logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, রবিবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২০
সংবাদ সম্মেলনে বিএমবিএ
পুঁজিবাজারে আনতে বহুজাতিক কোম্পানিকে উৎসাহ দিতে হবে
‘২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল যুগান্তকারী’ ‘প্রয়োজনে নতুন আইপিওর সব তথ্য প্রকাশ’
নিজস্ব প্রতিবেদক

 

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনকে যুগান্তকারী নীতি সহায়তা বলে মনে করে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। একই সঙ্গে শেয়ার সরবরাহ বাড়ানোর জন্য বহুজাতিক ও বেসরকারি খাতের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করা, প্রয়োজনে তাদের নীতি সহায়তা দেওয়া এবং ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে কর ও ভ্যাট রেয়াতসহ বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত বলেও মনে করে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর বিজয়নগরে হোটেল ৭১-এ বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) উদ্যোগে পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান এসব কথা বলেন। এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ মতিন, সহ-সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান, নির্বাহী সদস্য মাহবুব এইচ মজুমদার, নুর আহামেদ, মো. হামদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রত্যেক ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে। নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৫ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো, যা পরিশোধে সময় পাবে ৫ বছর। আর ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ নির্দেশনা জারির পাঁচ দিনের মাথায় সংবাদ সম্মেলন করে বিএমবিএ।
বিএমবিএ সভাপতি বলেন, পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি নিয়ে আসতে তাদের কর রেয়াতসহ প্রয়োজনে আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে পারলে বাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়বে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন যুগান্তকারী নীতি সহায়তা। দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, বাজারে অর্থের জোগান কম ছিল। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বাজার মধ্যস্থতাকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার সুযোগের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম। কোনো প্রকার দান বা ভর্তুকির প্রস্তাব করিনি।
পুঁজিবাজার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছয়টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বলেনও সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএমবিএ সভাপতি। এর মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানো, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা, আইসিবির সক্ষমতা বাড়ানো, বাজারে আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে বহুজাতিক কোম্পানি ও সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া।
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছেÑ অভিযোগ করে বিএমবিএ সভাপতি বলেন, এটি (বিশেষ তহবিল) নিয়ে অপপ্রচারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। লক্ষ্য করা যায়, এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন না করে কিছু ক্ষেত্রে ভুল ব্যাখ্যা বা উপস্থাপনা হচ্ছে, যা বিনিয়োগকারী তথা অংশীজনের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে।
আইপিওর বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাব এবং আইপিওর মান নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। কিন্তু সুনির্দিষ্ট পরিমাপ বা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ উপস্থাপিত হয় না। বর্তমানে একটি আইপিও প্রায় ৪০০ তথ্য ও শর্ত পালন ও প্রকাশ করে আইপিওতে আসে। সে ক্ষেত্রে যদি আরও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য বা শর্ত যোগ করার প্রয়োজন মনে হয় বা করলে মান উন্নত হয়, সে বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশনে পাঠানো যেতে পারে।
শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনে বিএমবিএর নতুন নেতৃত্ব আটটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান ছায়েদুর রহমান। এর মধ্যে রয়েছে সচেতন বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগ শিক্ষা প্রসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া, সরকারের নীতিনির্ধারণী পক্ষগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা ও সমন্বয় করা, প্রয়োজনীয় আইন পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের সুপারিশ করা, পুঁজিবাজারের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয়সাপেক্ষে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সমুন্নত রাখা, ভালো উদ্যোক্তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো, পুঁজিবাজারের আকার বৃদ্ধিতে গুণগত মান সমৃদ্ধ বৃহৎ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করা, পুঁজিবাজারের সার্বিক মূল্যায়নের জন্য সব অংশীজনের সমন্বয়ে প্রতি ছয় মাসে একটি বৃহৎ সেমিনার করার উদ্যোগ নেওয়া, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বা প্রচলিত অথচ আমাদের পুঁজি বাজারে অনুপস্থিত, সেই সব বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করা এবং প্রয়োজনীয় আইনের জন্য সুপারিশ করা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ে বছরে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার করা।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]