ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানা হাজতে শরিফুল ইসলাম ওরফে কাজল মন্ডল নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় তার মৃত্যু হয়। নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে, নাকি তিনি আসলেই আত্মহত্যা করেছেন তা নিয়ে নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। নিহত কাজল কুষ্টিয়ার ইবি থানার হাসানবাগ রাজাপুর গ্রামের জুলহক মন্ডলের ছেলে বলে শৈলকুপা থানা থেকে নিশ্চিত করা হয়।
শৈলকুপা থানা থেকে মোমিনুল পরিচয়দানকারী এক পুলিশ সদস্য জানান, থানাহাজতে থাকা কাজল গলায় রশি দিয়ে আহত্মহত্যা করেছেন। তবে শৈলকুপা থানার ওসি মহিবুল ইসলাম বলেছেন ভিন্ন কথা। ওসি জানান, কাজল মন্ডল অন্য একটি বাড়িতে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। কার বাড়িতে এবং কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তা ওসি জানাতে পারেননি। অন্যদিকে থানার এএসআই আজাদ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কাজল মন্ডল আমিই গাঁজাসহ শৈলকুপার ভাটই বাজার থেকে আটক করে থানাহাজতে রাখি। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হাজতখানার বাথরুমে গলায় রশি দিয়ে কাজল আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফাহমিদা হক জানান, বেলা ১১টার দিকে শৈলকুপা থানায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী কাজল মন্ডল নামে এক আসামিকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে পুলিশ। এসময় সে খুবই মুমূর্ষু ছিলেন। তাকে ইমার্জেন্সি চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু রোগীর হার্টবিট কম থাকায় তাকে আবার পুলিশের গাড়িতেই ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে কাজল মন্ডল ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শামরিন আহম্মেদ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডা. শামরিন আহম্মেদ জানান, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও জানান, লাশের শরীরে আত্মহত্যার কোনো চিহ্ন বা আলামত নেই। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।
তিনি জানান, এমনও হতে পারে কোনো আঘাতে অভ্যন্তরীণ ক্ষত সৃষ্টির কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে কাজলের আত্মহত্যার গল্প, স্থান ও মৃত্যুর সময় নিয়ে ওসি মহিবুল এবং এএসআই আজাদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকের ধারণা নির্যাতনে থানাহাজতেই কাজলের মৃত্যু হয়। বিষয়টি পুলিশ ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজহার আলী শেখ জানান, আমি একটি জরুরি মিটিংয়ে আছি। থানাহাজতে গলায় রশি দিয়ে মৃত্যুর কোনো তথ্য আমার জানা নেই।