logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২০
মাদক মামলার বিচার হবে বিশেষ আদালতে
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদক মামলার বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা থাকলেও সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। মাদক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকার সব জেলা ও মহানগরে বিশেষ আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৫৫টি ধারার মধ্যে ২২টি ধারার সংশোধনে সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে, সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করবে এবং প্রত্যেক ট্রাইব্যুনালে অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বিচারক নিয়োগ করা হবে। কোনো জেলায় অতিরিক্ত জেলা জজ না থাকলে ওই জেলায় দায়রা জজ নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালন করবেন। আর ট্রাইব্যুনাল স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তি করবেন। তবে প্রশাসনিক কারণেমাদক মামলার বিচার হবে 

অদ্যাবধি মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন বা জেলা বা দায়রা জজকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এ ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব প্রদান করা হয়নি। ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে অসংখ্য মাদক অপরাধসংক্রান্ত মামলা হলেও তা বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে; মামলার সংখ্যা বাড়ছে। প্রকৃত আসামিকে সাজা দেওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে বিশেষ আদালত গঠন করা হবে জানিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, সংশোধন করা হলে এ আইনের অধীন মাদকদ্রব্য অপরাধগুলো অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে বিচার হবে। সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ তাদের এখতিয়ার সম্পন্ন এলাকার জন্য কেবল মাদকদ্রব্য অপরাধের বিচারের জন্য এক বা একাধিক আদালত নির্দিষ্ট করতে পারবেন। ফলে মাদক অপরাধের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। বিশেষ আদালত গঠন হলে দুই বছর পর্যন্ত সাজার ধারার মামলাগুলো জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচার করতে পারবেন। আর সর্বোচ্চ সাজার ধারায় মামলার বিচার করবেন দায়রা জজ। 
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি শিকদার বলেন, আগে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করার কথা ছিল; কিন্তু প্রশাসনিক কারণে সেই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা সম্ভব হয়নি। এখন ১ লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি মামলা আছে। আইন সংশোধন হলে মাদকের জন্য এখতিয়ার সম্পন্ন বিশেষ আদালত গঠন করা হবে। যে আদালতের যতটুকু ক্ষমতা সে আদালত ততটুকু বিচার করবেন। ক্ষমতাটুকু জেলা জজের কাছে দিয়ে দিচ্ছি, তিনি তার প্রয়োজন অনুযায়ী আদালত গঠন করে দেবেন। শুধু মাদকের জন্য জেলা ও দায়রা জজ কোর্টগুলোকে ডেডিকেটেড করে দেবেন। প্রত্যেক জেলা ও মহানগরে স্পেশাল এখতিয়ার সম্পন্ন স্পেশাল আলাদত হবে। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল থেকে আমরা সরে আসছি। কী ধরনের প্রশাসনিক জটিলতায় ট্রাইব্যুনাল গঠন করা গেল না, সেই প্রশ্নে অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি বলেন, ট্রাইব্যুনাল গঠনের জন্য যে পরিমাণ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রয়োজন, তা নেই। মূল উদ্দেশ্য ছিল মাদকের মামলাগুলোকে বিচারের আওতায় এনে অপরাধীকে ধরা; কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, ছয় মাসের জেল হবে, সেটাও জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার বিচারে যাচ্ছে। তাতে হত্যা মামলার মতো মামলাগুলোর বিচার বিলম্বিত হতে পারে। তাছাড়া আপিলের ক্ষেত্রে জটিলতাও এখানে বিবেচনা করা হয়েছে জানিয়ে তরুণ কান্তি বলেন, ট্রাইব্যুনালে কারও ছয় মাসের জেল বা জরিমানা হলে তাকেও আপিলের জন্য হাইকোর্টে যেতে হতো। পঞ্চগড় বা টেকনাফের আসামিকেও আপিল করতে ঢাকায় যেতে হতো। এসব প্রশাসনিক বিষয় বিবেচনায় এনে সরকার চিন্তা করেছে, স্পেশাল কোর্ট হলে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিপক্ষে জজ কোর্টে আপিল করা যাবে। তিনি জানান, ‘ভূমি ট্রাইব্যুনালে লাখ লাখ মামলা বিচারাধীন, আমরা সেটিও মাথায় রেখেছি।’ প্রসঙ্গত, নেশার বড়ি ইয়াবার উৎপাদন, পরিবহন, বিপণনের জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় সংসদে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৮’ পাস হয়। গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে আইনটি কার্যকর করা হয়।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]