
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২০ | |
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগর দিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ট্রলারডুবিতে অন্তত ১৫ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ সময় ৭১ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বেশ কয়েকজন নিখোঁজ ছিলেন। তাদের উদ্ধারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন নৌ বাহিনীর ডুবুরিসহ কোস্ট গার্ডের প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। নিহতরা সবাই মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোক। ডুবে যাওয়া ট্রলারে ১৩৮ জন রোহিঙ্গা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
সোমবার দিবাগত রাতে টেকনাফ উপকূল দিয়ে দুটি ট্রলার মালয়েশিয়ার যাওয়ার উদ্দেশে রওনা করে। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সাগরে একটি ট্রলার ডুবে যায়। এতে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ট্রলারডুবির ঘটনায় নিহতদের প্রায় সবাই উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা। পরে মৃতদেহসহ উদ্ধার হওয়া লোকজনকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে নিয়ে আসা হয়। উদ্ধার হওয়া জীবিতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ট্রলার ডুবির ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া কয়েকজন রোহিঙ্গা জানায়, প্রলোভনে পড়ে দালালের মাধ্যমে সাগরপথ ব্যবহার করে ট্রলার নিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য তারা শরণার্থী শিবির থেকে বের হয়েছিল। এরপর বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির শিকার হয়। টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, সাগরে ট্রলার ডুবে যাওয়ার ঘটনায় বেশিরভাগই বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরের রোহিঙ্গা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ড স্টেশন ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাঈম উল হক বলেন, ‘দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে সাগর পথ ব্যবহার করে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আমরা উদ্ধার কাজ শুরু করি। উদ্ধার কাজ অব্যাহত আছে।’
কোস্ট গার্ড কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ জানায়, দালাল ধরে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টার পথে রোহিঙ্গাদের ওই ট্রলারটি মঙ্গলবার ভোরে সেন্টমার্টিন থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে দুর্ঘটনায় পড়ে। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাঈম উল হক জানান, ‘নিহতদের মধ্যে চার শিশু, বাকিরা নারী। ওই ট্রলারে ১৩৮ জন ছিল বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।’ কোস্ট গার্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের একটি বড় দল অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার আশায় সোমবার গভীর রাতে টেকনাফের নোয়াখালীয়াপাড়া থেকে মাছ ধরার দুটি ট্রলারে চেপে রওনা হয়। এর মধ্যে একটি ট্রলার ভোর পৌনে ৬টার দিকে সাগরে দুর্ঘটনায় পড়ে ডুবতে শুরু করলে জেলারা তা দেখে কোস্ট গার্ডকে খবর দেয়। তিনটি স্টেশন থেকে কোস্ট গার্ড সদস্যরা গিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। তাদের সঙ্গে অভিযানে যোগ দেয় নৌবাহিনীর জাহাজ দুর্জয়। কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা নাঈম উল হক জানান, নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন জানান, জীবিতদের উদ্ধার করে নিয়ে আসার জন্য বিমানবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছিল। তাদের দুটি হেলিকপ্টার এ কাজে সহযোগিতা করছে। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তায় দুর্ঘটনায় পড়া ট্রলারটি টেনে সেন্টমার্টিনে নিয়ে আসা হয়েছে। মূলত ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় সেটি দুর্ঘটনায় পড়ে বলে কোস্ট গার্ডের ধারণা। নাঈম উল হক বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে রওনা হওয়া অন্য ট্রলারটির কোনো খোঁজ তারা পাননি। সেটি এরই মধ্যে মিয়ানমারের জলসীমায় চলে গেছে বলে তারা মনে করছেন। জীবিত উদ্ধার হওয়াদের সেন্টমার্টিনের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন পাচারকারীদের দালালও রয়েছেন বলে ধারণা দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে সরিয়ে নিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রথমে একটি পাহাড়ে কয়েক দিন রাখা হয়েছিল। পরে সোমবার গভীর রাতে তাদের ট্রলারে তোলা হয়।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |