
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২০ | |
২০১৭ সালে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গোপালপুরকে বিষমুক্ত সবজির গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিষমুক্ত গ্রামটিতে প্রতি বছরের মতো এ মৌসুমেও জমি আবাদ করে ব্রোকলি চাষ করেন চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত এ গ্রামের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ। প্রায় ৪০ শতক জমিতে বীজ বপন করেন। ৬০ দিনের মধ্যে এতে পূর্ণ ব্রোকলি হয়। এরপর থেকে প্রতি কেজি ব্রোকলি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকাররা এ ব্রোকলি বিক্রি করে লাভবান। কেমিক্যালের প্রয়োগ না থাকায় লোকজন এ ব্রোকলি আগ্রহের সঙ্গে ক্রয় করে খেয়ে পুষ্টি পাচ্ছে। এখানে এক ব্রোকলিতে কৃষক, বিক্রেতা ও ক্রেতা লাভবান। এ পর্যন্ত তার উৎপাদিত ব্রোকলি বিক্রি থেকে দেড় লাখ টাকা এসেছে। বাকি সময়ে আরও ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আসবে। অফিসের দায়িত্ব পালন শেষে তিনি নিজ জমিতে চাষাবাদে মগ্ন থাকেন। বারোমাসি সবজি চাষ করছেন। কয়েক বছর ধরে তিনি হাইব্রিড ব্রোকলি বীজ রোপণ করেন। রোপণকৃত বীজ থেকে ভালোমানের ব্রোকলি চাষ হয়েছে। তার জমিতে এর চাষ দেখে স্থানীয় চাষিরা উৎসাহিত হয়েছেন। তারাও নিজেদের জমিতে এর চাষে এগিয়ে এসেছেন।
গোপালপুরের কৃষক আবদুর রশিদ, আলী হোসেন বলেন, ব্রোকলি চাষে ফারুক আহমেদ লাভবান। অচেনা থাকা এ সবজিটি এখন এখানের ক্রেতাদের কাছে খুবই প্রিয় হয়ে উঠেছে। চাষি ফারুক আহমেদ বলেন, ফুলকপির মতো দেখতে গাঢ় সবুজ রঙের শীতকালীন এ ফসলটি হবিগঞ্জের আনাচে-কানাচেও দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল না। ভালোমানের একটি কোম্পানি উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করে ব্রোকলি চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। পুষ্টবিদদের মতে, ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগসহ নানা অসুখে ব্রোকলি বেশ কার্যকর সবজি। এসব তথ্য বিশ্বাস করেন হবিগঞ্জের চাষিরাও। তাই তারা এর ব্যাপক চাষে এগিয়ে আসছেন।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সরকার বলেন, ব্রোকলিতে লাভবান
ব্রোকলি চাষে ফারুক আহমেদ সফল। তার চাষাবাদে উৎসাহিত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে। তিনি কয়েক বছর ধরে ব্রোকলি চাষ করছেন। এবারও ভালো ফলন হয়েছে।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ফারুক আহমেদ দেশের মধ্যে গোপালপুরকে বিষমুক্ত গ্রাম হিসেবে পরিচিত করেছেন। তার কেমিক্যালমুক্ত চাষাবাদ দেখে অন্য চাষিরাও ভালোমানের ফসল চাষ করছে। কৃষিতে তার বিরাট অবদান আছে। ফারুক আহমেদ আমাদের গর্ব। তার সফলতা কামনা করছি।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, গ্রিন জাতের ব্রোকলির বীজ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বপন করা হয়। পরে নভেম্বরের শুরুতে তা মূল খেতে রোপণ করেন চাষিরা। বীজ বপন থেকে ৬০ দিনের মধ্যে এতে পূর্ণ ব্রোকলি হয়। তিনি বলেন, এ গ্রামে বিষমুক্ত পদ্ধতিতে ব্রোকলি চাষ করা হচ্ছে। জমিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করছেন চাষি ফারুক আহমেদ। ডা. মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, মেধা বিকাশ, চোখের দৃষ্ট বৃদ্ধি, ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ, রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিসহ মানবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি বজায় রাখার পাশাপাশি ব্রোকলি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক ফসল। ব্রোকলি চাষে চাষি ফারুক আহমেদের সফলতার কথা জানতে পেরে ভালো লাগছে।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |