আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০৩-২০১৬ তারিখে পত্রিকা

সিলেটের বাজার দখলে মরিয়া তামাক কোম্পানিগুলো

শাহ সুহেল আহমদ, সিলেট
| খবর

সর্বনাশা মাদকের রাহুগ্রাস থেকে জাতিকে মুক্ত করতে সরকার যখন কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, তখনই সিলেটের বাজার দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিভিন্ন তামাক কোম্পানি। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা সিগারেটের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন  কোম্পানি এতোদিন কৌশলি প্রচারণা চালালেও প্রশাসনের নীরবতায় এখন তারা প্রকাশ্যে নেমে পড়েছে। 
‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার ৫ ধারার ১ উপধারার খ-তে উল্লেখ আছে তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়ে প্রলুব্ধকরণের উদ্দেশ্যে, উহার কোনো নমুনা, বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে, জনসাধারণকে প্রদান বা প্রদানের প্রস্তাব করিবেন না বা করাইবেন না।’ আইনের এই ধারার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে এখন সিলেটে। তামাক কোম্পানিগুলো সাধারণ মানুষকে ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন বিনামূল্যে বিড়ি-সিগারেট বিতরণসহ প্রচারণা চালাচ্ছে। দেয়া হচ্ছে লোভনীয় অফার। নগর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাটবাজারেও চলছে তামাক কোম্পানির এ প্রচারণা।
কয়েক দিন ধরে ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ শুরু করেছে প্রকাশ্যে প্রচারণা। তারা সিগারেটের প্যাকেটের ছবি ও কোম্পানির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরে তৈরি করেছে ছোট আকারের পতাকা। এটা বিতরণ করা হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের মাঝে। এছাড়া বড় বড় কোম্পানির লোগোর বড় পোস্টার লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে ছোটবড় দোকানসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে। কোম্পানির লোগো দিয়ে ভ্যানগাড়িকে পুরোপুরি আচ্ছাদিত করে বাজারজাত করা হচ্ছে পণ্য। একইভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো, আকিজ বিড়িসহ বিভিন্ন তামাক কোম্পানি।
আইন-বিধিমালা থাকার পরও কেন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। মোবাইল কোর্ট করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কবে ব্যবস্থা নেয়া হবে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, প্রশাসনের অনেক কাজ। সব কাজের সঙ্গে এটাও একটি কাজ।
এদিকে তামাক কোম্পানির প্ররোচনায় সিলেটে প্রতিদিনই বাড়ছে ধূমপায়ীর সংখ্যা। উঠতি বয়সী তরুণদের পাশাপাশি ধূমপানে আগ্রহী হয়ে উঠছে কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীরাও। বিষয়টিকে উদ্বেগজনক মন্তব্য করে সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এসব প্রচারণা এখনই বন্ধ করা উচিত। না হলে আগামী প্রজন্ম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 
তামাক নিয়ন্ত্রণে সিলেটে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা সীমান্তিক। সংস্থার মিডিয়া অফিসার মুরাদ বক্স বলেন, সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। এখানে তামাক কোম্পানি কিংবা তামাক চাষ না হলেও প্রচারণা দেশের যে কোনো অঞ্চলের থেকে বেশি। এ ব্যাপারে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।