শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারের কাজ শুরুর জন্য ব্রিটেন ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। বাংলাদেশ এবং ব্রিটেনের মধ্যে সরাসরি কার্গো (পণ্যবাহী) বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার পর বাংলাদেশ সরকার ব্রিটিশ সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ‘অনাকাক্সিক্ষত’ বলে মন্তব্য করেছে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই অজুহাত দেখিয়ে ব্রিটিশ সরকার সরাসরি কার্গো ফ্লাইট বন্ধের এ ঘোষণা দেয়। ৩১ মার্চের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি না হলে যাত্রীবাহী সরাসরি ফ্লাইটও বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ব্রিটেন। শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কার্গো বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এতে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্রিটেনের পদক্ষেপের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বিমানবন্দরে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর মন্ত্রী বলেছেন, নিরাপত্তা ঘাটতি দূর করতে চার মাস ধরে ব্রিটেনের সহায়তায় বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উন্নত স্ক্যানার মেশিনসহ আধুনিক যন্ত্র সংগ্রহের জন্য সরকার এরই মধ্যে ৯০ কোটি টাকার প্রকল্প পাস করেছে। এরপরও ব্রিটেনের এমন পদক্ষেপ বাংলাদেশ আশা করেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ঘাটতি নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন। দুই দেশের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকায় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারে কাজ শুরুর জন্য ব্রিটেন ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। ব্রিটেনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কাছে সেই সময়ের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, এখনও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, এ পর্যন্ত নেয়া পদক্ষেপের বিস্তারিত তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চিঠির জবাব দেবেন। এছাড়াও এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্রিটেনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে।
ঢাকা থেকে ব্রিটেনে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট বন্ধ করায় তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গত বছর ব্রিটেনে ৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এ বছর আমরা রফতানির টার্গেট করেছি সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক। কিন্তু সরাসরি কার্গো নিষিদ্ধ হওয়ায় রফতানি নিয়ে আমাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। তিনি বলেন, ব্রিটেনের পদক্ষেপ অন্য দেশগুলো যদি অনুসরণ করে, তাহলে বাংলাদেশের পুরো রফতানি খাতই বড় ধরনের হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রফতানি খাতের ১০ থেকে ১৫ শতাংশই কার্গো বা বিমানে পাঠানো হয়।