প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, রবিবার, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২০ | |
রাজশাহীতে ১০ বছর পর গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। ২০১০ সালের পর এবার রাজশাহীতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে গম চাষ করা হয়েছে। চলতি বছর ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ৫৪১ হেক্টর জমিতে। ফলে ছাড়িয়ে যাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে ধান চাষে ধারাবাহিক বিপর্যয়ের কারণে গম চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। গম চাষে খরচ কম এবং দুই-তিন বছর গমের বাজারমূল্যও বেশ ভালো। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বরেন্দ্র অঞ্চলখ্যাত রাজশাহীতে গমের বাম্পার ফলন হবে।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে সবশেষ রাজশাহীতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছিল। সেই বছর গম চাষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ
২৫ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩০০ হেক্টর বেশি ছিল। এরপর থেকে গম চাষে ভাটা পড়ে। ১০ বছরে কৃষি অধিদপ্তরের গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এমনকি এক দশকে কৃষি বিভাগ নানাভাবে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করলেও সাড়া মেলেনি। ফলে ২৫ হাজার হেক্টরের কাছাকাছি জমিতেও হয়নি গম চাষ।
চলতি মৌসুমে কৃষক আবার গমের দিকে ঝুঁঁকে পড়েছেন। উন্নতজাত ও আবহাওয়া গম চাষের অনুকূল থাকায় গমের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। বিশেষ করে গেল বছর ধান বিপর্যয়ের কারণে কৃষক ধান চাষ বাদ দিয়ে গম চাষের দিকে ঝুঁঁকেছেন। গেল বছর ধান চাষ করে উৎপাদন খরচ জোটেনি। অনেক কৃষক ধান কাটতে না পারায়, তা জমিতেই নষ্ট হয়েছে। যার কারণে উঁচু জমিগুলোতে ধানের পরিবর্তে এবার গম চাষ করা হয়েছে।
কৃষক বলছেন, গম চাষে তেমন সেচ, সার-কীটনাশক প্রয়োজন হয় না। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব না থাকলে গম চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। এসব চিন্তা করেই তারা গম চাষের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন।
গেল বছর ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেন পবা উপজেলার দুয়ারী এলাকার কৃষক সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, গেল বছর আমার বোরো ধান ছিল ১০ বিঘা জমিতে, আর গম ছিল তিন বিঘায়। ধানের চেয়ে গমে লাভ বেশি হয়েছে। এবার আট বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারও গমে লাভবান হব বলে আশা করছি।
বাগমারা উপজেলার রমরামা গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, যশোবিলে আমার উঁচু জমিতে প্রায় পাঁচ বিঘায় ধান করতাম। বাকি এক বিঘায় গম করতাম। এবার উল্টো হয়েছে। পাঁচ বিঘায় গম আর এক বিঘায় ধান করেছি। ধান চাষ করে শুধু লোকসানের হিসাব গুনতে গুনতে দিশাহারা হয়ে পড়েছি। গমে তেমন খরচ নেই; তাই লোকসানও নেই। রাজশাহী কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল ইসলাম বলেন, আমরা গেল তিন-চার বছর থেকে কৃষককে গম চাষে আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করে আসছিলাম। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়। অবশেষে সেই প্রক্রিয়া সফল হয়েছে। গম চাষে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছি। তিনি বলেন, গম চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। বিষয়টি কৃষক এতদিন না বুঝে ধানের দিকে ঝুঁকেছিলেন। ধানে লোকসান হওয়ায় এবার গমের দিকে ঝুঁকেছেন তারা। আশা করি গমের ভালো ফলন পাবেন কৃষক।
![]() সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected] |