঙ্গে অপরজনের যোগাযোগের প্রয়োজন নেই। কাজেই ইস্যু ও বাজারজাত করার ক্ষেত্রে ইজারা সুকুক বেশি সহজ। স্থিতিশীল ও স্থায়ী আয়ের একটি উত্তম মাধ্যম হিসেবে ইজারা সুকুক বেশ জনপ্রিয়। 
প্রচলিত বন্ড ও ইসলামী সুকুকের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বন্ড হলো ঋণদাতা ও গ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত এমন একটি চুক্তি যাতে ঋণের পরিমাণ, সুদের হার ও পরিশোধের সময় উল্লেখ থাকে। প্রচলিত বন্ডে সুদ, জুয়া, ফটকা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকায় তা শরিয়াহসম্মত নয়। অন্যদিকে সুকুক হলো সম্পদের ওপর মালিকানা প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদানকারী বিনিয়োগ সার্টিফিকেট। সুকুক কেবল নগদ অর্থের প্রবাহ নয় বরং এর ক্রেতারা সম্পদে মালিকানা লাভ করে। সুকুক ইস্যুর প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে, সরকার, অর্থ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, করপোরেট সংস্থা বা ব্যাংক, যারা সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে চায়, তাদের স্থিতিপত্রে সম্পদের অস্তিত্ব থাকবে কিংবা কোনো সম্পদ অর্জনের লক্ষ্য থাকতে হবে।
সাধারণত অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের মতো দীর্ঘ মেয়াদি অর্থ-সংস্থানের উৎস হিসেবে সুকুক ইস্যু করা হয়। যেমন, ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি পাওয়ার প্লান্ট গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলো। প্রকল্প মালিক কিংবা কোনো সংস্থা এ প্রকল্পে অর্থসংস্থানের জন্য সমপরিমাণ অর্থের সুকুক ইস্যু করতে পারে। বিনিয়োগে আগ্রহী যে কোনো ব্যক্তি এ প্রকল্পের সুকুক কিনে প্রকল্পের ঘোষিত অংশ বা অংশবিশেষের মালিক হতে পারেন। প্রকল্পটি আয় বা মুনাফাযোগ্য হওয়ার পর সুকুকহোল্ডাররা তাদের মালিকানার আনুপাতিক হারে মুনাফা অর্জনের অধিকারী হবেন। 
বিশ্বের বহু দেশে ইসলামি সুকুক চালু রয়েছে। মালয়েশিয়া বিশ্বের মোট সুকুকের ৬৭ শতাংশের ইস্যুকারী হিসেবে নেতৃত্বের স্থানে রয়েছে। দেশটির একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ১৯৯০ সালে প্রথম স্থানীয় মুদ্রায় ১২৫ মিলিয়ন মূল্যের ইজারা সুকুক ইস্যু করে। এরপর দেশটিতে ২০০২ সালে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বৈশ্বিক সুকুক বাজারে ছাড়া হয়। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকায় মালয়েশিয়ায় সুকুকের বাজার ক্রমে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে বাহরাইন প্রথম সুকুক চালু করে। ২০০১ সালে দেশটির সরকার বাহরাইন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে ইজারাভিত্তিক সুকুক বাজারে ছাড়ে। ২০০৩ সালে কাতার ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সুকুক এবং ২০০৪ সালে বাহরাইন মনিটারি এজেন্সি ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সুকুক ছাড়ে। একই বছরে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ‘সুকুক আল-ইস্তিসনা’ নামে বিশ্ববাজারে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের একটি নতুন হাইব্রিড সুকুক এবং দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে দুবাই ইসলামী ব্যাংক ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ইজারা সুকুক বাজারে ছাড়ে। ২০০৫ সালে ইন্দোনেশীয় সরকার ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ওভারসিস বন্ড বিক্রির পরিকল্পনা গ্রহণ করে, এর একটি অংশ ইসলামি পদ্ধতিতে সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। একই বছর এবিসি ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ও আবুধাবি বাণিজ্যিক ব্যাংক একত্রে জাহাজে অর্থায়নের ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ‘আল-সাফিনা ইজারা’ সুকুক বাজারে ছাড়ে। 
সুকুক ইস্যুকারীর তালিকায় রয়েছে বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (ওঋঈ), ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (ওউই), বাহরাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সুদান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও কাতার সরকার। এ ছাড়াও করপোরেট সুকুক ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আছে আমিরাত এয়ারলাইন, কুম্পুলান গুথরিক অব মালয়েশিয়া (Kumpulan Guthric of Malaysia) ইসলামী ব্যাংক আবুধাবি ও কাতার ইসলামী ব্যাংক। 
