logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২০
বিকল্প বাজারের খোঁজে সরকার
চীনে করোনা ভাইরাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

 

চীনে করোনা ভাইরাস সমস্যাটি দীর্ঘমেয়াদি হলে এর প্রভাব দেশের বাজারেও পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিকল্প বাজারে নজর রেখেছে সরকার। সোমবার বাংলাদেশে সফররত কানাডার সাচকাচোয়ান প্রদেশের কৃষিমন্ত্রী এইচইমি ডেভিড মারিটের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশ কানাডা বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয়ে মতবিনিময় শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ কথা জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে যখন বাজারে দেশি পেঁয়াজের ফ্লো আরও বাড়বে তখন পেঁয়াজের দাম কমবে। আদা-রসুনের মতো অন্য মশলা জাতীয় পণ্যগুলো, যা চীন থেকে আসে সেগুলোর জন্য অন্য বাজার খোঁজার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের, তবে এখনও সে সময় আসেনি। এখন চীনের পরিস্থিতি লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। বর্তমানে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হয়, এতে করে চায়না থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেলেও সমস্যা হবে না। তবে আদা-রসুনসহ অন্য পণ্যগুলোর বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়নার বিকল্প বাজারে নজর রাখছে সরকার।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কতটুকু প্রভাব পড়েছে সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। সে প্রতিবেদন এখনও তারা দিতে পারেননি। প্রতিবেদন পেলেই সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চায়না থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে না পারলে সমস্যা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পেঁয়াজ আসছে মিয়ানমার, তুরস্ক, মিশর, পাকিস্তান থেকে। চায়নার জন্য পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব পড়বে না। তবে অন্য মশলাগুলোর সমস্যা হবে কি না সেটি দেখছি। তবে সমস্যা হলে অন্য মার্কেটে আমাদের যেতে হবে। আমরা লক্ষ্য রাখছি কি সমস্যা হতে পারে।
বাজারে রসুনের দাম বেড়ে গেছে, এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা খুব সিরিয়াস এ ব্যাপারে লক্ষ্য রাখছি। আজকে আমি কথা বলব এ বিষয়ে। এ ধরনের সুযোগগুলো অসাধু ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে শক্ত অবস্থানে যেতে চাই। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। চায়না থেকে পণ্য না এলে সেটি নিয়ে আমরা বসতে চাই। রসুন, আদা, কাপড় নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেই জানতে চাইব। পেঁয়াজের যেহেতু তেমন আমদানি নেই তাই সেটি নিয়ে ভাবছি না।
টিপু মুনশি বলেন, দেশি পেঁয়াজ এখনও পুরোপুরিভাবে আসেনি। পুরোপুরিভাবে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আসা শুরু করবে। সে সময় পেঁয়াজের দাম কমবে। মার্কেটে পেঁয়াজের দাম কমেছে। তবে একেবারেই দাম কম হওয়া ঠিক হবে না। খেয়াল রাখতে হবে যেন কৃষক দাম পান। কি দামে কৃষক খুশি হন সেটি দেখতে হবে।
করোনার জন্য বাণিজ্য খাতের সমস্যা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনই বলার সময় হয়নি কি পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে। অনেক আইটেম চীন থেকে আসে। 
রেডিমেট গার্মেন্টসের ফেব্রিক্স যেটা চায়না থেকে আসে, তবে সমস্যা মূলত বেশি একটি প্রদেশে। তবুও আমরা সেদিকে নজর রাখছি। কারণ সেখান থেকে পণ্য আনতে সমস্যা হলে বিকল্প তো ভাবতে হবে। আর পোশাক ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা প্রতিবেদন চেয়েছে, তারা প্রতিবেদন দিলে বাস্তব অবস্থা বোঝা যাবে। এফবিসিসিআইকে তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছিল তারা কোনো প্রতিবেদন দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গার্মেন্ট সেক্টরের যারা ব্যবসায়ী তারা জানেন এ সময় চায়নায় ছুটি থাকে। তাদের কোনো ইমপোর্ট হবে না। তাই ১৩ তারিখ সেখানকার ছুটি শেষ হলে বোঝা যাবে প্রভাব পড়বে কি না।
চায়না কয়েক দফা ছুটি বাড়িয়েছে, তারা ছুটি বাড়ানোর কারণে গার্মেন্ট প্রোডাক্টে গ্যাপ হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা আবার ছুটি বাড়ালে গার্মেন্ট সেক্টরে প্রভাব পড়বে। গার্মেন্ট সেক্টরের ব্যবসায়ীরা কি রিপোর্ট দেন সেটি দেখতে হবে। তবে রাতারাতি এ সেক্টরে বিকল্প মার্কেট পাওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সে দেশেই মৃত্যু হয়েছে ৯০৮ জনের। এছাড়া ফিলিপাইন ও হংকংয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সোমবার পর্যন্ত এ ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে ৯১০ জনের প্রাণ। চীনের বাইরে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান, সিঙ্গাপুরসহ আরও ২৭ অঞ্চল বা দেশে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাস। এক্ষেত্রে চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গাপুরে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। এছাড়া এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এ ভাইরাসের প্রভাবে চীনা নাগরিকদের বিভিন্ন দেশে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হলে দেশটি থেকে মালামাল আমদানি-রপ্তানিতেও অনেক দেশ আগ্রহ হারাবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]