বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাট এবং দেশের অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর দায়ী বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। ৮০০ কোটি টাকা হ্যাক হয়ে যাওয়ার পরও তারা দায়িত্ব পালন করায় বিস্ময় প্রকাশ করে দলটি অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ দাবি করছে। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানান।
রিজভী আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এ পর্যন্ত ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার লোপাট হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ন্যক্কারজনক জালিয়াতির ঘটনা বর্তমান সরকারের প্রভাবশালী মহল ও সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত বলে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বীকার করেছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার লোপাট হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি হ্যাক করে এ অর্থ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জালিয়াতির এতবড় ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের প্রভাবশালী মহল এবং ব্যাংক কর্মকর্তারা জড়িত বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায় থেকে স্বীকার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ নেতারা যারা তিন বছর ধরে সরকারি কাজের বাইরে নানা অজুহাতে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, হংকং, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, দুবাই ভ্রমণ করেছেন তাদের পাসপোর্ট যাচাই করে অনুসন্ধান করলেই এ আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের রাঘববোয়ালদের সংশ্রব বেরিয়ে আসবে।
রিজভী বলেন, এর আগে ইবিএল ও ডাচ্ বাংলা ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লোপাট হয়েছে। সরকার লোক দেখানো তদন্ত এবং কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণেই ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থ লুটপাটের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বশেষ বিশাল অঙ্কের অর্থ লোপাটের ঘটনায় দেশের আর্থিক খাতে ব্যাপক ধস নামবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের অর্থনীতিবিদরা।
এদিকে নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশ থেকে কার্গো বিমানে মালামাল পরিবহনে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, স্বাভাবিক কারণেই যুক্তরাজ্যে পণ্য পরিবহনের নিষেধাজ্ঞায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে রফতানিকারকরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে রফতানিতে অশনি সঙ্কেত দেখা দেবে এবং অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে দেশের গার্মেন্টসহ বিভিন্ন রফতানি খাত। দেশ বঞ্চিত হয়ে পড়বে গার্মেন্ট খাত থেকে প্রাপ্ত বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে।