logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, রবিবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২০
টমেটো পাকাতে কেমিক্যালের প্রলেপ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

 

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় টমেটোর চাষ করা হয়েছে। কিন্তু ক্রমাগত শৈত্যপ্রবাহের কারণে কাঁচা টমেটো পাকাতে কেমিক্যালের প্রলেপ দিতে হচ্ছে। কৃষক জানান, নাগরপুরের চরাঞ্চলজুড়ে এক সময় তামাকের চাষ হতো। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের লাগাতার পরামর্শে তারা তামাক ছেড়ে টমেটো চাষে ঝুঁকছেন। টমেটো শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমান সময়ে শীত থেকে বসন্তকাল পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে টমেটো উৎপাদিত হয়। নাগরপুরের উৎপাদিত টমেটো স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে যাচ্ছে। এ বছর নাগরপুর উপজেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। কিন্তু ক্রমাগত শৈত্য প্রবাহের ফলে টমেটো পাকতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে চাষি অধিক মুনাফার লোভে গাছ থেকে কাঁচা টমেটো ছিঁড়ে মেডিসিন দিয়ে পাকিয়ে বাজারজাত করছেন। উপজেলার বেটুয়াজানী গ্রামের চাষি করিম শেখ, সবুর মিয়া, পাগলা মিয়া, মোতাসিম, শহীদুল, জয়েদ আলীসহ অনেকে এক সময় চরাঞ্চলে তামাক চাষ করতেন। এখন টমেটোসহ নানা রকমের সবজি চাষ করেন। এবার তারা টমেটো ছাড়াও ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুনসহ নানা রকমের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির চাষ করছেন। পাগলা মিয়া জানান, তারা এক সময় ধলেশ্বরী নদীর চরাঞ্চলে তামাক চাষ করতাম। কিন্তু এখন স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। এর মধ্যে তারা প্রতি বছর টমেটোর বাম্পার ফলন পেয়ে থাকেন। 
একাধিক চাষি জানান, ফলনের প্রথম দিকে টমেটোর ভালো দাম পেলেও শেষের দিকে টমেটোর দাম প্রতি কেজি ৫ থেকে ৭ টাকায় নেমে যায়, যা তাদের জন্য লাভজনক নয়। তাই বাধ্য হয়ে তারা মেডিসিন দিয়ে টমেটো পাকিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন। যদি টমেটো বা সবজি রাখার জন্য সংরক্ষণাগার থাকত তাহলে কৃষকের টমেটো পচে নষ্ট হতো না। শহীদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন বীজ কোম্পানির পরামর্শ ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায়, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি নিয়ে তারা জৈব সার ও সেক্সফোরমেন ট্র্যাপ ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন। বর্তমানে তিনি কয়েক একর জমিতে টমেটো ও সবজি চাষ করছেন। কিন্তু এবার ফলন ভালো হলেও  শৈত্যপ্রবাহের কারণে টমেটো পাকতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে ভালো দাম পাওয়া নিয়ে তারা চিন্তিত। লোকসান ঠেকাতে ও উৎপাদনে উৎসাহিত করতে নাগরপুরে একটি সবজি সংরক্ষণাগার (কোল্ডস্টোরেজ) স্থাপনের দাবি চাষিদের। 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, টমেটো সোলানেসি পরিবারের লাইকোপার্সিকদের অন্তর্ভুক্ত কোমল ও রসালো সবজি। বাংলাদেশে টমেটোকে বিলাতি বেগুনও বলা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি রয়েছে। টমেটোতে লাইকোপেন নামে বিশেষ উপাদান থাকায় এটা ফুসফুস, পাকস্থলী, অগ্নাশয়, কোলন, স্তন, মূত্রাশয়, প্রোস্টেট  ইত্যাদি অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। টমেটো একটি অর্থকরী ফসল। শুধু সবজি নয় সালাদ ও সস তৈরিতেও টমেটো ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল মতিন বিশ্বাস জানান, এক সময় এ অঞ্চলের চাষি তামাকের চাষ করত। কিন্তু তারা কৃষককে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছেন। এখন এলাকায় টমেটোর পাশাপাশি প্রচুর শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির আবাদ হচ্ছে। তারা কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছেন, কীভাবে মেডিসিন ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে টমেটো পাকানো যায়। 

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]