logo
প্রকাশ: ১২:০০:০০ AM, শনিবার, ফেব্রুয়ারী ২৯, ২০২০
করোনা আতঙ্কে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে ধস
আলোকিত ডেস্ক

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব এবার পড়েছে বিশ্ববাজারেও। ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখা দিয়েছে। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। উপরন্তু বিনিয়োগ করা টাকাও তুলে নিতে চাইছেন। করোনা ভাইরাস মহামারির প্রকোপ নিয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক বৃদ্ধি আশাতীত কমিয়ে দিতে পারে বলে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা। তাই বিভিন্ন প্রকল্প থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছেন তারা। যার ফলেই বাজারে এমন ধাক্কা। শুক্রবার সকালে ইউরোপের বাজারে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস স্টক এক্সচেঞ্জ (এফটিএসসি) ১০০ সূচক ৩ শতাংশেরও বেশি পড়ে গেছে।

এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোয় দেখা গেছে আরও বড় পতন। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ার মার্কেট মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ বছর জাপানে অলিম্পিক হওয়ার কথা থাকলেও করোনা ভাইরাস আতঙ্কে তা বাতিল হওয়ার খবর ছড়ায়। এতেই জাপানের সূচক নিক্কেই এদিন প্রায় ৩.৩ শতাংশ পড়ে গেছে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ইতালি সবখানেই শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে। শুক্রবার সকাল থেকেই নিম্নমুখী ভারতের বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ। এদিন শেয়ারবাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই সেনসেক্স ১১৫৫ পয়েন্টের বেশি পড়ে পৌছে যায় ৩৮ হাজারের ঘরে। প্রায় ৩৫০ পয়েন্ট পড়ে নিফটি নেমে যায় ১১ হাজারের ঘরে। সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে, ব্যাঙ্কিং, অটোমোবাইল, করোনা আতঙ্কে বিশ্বজুড়ে 
ষ ১ম পৃষ্ঠার পর
ধাতু, খনিজ তেল ও গ্যাস সেক্টরের শেয়ার। বেশি ক্ষতি হয়েছে টাটা মোটরস, হিন্দালকো, টাটা স্টিল, ভেদান্ত, টেক মাহিন্দ্রা, জেএসডব্লিউ এবং বাজাজ ফিনান্সের মতো শেয়ারে। এ শেয়ারগুলোয় ৩.৮৪ থেকে ৬.২৩ শতাংশ পর্যন্ত পতন হয়েছে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনসের সূচক এক দিনে রেকর্ড পরিমাণ পড়ে গেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্বব্যাপী পর্যটন, বিমান পরিবহন এবং সামগ্রিকভাবে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সব দেশের শেয়ারবাজারেই বিক্রির ঢল দেখা গেছে।
চীনের বাইরে গোটা বিশ্বে এ সংক্রমণ যেভাবে ছড়াতে শুরু করেছে, তাতে আগামী দিনে শেয়ারবাজার আরও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের একেকটি দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের খবর বিশেষ করে ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকদিনে কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় অর্থনীতিতে এর প্রভাব আগে যতটা অনুমান করা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চীনের এক অর্থনীতিবিদ বলেছেন, বাজার অনেকটাই ইতিবাচক ছিল। কিন্তু এখন অনেক বেশি নেতিবাচক হয়ে গেছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এক পরিকল্পনাবিদ বলেন, আগে চীনে সংক্রমণ কমে আসায় বাজারে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, জাপানসহ নানা দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আতঙ্ক, উদ্বেগ আবার ফিরে এসেছে। শুক্রবার ইউরোপে সব প্রধান প্রধান শেয়ারের সূচকে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। জার্মানি এবং ফ্রান্সের শেয়ারও যথাক্রমে ৩.৬ এবং ৩.১ শতাংশ পতন হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান শেয়ার সূচক এএসএক্স২০০ শুক্রবার পড়ে গেছে ৩.৩ শতাংশ। ২০০৮ সালের মন্দার পর এটিই এ শেয়ারে সবচেয়ে বড় ধস। চীনের সাংহাই কমপোজিট সূচকও এদিন ৩.৭ শতাংশ পড়ে গেছে।
ভারতের বিষয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র : ভারতে করোনা ভাইরাস ব্যাপক ছড়িয়ে পড়লে তা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা দেশটির আছে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ভারতে তিনজন নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর তিনটি আক্রান্তের ঘটনাই কেরালার। তবে চিকিৎসার পর তিনজনই আপাতত সুস্থ। তা সত্ত্বেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাগুলো। তাদের আশঙ্কা, ভারতের যা জনসংখ্যা, তাতে যে কোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। তা সামাল দিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিকাঠামো ভারতের আছে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। শুধু ভারত নয়, ইরানসহ আরও একাধিক দেশের ওপর নজর রাখছে মার্কিন সংস্থাগুলো। বিডিনিউজ
ইরানের বিভিন্ন স্থানে জুমার নামাজ বাতিল : করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ইরানের তেহরান ও শিয়া মুসলিমদের পবিত্র শহর কোম ও মাশহাদসহ অন্তত ২৩টি প্রদেশের রাজধানী শহরগুলোতে আজ জুমার নামাজ বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কোম ও মাশহাদে ধর্মীয় স্থানগুলোয় প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইদ নামাকি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে দর্শনার্থীদের ‘উপাসনা ও প্রস্থান’ নীতিতে চলা উচিত। তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় স্থানগুলোর ভেতরে জড়ো হওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।  এ পর্যন্ত ইরানে ২৪৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ২৬ জন মারা গেছেন।
অল্প সময়ের মধ্যে সে দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও ইরানের কোনো শহর বা জেলাকে পৃথক করে বা ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি। তবে, সরকার আরও এক সপ্তাহ বিশ্ববিদ্যালয়, সিনেমা হল বন্ধ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা ও সম্মেলন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, ইরান সরকার সে দেশে চীনা নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
‘বিদ্যুতের দাম কমাতে হবে’
ষ ১ম পৃষ্ঠার পর
রপ্তানির বিধান রেখে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করছে, অন্যদিকে গ্যাস সংকটের অজুহাতে সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প, ভয়ংকর ঝুঁকি ও বিপুল ঋণের রূপপুর প্রকল্পের উদ্যোগ নিচ্ছে।
‘তেল-গ্যাস-খনিজ-সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি কম দামে পরিবেশসম্মতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প মহাপরিকল্পনা করা সত্ত্বেও সরকার তার মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ খাতকে ক্রমাগত কিছু দেশি-বিদেশি গোষ্ঠীর ডাকাতি ব্যবসার খাতে পরিণত করছে। তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়েই বারবার বাড়ানো হচ্ছে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম।’
এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সমালোচনা করে নেতারা বলেন, জনসাধারণের অর্থের অপচয় করে নাটক করার জন্য বানানো হয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সেখানে গণশুনানিতে যুক্তি-তথ্যে প্রমাণিত হয়েছে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নয়, বরং কমানো উচিত এবং তা সম্ভব। কিন্তু সরকারের আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া, দাম বাড়াতেই হবে!
বারবার গ্যাস-বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি অর্থনীতির জন্য বোঝা হচ্ছে, সব পর্যায়ের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াচ্ছে। সবশেষ এ দাম বৃদ্ধিতে সব পর্যায়ে আরেক দফা উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, বাড়বে বাসা ভাড়াসহ অন্য সব দ্রব্যসামগ্রীর দাম, বাড়বে শিল্পকৃষি পণ্যের দাম, কমবে দেশের অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতার ক্ষমতা। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করে জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাত বিন্যাসের দাবি জানান নেতারা।
শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গণশুনানি ও গণস্বাক্ষরের মূল্যায়ন না করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় গ্রাহকরা হতাশ। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের বিপক্ষে বিইআরসির গণশুনানিতে গ্রাহক প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করে আমরা দাবি করেছিলাম, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি, অপচয় ও অপব্যয় বন্ধ হলে এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের স্বার্থ না দেখলে এর দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। আমাদের দাবি ছিল, বাজারের মূল্য ও সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত থেকে কমিশন সরে আসবে। পাশাপাশি সাধারণ জনগণের মতামত নেওয়ার উদ্দেশ্যে সপ্তাহব্যাপী মাঠ পর্যায়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও আমরা পালন করি। যেখানে হাজার হাজার জনতা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি না করার পক্ষে গণস্বাক্ষর করেন। এরপরও বৃহস্পতিবার কমিশন বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পক্ষ নিয়েছে।
এদিকে ওয়াসার পানির দাম ছয় মাসের ব্যবধানে আরও ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাগরিকরা। বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে পানির বিল বাড়িয়ে দেওয়ায় বাড়িওয়ালারাও এখন ভাড়া বাড়িয়ে দেবেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা। 
স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পানির দাম বাড়িয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, আবাসিকে ঢাকা ওয়াসার সরবরাহকৃত প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম ১১ টাকা ৫৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা করা হয়েছে। আর বাণিজ্যিক সংযোগে প্রতি হাজার লিটার পানির দাম ৩৭ টাকা চার পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে।
জাতীয় ভাড়াটিয়া পরিষদের সহসাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ ইয়াসিন সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস বা পানিÑ এ তিন সেবার যে-কোনো একটার দাম বাড়লেই বাড়িভাড়া বাড়িয়ে দেন মালিকরা। আর এখন বিদ্যুৎ-পানি একসঙ্গে বেড়েছে। তিনি বলেন, দেখা গেছে পানির বিল বেড়েছে দুই থেকে তিনশ টাকা। বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এভাবেই দিনের পর দিন চলে আসছে। যতদিন পর্যন্ত সরকারের চার্ট আকারে ভাড়া না আসে, ততদিন এভাবেই চলবে। এজন্য ইউটিলিটি বিল ভাড়াটিয়ারা আলাদা দেবÑ এমন আইন করতে হবে। নাগরিকদের এ ক্ষোভের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বৃহত্তর সুবিধার জন্য জনগণকে ‘কিছুটা চাপ’ নিতেই হবে। বিকল্প কিছু আমাদের ছিল না। দাম না বাড়ালে প্রতিষ্ঠানগুলো টিকতে পারবে না। দিন দিন এভাবে চললে প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে যাবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী রফিকুল আলম । সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক আলোকিত মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫ থেকে প্রকাশিত এবং প্রাইম আর্ট প্রেস ৭০ নয়াপল্টন ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক বিভাগ : ১৫১/৭, গ্রীন রোড (৪র্থ-৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৯১১০৫৭২, ৯১১০৭০১, ৯১১০৮৫৩, ৯১২৩৭০৩, মোবাইল : ০১৭৭৮৯৪৫৯৪৩, ফ্যাক্স : ৯১২১৭৩০, E-mail : [email protected], [email protected], [email protected]