বর্তমানে মুসলিম দেশগুলোর পাশাপাশি অমুসলিম দেশেও সকুকু বেশ সাফল্য ও গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। ২০০৬ সালে আমেরিকার ইস্ট ক্যামেরন পার্টনার্স প্রায় ১৬৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের মুশারাকা সুকুক এবং ২০০৯ সালে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের জেনারেল ইলেকট্রিক ক্যাপিটাল সুকুক লিমিটেড ইজারা সুকুক চালু করে। ২০০৯ সালে সিঙ্গাপুর প্রথম সার্বভৌম সুকুক চালু করে। ২০১১ সালে রাশিয়া ইসলামিক বন্ড সুকুক বাজারে ছাড়ে। রুশ প্রজাতন্ত্র তাতারস্তানের রাজধানী কাজানে ওই বন্ড ছাড়া হয়। ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো সুকুক চালু করা হয়। এ সময় ব্রিটেনকে ইসলামিক অর্থনীতির কেন্দ্র ও সর্বজনীন গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। একই বছর হংকং-এ ‘ইজারা সুকুক’ চালু করা হয়। ইউরোপের অনেক দেশে ইসলামি সুকুক ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পুরোনো দেশগুলোর পাশাপাশি কেনিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো অনেক দেশই প্রথমবারের মতো সুকুক ইস্যু করতে যাচ্ছে। 
বাংলাদেশের জিডিপিতে বন্ডের অবদান মাত্র ১২ শতাংশ। অথচ পাশের দেশ শ্রীলঙ্কা, ভারত ও পাকিস্তানের জিডিপিতে বন্ডের অবদান যথাক্রমে ৫৫, ৩৫ ও ৩১ শতাংশ। দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিভিন্ন মেয়াদি প্রায় ২২১টি সরকারি ট্রেজারি বন্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। এসব বন্ডের আকার ডিএসইর বাজার মূলধনের প্রায় ১৬ শতাংশ। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাক্সিক্ষত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বন্ড বাজারকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে বড় বড় সেতু, মেট্রো রেল ও রেললাইন সম্প্রসারণসহ বহু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব। 
বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং চৌত্রিশ বছরে পা দিলেও এখনও টেকসই সুকুক ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। বিগত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে আমানত ও বিনিয়োগ বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হলেও সুকুকের প্রবৃদ্ধি খুবই কম। মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইসলামিক ইনস্ট্রুমেন্টের অভাব রয়েছে। 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ইসলামী ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনায় সীমিত আকারে সুকুক প্রোগ্রাম থাকলেও তা স্বল্পমেয়াদি। ২০০৪ সালে চালু হয় ‘বাংলাদেশ সরকার ইসলামী বিনিয়োগ বন্ড (বিজিআইআইবি)’। ইসলামী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ বন্ড কেনার সুযোগ পায়। ইসলামী ব্যাংকগুলো এতে বিনিয়োগ করলে তা তাদের বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণের আবশ্যকতা (ঝখজ) পূরণযোগ্য সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। ২০০৭ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড তার টায়ার-১ ক্যাপিটাল পূরণের লক্ষ্যে ৩০০ কোটি টাকার মুদারাবা পারপিচুয়াল বন্ড চালু করে। এরপর আরও কিছু প্রতিষ্ঠান সুকুক চালুর উদ্যোগ করে। 
বাংলাদেশে এখনো শক্তিশালী সুকুকব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এর কারণ হিসেবে মালয়েশিয়াভিত্তিক ইসলামিক ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বোর্ডের (আইএফএসবি) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের প্রসার ঘটলেও শরিয়াহসম্মত হাতিয়ারের অভাবে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। 
গেল চার বছরে বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম বেড়ে দ্বিগুণ হলেও টেকসই সুকুকব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। কাজেই দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের জোগানের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিল্পের সম্প্রসারণে শক্তিশালী সুকুকব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কার্যকর উদ্যোগ। এ ক্ষেত্রে মুদ্রানীতি ও রেগুলেটরি সমর্থনে সুকুক-মার্কেটকে দেশ ও দেশের বাইরে এবং প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য সুগম করতে হবে। পাশাপাশি বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগ প্রোডাক্ট বহুমুখী করা দরকার। 
বিশেষভাবে ভূ-সম্পত্তি, ফ্লাট, স্থাপনা ইত্যাদি কেনাবেচার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত আইন-কানুন ইসলামি সুকুক বাজার সম্প্রসারণের উপযোগী করা দরকার। কেননা বিদ্যমান আইনে, এগুলো রেজিস্ট্রেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে যেতে হয়। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে রেজিস্ট্রেশন না হলে তা বৈধ হয় না। এ ছাড়াও রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ বড় অঙ্কের অর্থ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সুকুক থেকে অর্জিত লাভের পুরোটাই ব্যয় হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কাজেই সুকুকবাজার সম্প্রসারণে এসব আইনগত বাধা দূর করতে হবে। এসব বাধা দূর করা হলে সম্পদভিত্তিক ইসলামি সুকুক দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিল্প সম্প্রসারণে একটি নতুন হাতিয়ারে পরিণত হতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]