logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, রবিবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২০
একেক জনের একেক সমস্যা
স্পোর্টস রিপোর্টার

 

অনুশীলন করিয়ে প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো তখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। মুখচেনা সাংবাদিক দেখে করলেন খুনসুটি, নিলেন বিসিএলের খোঁজখবর। দূরে নেটে তখনও থ্রো ডাউনে ব্যাটিংয়ে মুমিনুল হক। লাইন মিস করে বোল্ড হতেই পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন দৌড়ে ছুটে গিয়ে কি যেন বললেন তাকে। তার আগে ডোমিঙ্গোকে দেখা গেল মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে কাজ করছেন, পাশেই সালাউদ্দিন ব্যস্ত তামিম ইকবালকে নিয়ে। আবার থ্রো ডাউন করানোর ফাঁকে পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনও পরামর্শ নিয়ে এগিয়ে গেলেন তামিমের কাছে, সালাউদ্দিনও এগিয়ে আসাতে চলল সিরিয়াস আলোচনা। ডোমিঙ্গো, সালাউদ্দিন আর তামিম-মুমিনুল মিলেও এমন আলোচনা চলল আরও।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের রোগ সারাতে নিয়মিত কোচদের সঙ্গেই শনিবার এভাবে নিবিড়ভাবে কাজ করতে দেখা গেল ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সফল কোচ সালাউদ্দিনকে। জিম্বাবুয়ে সিরিজ উপলক্ষে বাংলাদেশ দলের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন ক্যাম্প ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে। তার আগে বিসিএলে না খেলা ক্রিকেটাররা নিজ উদ্যোগেই আসছেন মাঠে। শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তামিম, মুমিনুল আর মিঠুন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিজেদের ভুলত্রুটি সারাতে ব্যস্ত ছিলেন। তাদের নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন ডোমিঙ্গো, গিবসন আর সালাউদ্দিন।
 ডোমিঙ্গো, গিবসনের তো এটাই চাকরি। সালাউদ্দিনের এখানে যোগ দেওয়ার তাগিদটা আসলে মুমিনুল আর তামিমের জন্য। পুরোনো এ দুই শিষ্য যতবার সংকটে পড়েন, ততবারই শরণ নেন সালাউদ্দিনের। এবার ব্যতিক্রম বলতে যা, এবার একা একা নন। সালাউদ্দিনকে ডোমিঙ্গো, গিবসনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে একসঙ্গে কাজ করলেন তারা।
কি নিয়ে কাজ হয়েছে? টেস্টে বাংলাদেশের সমস্যাটা আসলে কি? নানা কারণেই এসব নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি নন সালাউদ্দিন। শিষ্যদের ডাকে ‘রুটিন দায়িত্ব’ সারতে এসেছিলেন। সেখানেই পরিচয় হয়েছে জাতীয় দলের বর্তমান কোচিং স্টাফদের সঙ্গে। লম্বা সময়ের আলাপে ডোমিঙ্গো আর গিবসনকে বেশ মনে ধরেছে সালাউদ্দিনের। হয়তো নিজেদের কাজের এলাকায় উদার দৃষ্টিভঙ্গিতে সালাউদ্দিনকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার কারণেও আলাপটা জমেছে বেশ। জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরুর আগে আরও দুই দিন সালাউদ্দিনকে ডোমিঙ্গোদের সঙ্গেই এভাবে কাজ করতে দেখা যাবে।
তবে জানা গেল, এই সেশনে তামিম, মুমিনুল, মিঠুনদের আলাদা আলাদা সমস্যা পাওয়া গেছে। টেকনিক্যাল বিষয় আছেই। মাথার পজিশন, শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখার ব্যাপারও আছে। আছে পায়ের নড়াচড়া নিয়ে উদ্বেগ। মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকলে পায়ের নড়াচড়াও হয় সাবলীল। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মনের জড়তা কি তাহলে প্রভাব ফেলছে খেলাতেও? কারও কারও মনে দলে জায়গা পাকা করা নিয়েও নাকি আছে নিরাপত্তাবোধের ঘাটতি। 
অনুশীলন সেরে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মিঠুন জানালেন তাদের আসলে সবার রোগ এক রকম নয়। রাওয়ালপিন্ডির ব্যাটিংবান্ধব উইকেটেও তাদের অমন ধসে পড়া নিয়ে ঘাটতে গিয়ে এ কোচেরা পেয়েছেন বিভিন্ন রকম কারণ, ‘শুধু সালাউদ্দিন স্যারই তো না, ডোমিঙ্গো ছিল, গিবসন ছিল। সবাই মিলেই যার যেটা বেস্ট পজিশন সেটা নিয়েই কাজ করছিল। সালাউদ্দিন স্যারও আসছিল, কোচরাও ছিল। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়েরই একটা ঘাটতি থাকে, কীভাবে সেটা একটু ভালো হতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
‘আসলে আমাদের ধরতে হবে কার কোথায় সমস্যা। সবার তো এক রকম সমস্যা না। একেকজনের কাছে একেক রকম। আমার বুঝতে হবে আমার সমস্যা কোথায়। আমি কীভাবে কাজ করলে, আরেকটু পরিশ্রম করলে এক ধাপ এগিয়ে যাব। এটা যে শুধু ফিটনেস তা নয়। স্কিল বলেন, ফিটনেস বলেন সবদিক থেকেই আমরা পিছিয়ে আছি। পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের সবার উচিত খুঁজে বের করে কাজ করা।’
টেস্টে বাংলাদেশের অন্যতম সফল হলেও বেশ অনেকদিন থেকেই বড় রান নেই মুমিনুলের ব্যাটে। তামিমও লম্বা বিরতি থেকে ফিরে পাচ্ছেন না তাল। টেস্টে বাংলাদেশের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা এই দুজনের সব রোগ মুখস্থ সালাউদ্দিনের। মিঠুনের কাছ থেকে জানা গেল জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ থাকতেও এ কারণে তাই সালাউদ্দিন শরণ, ‘সালাউদ্দিন স্যার যেমন তামিম ভাই, সৌরভের (মুমিনুল) সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করে। ওদের ভালোভাবে জানে। ডোমিঙ্গো আসছে ছয়, সাত মাস হয়েছে। সালাউদ্দিন স্যার ১০ বছর ধরে কাজ করছে তাদের সঙ্গে।’
এসব কাজের ফল দেখতে সামনেই আছে একটি পরীক্ষা। ২২ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের চেনা আঙিনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ছয় টেস্টে হার, যার মধ্যে শেষ তিন টেস্টেই ব্যাটিং ব্যর্থতায় ইনিংস হারের তেতো স্মৃতি আছে দলের। এসব থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদে বিভিন্ন পথ খুঁজছেন ব্যাটসম্যানরা।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]